অরুণ মল্লিক 

East Bardhaman News: রাস্তায় নেচে অর্থ উপার্জন করেন বর্ধমানের অরুণ, কারণ জানলে মুগ্ধ হবেন আপনিও

পূর্ব বর্ধমান: মানুষের পাশে দাঁড়াতে হাতিয়ার শুধুমাত্র নাচ। পূর্ব বর্ধমান জেলার বর্ধমান শহরের বাসিন্দা এই যুবক পেশায় নৃত্য শিল্পী। কোনও প্রথাগত প্রশিক্ষণ ছাড়াই নিজের চেষ্টায় নাচ শিখে পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে সে। তবে, নাচকে কাজে লাগিয়ে নিজের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো ছাড়াও, আরও যেই কাজ সে করে তা অবাক করবে আপনাকে। পেশায় নৃত্য শিল্পী এই যুবকের নাম অরুণ মল্লিক। তার বাড়ি বর্ধমানের সাঁড়খানা গলি এলাকায়। ১২ বছর বয়স থেকে নাচ করছেন। কোনও প্রথাগত প্রশিক্ষণ না থাকলেও, নাচই তার অর্থ উপার্জনের পথ।

অরুণ বর্ধমানের বিভিন্ন জায়গায় নাচ করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বেশ কিছু অর্থ উপার্জন করে। আর উপার্জন করা অর্থ দিয়ে বিভিন্ন জিনিস কিনে অরুণ গরীব দুঃস্থদের সাহায্য করে। কখনও নাচ থেকে উপার্জিত টাকায় জল কিনে দান করে। আবার কখনও অভুক্তদের মুখে সে খাবার তুলে দেয়। কিন্তু কেন হঠাৎ এহেন উদ্যোগ? এই প্রসঙ্গে অরুণ জানিয়েছেন, নিজের মধ্যে যে প্রতিভা রয়েছে, সেটাকে কাজে লাগিয়েই মানুষের উপকার করতে চান তিনি। এই বিষয়ে তিনি বলেন,”অনেক অসহায় মানুষ আছে যাদের দেখে কেউ কাছে যায় না। কিন্তু আমার মনে হল ব্যক্তিগতভাবে তাদের সাহায্য করা দরকার। তাই আমি নিজের ট্যালেন্ট কাজে লাগিয়ে অসহায় মানুষদের সাহায্য করার চেষ্টা করি।”

অরুণ জানিয়েছে,তার পরিবারে রয়েছে চার বোন এবং মা বাবা। পরিবারে অর্থ উপার্জনকারী বলতে, অরুণ একাই। নিজের ওপর পুরো পরিবারের দায়িত্ব থাকা সত্ত্বেও, সে নিজের সাধ্যমত পাশে দাঁড়াচ্ছে সাধারণ মানুষদের। জানা গিয়েছে, রাস্তার মধ্যে নাচ দেখিয়ে যে টাকা সে পায়, তা সে ব্যয় করে জনসেবায়। কখনও খাবার, কখনও পোশাক কখনও বা অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় বস্তু তুলে দেন তিনি। অরুণের এই কাজকে সাধুবাদ জানিয়েছে তার সহকারী করণ মাহালিও। করণ এই বিষয়ে জানিয়েছে,”আমি অনেক ডান্সার দেখেছি কিন্তু এই দাদার মতো কাউকে দেখিনি। এটা সত্যিই খুবই ভালো একটা উদ্যোগ।”

আরও পড়ুনঃ IPL 2024 Mega Auction: এবার আইপিএল মেগা নিলামে ফিরবে পুরনো নিয়ম? দলগুলির দাবি মেনে চমক দেবে বোর্ড!

সামনে পাতা কালো টুপি আর সঙ্গে গান বাজানোর একটা ছোট্ট স্পিকার। এভাবেই বর্ধমানের বিভিন্ন জায়গায় অরুণ নেচে বেড়ান। অরুণের নাচ দেখতে ভিড় জমান আম জনতাও। নাচ শেষ হলেই সেই টুপি ভরে ওঠে বেশ কিছু টাকায়। আর সেই টাকা অরুণ পুরোটাই খরচ করে গরীব দুঃস্থদের জন্য। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে বর্ধমানের অরুণের এহেন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।

অরুণের একটা ছোট্ট নাচের স্কুলও রয়েছে, সেখানেই সে নাচ শেখানোর পাশাপাশি চালিয়ে যায় নিজের অনুশীলন। ভবিষ্যতে নাচ নিয়েই এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন রয়েছে অরুণের। কলকাতার বেশ কিছু জায়গায়, বড় বড় অভিনেতাদের সঙ্গে ব্যাকগ্রাউন্ড ড্যান্সার হিসেবে নাচের সুযোগও পেয়েছে অরুণ। তবে এখনও সেভাবে কোনও বড় সুযোগ আসেনি বর্ধমানের পরিশ্রমী, মানবিক এই নৃত্য শিল্পীর কাছে।

বনোয়ারীলাল চৌধুরী