রাহী হালদার , হুগলি: অসুস্থ রামকৃষ্ণদেবকে দেখতে কামারপুকুর থেকে দক্ষিণেশ্বর যাচ্ছিলেন মা সারদা। কথিত, তখনই তাঁর পথ আটকে দাঁড়ায় গ্রামের কুখ্যাত ডাকাত ভীম সর্দার। বলা হয়, মা সারদাকে রক্ষা করতে তথন স্বয়ং মা কালী অবতীর্ণ হয়েছিলেন। এই কিংবদন্তি বা জনশ্রুতি প্রায় সকলেরই জানা। তবে অনেকেই জানেন না হয়তো আজও বেঁচে আছে ডাকাত ভীম সর্দারের পরিবার। মা সারদাকে দক্ষিণেশ্বরে পৌঁছে দিয়ে আসার পথে তিনি একটি কালীঠাকুরের কাঠামো পান। তার পর থেকে তা নিজেদের বাড়ি নিয়ে এসে শুরু করেন তার পুজো। সেই পুজো হয়ে আসছে আজও। ডাকাতের বর্তমান প্রজন্ম আজও চালিয়ে আসছেন ভীম সর্দারের কালীপুজো।
জনশ্রুতি রয়েছে, আরামবাগের বাতানল পঞ্চায়েতের ভালিয়া এলাকা ছিল একসময় ঘন জঙ্গলে ভরা। জঙ্গলের পথ দিয়ে যাতায়াতকারীদের ভীম সর্দার ও তার দলবলের হাতে খপ্পরে পড়তে হতো। কথিত আছে, এই পথ দিয়েই ১৮৭৭ সালে মা সারদা তাঁর ভাসুরপো শিবরাম ও ভাইঝি লক্ষ্মীমণি দেবীকে নিয়ে অসুস্থ ঠাকুর রামকৃষ্ণকে দেখতে যাচ্ছিলেন। সন্ধ্যার সময় ভালিয়া জঙ্গলের কাছে তিনি অন্যদের থেকে পিছিয়ে পড়েন। জঙ্গলে ওঁত পেতে থাকা ডাকাত সর্দার ও তার দলবল মা সারদাকে ঘিরে ধরে। মা সারদা ডাকাত সর্দারকে ‘বাবা’ সম্বোধন করে ছেড়ে দিতে বলেন। দস্যুদল সেই কথা না শুনে কাছে আসতে উদ্যত হলে আবির্ভূত হন দেবী কালী। সন্ত্রস্ত ডাকাত সর্দার ও তাঁর দলবল নিজেদের রক্ষার জন্য মা সারদার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে।
যে জায়গায় ডাকাত মা সারদার পথ আটকে ছিলেন সেখানেও রয়েছে এক কালী মন্দির। স্থানীয় মানুষদের কথায়, অতীতে এই জায়গা ছিল ঘন জঙ্গলে ঘেরা। জঙ্গলের মধ্যে এই কালী মন্দিরে পুজো করেই ডাকাতি করতে বেরোতেন ভীম সর্দার। ভীম ডাকাতের পারিবারিক কালীপুজো আজও হয়ে চলেছে। আসন্ন কালী পুজোয় তাঁদের মাটির বাড়িতে মাটির মন্দিরে পুজো হবে কালী মায়ের। এখন চলছে সেই পুজোর প্রস্তুতি।