বাঁকুড়া: প্রত্যন্ত জঙ্গলমহলের ছেলে। সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে, শিখেছেন শিল্পচর্চা। অর্থের অভাবে পড়াশোনা বেশি দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেনি সে। তবে প্রথম থেকেই ইচ্ছে ছিল কিছু একটা গঠনমূলক করার, সেই জন্য প্রযুক্তির আলিঙ্গনে সামাজিক মাধ্যমে কন্টেন ক্রিয়েটর হিসেবে কাজ করা শুরু করে সে। যেখানে ফুটে ওঠে তার শিল্প চর্চা।
বাঁকুড়া জেলার রাইপুরের মটগোদার বাসিন্দা আকাশ মল্ল দেশলাই কাঠি ব্যবহার করে বানিয়েছেন মা কালীকে। এর আগে দুর্গা পুজোতে মা দুর্গা বানিয়েছিল এই ছেলে। মা কালী তৈরি করতে সময় লেগেছে ৪ দিন মত। ১০-১২ টি দেশলাই কাঠি ব্যবহৃত হয়েছে। এছাড়াও ব্যবহার করা হয়েছে উল। জঙ্গলমহলের আকাশের এমন এক কাজ নজর কেড়েছে সৃজনশীল মহলে।
ঠিক যেভাবে ঠাকুর তৈরি হয়, তেমনভাবেই কাঠামো তৈরি করা হয়েছে প্রথমে। কাঠামোর ভীত হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে বাজারে উপলব্ধ সাধারন আকারের দেশলাই কাঠি। এবং ব্যবহার করা হয়েছে আঠা। তারপর সেই কাঠামোতে মায়ের রূপ ফুটিয়ে তুলতে আকাশ মল্ল ব্যবহার করেছে উল। একটু একটু করে ধৈর্যের সঙ্গে কাঠামোতে জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে উল। যার জন্য ফুটে উঠেছে, মা কালী, শিব এবং মুণ্ডমালা। আকাশ বলেন, দেশলাই কাঠি খুব সহজেই উপলব্ধ এবং দামেও কম বলে, দেশলাই কাঠির ব্যবহার করেছেন তিনি।
পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষের অন্যতম প্রত্যন্ত এলাকায় জঙ্গলমহল। জঙ্গলমহলের মানুষের জীবন জীবিকা জীবনধারা যথেষ্ট কঠিন। সেই জঙ্গলমহলে আর্থিক অনটনের মাঝেও শিল্পচর্চা এক ধরনের স্পর্ধা সেটা বলাই চলে। কোনও রকম প্রথাগত শিল্পশিক্ষা না থাকলেও, সামাজিক মাধ্যম থেকে নিজেকে শিক্ষিত করেছেন আকাশ মল্ল। সামাজিক মাধ্যমে দেখেছেন কিভাবে তৈরি করতে হয় দেশলাই কাঠির মূর্তি। সেভাবেই তৈরি করেছেন মা- কালীকে।
নীলাঞ্জন ব্যানার্জী