রুদ্রনারায়ণ রায়, উত্তর ২৪ পরগনা: কালীপুজোর পরের রাতে রীতিমতো জনসুনামি দেখল বারাসত-মধ্যমগ্রাম। এদিন বিকেল থেকেই রাস্তায় প্রতিমা দর্শন করতে নেমে পড়েছিলেন মানুষজন। রাত যত বেড়েছে, ততই বেড়েছে ভিড়। তবে এবার জেলা প্রশাসনের তরফে এই ভিড় সামাল দিতে বিশেষ পদক্ষেপ হিসেবে তুলে ধরা হয় বারাসতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় জায়ান্ট স্ক্রিনে কোন মণ্ডপে কত ভিড় এবং কতক্ষণ দাঁড়িয়ে মানুষ জন ঠাকুর দেখতে পারবেন তার একটি আনুমানিক সময়।
যেখানে জেলা প্রশাসনের তরফে প্রতিটি মণ্ডপকে বিশেষ নজরে রেখে তথ্য তুলে ধরা হয় ওই জায়ান্ট স্ক্রিনগুলিতে। কখনও সন্ধানী ক্লাব, কখনও নবপল্লী ব্যায়াম সমিতি, কখনও পায়োনিয়ার ক্লাব তো কখনও ওই জায়ান্ট স্ক্রিনে ভেসে উঠতে দেখা যায় কেএনসি রেজিমেন্টের প্রতিমা দর্শনে মানুষের ভিড় কেমন রয়েছে এবং সাধারণ মানুষকে কত সময় দাঁড়িয়ে ওই মণ্ডপে প্রবেশ করতে হবে তার একটি আনুমানিক সময়। যা এবার বাড়তি সুবিধা যোগ করেছে বারাসত মধ্যমগ্রামের বিগ বাজেটের কালীপুজোর প্যান্ডেল হপিংয়ে।
কোথায় কত ভিড় রয়েছে তার ভিডিও তুলে ধরা হয় স্ক্রিনে। ফলে মানুষ সেই ছবি দেখেই কোন মণ্ডপ কখন দর্শন করবেন তার একটি নির্দিষ্ট তথ্য পেয়ে যাচ্ছেন আগে থেকেই। পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল বিকেলের পর থেকেই নো এন্ট্রি সদর শহরে। সেই অনুযায়ী বড় পণ্যবাহী গাড়ি ও বাস মধ্যমগ্রাম, টাকি রোড, বামনগাছি এবং ব্যারাকপুর রোড দিয়েই ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে বারাসতের অভ্যন্তরে ছোট যানবাহন ছাড়া প্রবেশ করতে পারেনি কোনও বড় গাড়ি।
আরও পড়ুন : টিউনিশিয়া থেকে চার্টার্ড কার্গো বিমানে ৩টি আফ্রিকান হাতি আসছে ‘বনতারা’-য়
দীর্ঘ বছর ধরে কালীপুজোয় যে যানজটের ছবি মানুষজন দেখে অভ্যস্ত তা যেন অনেকটাই বদলাল জেলা প্রশাসনের এহেন নানা পদক্ষেপে। পথচলতি মানুষ এই বিষয়টিকে রীতিমতো সমর্থন করেছেন। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন প্রায় কয়েক লক্ষ মানুষ রাস্তায় নেমেছিলেন বারাসত মধ্যমগ্রাম এলাকার কালীপুজো পরিদর্শনে। জেলার নানা প্রান্ত থেকেই মানুষজন এসেছেন বারাসতের এই বিখ্যাত কালীপুজোর মণ্ডপগুলি ঘুরে দেখতে। যাতে নিরাপত্তার বিষয়টি বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলিতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি ছিল ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারিও।
মধ্যমগ্রাম চৌমাথা, ডাকবাংলো, চাঁপাডালি মোড়, কলোনি মোড়-সহ বিভিন্ন জায়গায় জেলা প্রশাসন ও ট্রাফিক বিভাগকে সক্রিয় থাকতে দেখা যায়। মানুষের জনসুনামি সামাল দিতে একসময়ের রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় প্রশাসনকে। তবে সুষ্ঠুভাবেই তা পরিচালনা করেছে জেলা প্রশাসন বলেই দাবি পুজো উদ্যোক্তাদেরও। তবে এবার বারাসতের পুজো পরিদর্শনে এই জায়ান্ট স্ক্রিনে জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন মণ্ডপগুলির ভিড়ের পরিসংখ্যান তুলে ধরে তথ্য বাড়তি সাহায্য করেছে সাধারণ মানুষকে বারাসত মধ্যমগ্রামের কালীপুজো ভিড় এড়িয়ে দেখতে। আজও সপ্তাহান্তে আগামীকালের ভিড় ছাপিয়ে যাবে বলেই অনুমান করা হচ্ছে।