অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

‘আমি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়….’ ‘ডায়মন্ড হারবার মডেল’ নিয়ে বিরাট অঙ্গীকার অভিষেকের

কলকাতা: তৃতীয় দফা ভোটের আগে প্রচারে নেমে ডায়মন্ডহারবারে সভায় বড় দাবি জানালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “পরিবার বা পাড়ার লোকেদের কাছে ভোট চাইতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেতেন না৷ দক্ষিণ কলকাতায় তিনি যখন দাঁড়াতেন৷ ঠিক তেমনি আমিও ডায়মন্ড হারবারে ভোট চাইতে আসিনি৷ আমি অনুমতি চাইতি এসেছি। যাতে আমি বাকি ৪১ আসনে নজর দিতে পারি৷ এই ডায়মন্ড হারবার তৃণমূলের অন্যতম শক্ত ঘাঁটি। আজ মাত্র তিনটে ব্লক বা ২৮ অঞ্চল নিয়ে মিটিং, তাতেই যা ভীড়৷ এনারাই যদি নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে৷ তাহলে সাতগাছিয়া আর বজবজ থেকে দেড় লক্ষ ভোটে জিতবে তৃণমূলে। আজই তো ৩৫ হাজার মানুষ এসেছে।”

অভিষেক আরও যোগ করেন, “বিজেপি সাহায্য করে না৷ কেন্দ্র নানা অসহযোগিতা করলেও ডায়মন্ড হারবার আজ দেশের সেরা সংসদীয় কেন্দ্র৷ সবচেয়ে বড় জলের প্রকল্প এনেছি এখানে৷ ৫৫৮০ কোটি টাকার কাজ ১০ বছরে করেছি৷ এক বছরে ৫৫৮ কোটি, এক মাসে ৪৬ কোটি ৫০ লক্ষ, এক দিনে এক কোটি ৫৫ লক্ষ, আর প্রতি ঘণ্টায় সাড়ে ছয় লক্ষ টাকার কাজ হয়েছে।”

ডায়মন্ডহারবারের তৃণমূল সাংসদের তীব্র কটাক্ষ, “বিজেপি আর সিপিএম প্রার্থী যাঁরা লড়ছে তাঁদের উদ্দেশ্যে বলছি, ১ বছরে ৩৬৫ দিন হল। ১০ বছরে ৩৬৫০ দিন ঘুমিয়েছেন যখন, তখন কাজ হয়েছে ১ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকার। এই অঙ্ক ভাল করে জানুন। বিজেপির সরকার অপরিকল্পিতভাবে লকডাউন করেছিল। আর আমরা প্রথম ঢেউয়ে ১৪ লক্ষ বাড়িতে খাবার পৌঁছে দিয়েছিলাম ‘শ্রদ্ধার্ঘ্য’ চালু করে৷ ৭৬ হাজার জন মাসে এক হাজার করে টাকা পাচ্ছে।
১০০% কভারেজ এটাই ডায়মন্ড হারবার মডেল৷ যাঁরা আমার কাজকে কটাক্ষ করে, তাঁদের বলব, আমার নিঃশব্দ বিপ্লব বইয়ে আমি তুলে ধরি।”

“যাঁরা আজ লড়তে এসেছে৷ তাঁরা হাওয়া তুলে বলেছিল, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তিন বা চার নম্বর হবে। আমি বিশ্বাস করি গণতন্ত্রে শেষ কথা। যে ডায়মন্ড হারবার নিয়ে কটাক্ষ করেছিল, তাঁর প্রার্থী খুঁজে পেতে দেড় মাস লেগেছে৷ আমার ভাগ্য ভাল আমি ডায়মন্ড হারবারের মানুষদের পেয়েছি। আমি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব।”

অভিষেকের আরও তোপ, “যাঁরা আমার বিরুদ্ধে লড়াই করছে তাঁদের পূর্ণ সম্মান দিয়ে বলছি৷ কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে না বলে৷ খবরের কাগজে প্রথম পাতায় বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রার্থী খুঁজতে পারত৷ এখনও সময় আছে বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা আসতে পারে লড়তে আমার বিরুদ্ধে৷ ডায়মন্ড হারবার পথ দেখিয়েছে।”

“যাঁদের টিকি খুঁজে পাওয়া যায়নি৷ তাঁরা আজ কটাক্ষ করতে আসছে৷ আমি তাঁদের বলব ডায়মন্ড হারবার নিয়ে কি কাজ করেছেন তার হিসাব দিন৷ নদীর ধার রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় সাহায্য চেয়েছিলাম। প্রতিরক্ষা দফতর করেনি৷ এই রাস্তার জন্য বারবার চিঠি লিখেছি৷ সাহায্য করেনি৷ তাই আমি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গ্যারান্টি দিচ্ছি, ৬ জুন আদর্শ আচরণ বিধি উঠে গেলে তার ছয় মাসের মধ্যে আপনি আবাসের টাকা পেয়ে যাবেন।”

সবশেষে এদিনের সভা থেকে ডায়মন্ডহারবারের মানুষের উদ্দেশ্যে অভিষেকের আর্জি, “ডায়মন্ড হারবারে লড়াই আপনাদের৷ আর আমার লড়াই বাকি ৪১ আসনে। উত্তরের জেলার মানুষ সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করেছে৷ আর আপনারা সামনে থেকে করবেন। বিজেপির বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ, বিতৃষ্ণা ভারত জুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে। চারশ পারের গল্প দিচ্ছে৷ জেনে রাখুন গাড়ি ২০০ তে আটকে যাবে৷ সরকার গঠনে তৃণমূল অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। অনেকে ভেবেছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দক্ষিণ কলকাতা থেকে দাঁড়াবে। এই জায়গা ফাঁকা হয়েছিল বলে আমাকে দল পাঠিয়েছিল। এখন বলতে দ্বিধা নেই৷ দক্ষিণ কলকাতা দুই নম্বর ঘাটি৷ এক নম্বর ঘাটি হল ডায়মন্ড হারবার। সব লোকসভা, সব বিধানসভায় ডায়মন্ড হারবার মডেল হবে। এটাই আমাদের অঙ্গীকার।”