অনন্যা দে, আলিপুরদুয়ার: প্রায় পাঁচশো বছর ধরে এই মন্দিরে পূজিত হচ্ছেন দেবী কালী।ফালাকাটার এই মন্দিরে এক সময় সাধনা করেছিলেন সাধক বামাখ্যাপা। ইতিহাস জানতে আপনিও আসতে পারেন ফালাকাটার এই জংলা কালী মন্দিরে। এই মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ইতিহাস।এক সময় ফালাকাটার মুজনাই নদীর পাড়ে ঘন জঙ্গল ছিল। সেখানে বন্য পশুদের দেখা যেত সবসময়।এই এলাকায় আসতে ভয় পেতেন স্থানীয়রা। দিনের বেলায় মনে হত এই এলাকায় নেমে এসেছে অন্ধকার। মুজনাই নদী দিয়ে সেসময় চলত নৌকায় বাণিজ্য।
এই মন্দির স্থাপিত হওয়ার পেছনে রয়েছে একটি গল্প, যা লোকমুখে বহুল প্রচলিত। মন্দির স্থাপিত হওয়ার আগে প্রতিবছর দীপান্বিতা অমাবস্যার রাতে গভীর জঙ্গল থেকে কাঁসর ঘণ্টার আওয়াজ পেতেন এলাকাবাসীরা। পরের দিন সকালে ওই এলাকায় গিয়ে এলাকার বাসিন্দারা দেখতেন দেবী কালীর মূর্তি পূজিত হয়েছেন।পুজোর সামগ্রী পরে রয়েছে বিভিন্ন স্থানে। কে বা কারা পুজো করতেন তা জানতেন না কেউ।এরপর ধীরে ধীরে সেখানে বন জঙ্গল কেটে জনবসতি গড়ে উঠতে থাকে।সেখানেই এলাকাবাসীরা একটি ছোট মন্দির গড়ে পুজো শুরু করেন।এরপর মন্দিরটিকে ধীরে ধীরে বড় আকারের গড়ে তোলেন এলাকাবাসীরাই।
আরও পড়ুন : জঙ্গলের মধ্যে গা ছমছমে পরিবেশ, দাঁইহাটে আজও হয়ে আসছে এই প্রাচীন পুজো
মন্দিরের পুরোহিত দিলীপ আচার্য জানান, “এই মন্দিরে বহুকাল ধরে আমাদের পরিবারের সদস্যরা পুজো করেন। আমিও বর্তমানে পুজো করছি। শুধু কালী পুজোর সময় না, প্রতি মঙ্গলবার ও শনিবার মন্দিরে পুজো দিতে আসেন প্রচুর ভক্ত।” জানা যায় সাধক বামাখ্যাপা এই মায়ের মন্দিরে এসে ধ্যান এবং সাধনা করেছেন একসময়। বামাখ্যাপার সেই ধ্যান এবং সাধনা করার বেদীটি এখনও রয়েছে মন্দির প্রাঙ্গণে। সেটিকেও পুজো করা হয় নিত্য। তবে আধুনিকতার ছোঁয়ায় সেই পুরনো নিয়ম নীতির কোনও ভাটা পড়েনি।
এখনও নিয়ম করে প্রতিদিনই পুজো হয়। অমাবস্যায় বিশেষ ভোগ দেওয়া হয়। ভক্তদের তরফে জানা যায় তারা এখানে এসে দেবীর কাছে মানত করে ফল পেয়েছেন। সেই কারণেই বারবার পুজো দিতে তারা ছুটে আসেন এই মন্দিরে।