বছরে ৩ মাস মেলে

‘গরিবের ড্রাই ফ্রুট’, বছরে ৩ মাস মেলে, শুকোনোর পর দাম বেড়ে যায় ১০ গুণ, শরীরের জন্যও ভাল

Report: Kajal Manohar

জয়পুর: দেখতে ছোট তরমুজের মতো। নাম কাচরি। অনেকে একে ‘গরিবের ড্রাই ফ্রুটস’-ও বলেন। রাজস্থানের রুখা-শুখা মাটিতেই জন্মায়। লতানো গাছের ফসল। বনে-জঙ্গলে হয়। সুতরাং বুনো সবজি। তবে বছরে মাত্র ৩ মাস মেলে। রাজস্থানে এই সবজি কেটে শুকনো করে রাখা হয়, যাতে বারো মাসই ব্যবহার করা যায়।

কেজি প্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হয় কাচরি। কিন্তু শুকোনোর পর অফ সিজনে এর দাম বেড়ে যায়। তখন বিক্রি হয় কেজি প্রতি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়। সোজা কথায়, শুকোনোর পর এই সবজির দাম প্রায় ১০ গুণ বৃদ্ধি পায়। গ্রামের মহিলারা শুকনো কাচরি বিক্রি করে ভাল টাকা রোজগারও করেন।

আরও পড়ুন– বিশ্বের সেরা ২৫ শহরের মধ্যে স্থান, কলকাতাকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, ‘উচ্ছ্বসিত, গর্বিত…’ বলছে তিলোত্তমার নাগরিক সমাজ

গরিবের ড্রাই ফ্রুট: শুকনো কাচরিকে অনেকেই গরিবের ড্রাই ফ্রুট বলেন। দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী গরিব মানুষ সিজনের সময় মাঠে ঘাটে ঘুরে ঘুরে সংগ্রহ করেন এই সবজি। তারপর ছোট ছোট টুকরো করে কেটে শুকিয়ে নেন। সিজন শেষ হলে দোকানে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দেন। ফলে সারাবছরই ব্যবহার করা যায়। এর স্বাদ চমৎকার। এর তরকারি যাঁরা খেয়েছেন, তাঁরা বলেন, শুকনো কাচরির তরকারি অমৃতসমান।

শুকনো কাচরির তরকারি: শুকনো কাচরি রাজস্থানের ঐতিহ্যবাহী পদ। মরুভূমি অঞ্চলের বাসিন্দাদের অত্যন্ত প্রিয়। সাধারণত তেল আর মশলা দিয়ে ভাজা দিয়ে হয়। শুকনো কাচরির টুকরো, তেল, গোটা জিরে, গোটা সরষে, হিং, হলুদ গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো আর স্বাদ অনুযায়ী নুন দিয়ে জমিয়ে রান্না করা হয় কাচরির তরকারি।

আরও পড়ুন-বিক্ষিপ্ত ভাবে দু’-এক পশলা হালকা বৃষ্টি হতে পারে, কালীপুজোর আগে কেমন থাকবে রাজ্যের আবহাওয়া, জেনে নিন

প্রথমে শুকনো কাচরি গরম জলে ভিজিয়ে রাখা হয়, যাতে কিছুটা নরম হয়ে যায়। আলাদা একটা প্যানে তেল কিছুটা গরম করে নিয়ে তাতে সরষে, জিরের ফোড়ন দিতে হয়। তারপর হিং, হলুদ ও লঙ্কা গুঁড়ো দিয়ে দিতে হবে কাচরির টুকরো। এরপর হালকা আঁচে ভালভাবে ততক্ষণ ভাজতে হবে যতক্ষণ না কাচরির টুকরোগুলো খাস্তা আর মুচমুচে হয়ে যায়। সব মশলা যাতে ভালভাবে মিশে যায়, সেটাও খেয়াল রাখতে হবে। গরম গরম রুটি বা পরোটার সঙ্গে কাচরির তরকারির তুলনা হয় না। অত্যন্ত সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর পদ। মূলত স্ন্যাক্স বা সাইড ডিশ হিসাবেই এটা পরিবেশন করা হয়।

উপকারিতা: শুকনো কাচরি পুষ্টিগুণে ভরপুর। এতে উচ্চমাত্রায় ফাইবার রয়েছে। ফলে পরিপাকতন্ত্র ভাল থাকে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমায়। এতে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরকে সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে। তাছাড়া ক্যালোরি কম থাকায় ওজনও নিয়ন্ত্রণে থাকে।