কোন বয়সে Investment Planning করা লাভদায়ক হতে পারে? ২০, ৩০ না ৪০ বছর?

আমাদের জীবনের প্রতিটি দশকে নিজেদের বর্তমান চাহিদার উপর ভিত্তি করে নিজেদের আর্থিক দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে। ২০ বছর বয়সে একটি আর্থিক বাজেট করা প্রয়োজন এবং অপ্রয়োজনীয় ব্যয় এড়াতে হবে। ৩০ বছর বয়সে জীবনে বড় খরচের প্রয়োজন হয়, যেমন একটি বাড়ি কেনা বা ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা করা। তাই সঞ্চয় এবং বিনিয়োগের মধ্যে থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একবার ৪০ বছর বয়সে পৌঁছে গেলে নিজেদের আর্থিক ভবিষ্যত সুরক্ষিত করার উপর ফোকাস করার সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের অবসরের পরিকল্পনা শুরু করা প্রয়োজন।

২০ বছর বয়সে স্বাস্থ্যকর আর্থিক অভ্যাস তৈরি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে রয়েছে অর্থ পরিচালনা করতে শেখা এবং ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করা শুরু করা। কেউ যখন ৩০ বছর বয়সে প্রবেশ করে, তখন জীবন সাধারণত আরও জটিল হয়ে ওঠে। যেমন একটি বাড়ি কেনা, একটি পরিবার গড়ে তোলা এবং একটি ক্রমবর্ধমান কেরিয়ার পরিচালনার মতো বড় খরচ সামনে আসে। যখন কেউ ৪০ বছর বয়সে এসে পৌঁছয়, তখন সে অবসর গ্রহণের পথে রয়েছে। আর্থিক ঝুঁকি থেকে নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে রক্ষা করার সময় বিনিয়োগের সর্বাধিক ব্যবহার করা হয়েছে কি না, এবার তা নিশ্চিত করা অপরিহার্য।

তাই জেনে নেওয়া যাক ২০,৩০ এবং ৪০ বছর বয়সে নিজেদের আর্থিক ভবিষ্যত সুরক্ষিত করার জন্য আর্থিক সিদ্ধান্তগুলি কেমন হওয়া উচিত।

আরও পড়ুন: পুজোর মাসে খরচ বাড়তে চলেছে, ১ অক্টোবর থেকে লাগু হবে এই ৫ নিয়ম, দেখে নিন বিস্তারিত

২০ বছর বয়সে আর্থিক স্থিতিশীলতার ভিত্তি স্থাপন –

২০ বছর বয়স হল আর্থিক ভবিষ্যতের ভিত্তি তৈরি করা। এই সময় ক্রেডিট কার্ডের ঋণের মতো নির্দিষ্ট ফাঁদে পড়া সহজ। কিন্তু, তাড়াতাড়ি বিনিয়োগ শুরু করা, বাজেট ট্র্যাক করা দীর্ঘমেয়াদী সাফল্যের দিকে নিয়ে যেতে পারে। এর জন্য কয়েকটি বিষয় মেনে চলা প্রয়োজন –

সঞ্চয়কে অগ্রাধিকার – উপার্জন শুরু করার সঙ্গে সঙ্গেই সঞ্চয় শুরু করতে হবে। তা অল্প পরিমাণে হলেও ক্ষতি নেই এবং একটি জরুরি তহবিল তৈরি করাই অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।

বাজেট উপেক্ষা করা উচিত নয় – নিজেদের খরচ ট্র্যাক করতে হবে। নিজেদের আয়ের টাকা কার্যকরভাবে পরিচালনা করতে এবং ঋণে পড়া এড়াতে আর্থিক লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে।

ক্রেডিট কার্ডের ঋণ এড়িয়ে চলা দরকার – ক্রেডিট কার্ডের ঋণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে, যদি কেউ দৈনন্দিন খরচের জন্য এটির উপর নির্ভর করে। তাই প্রতি মাসে ব্যালেন্স সম্পূর্ণ পরিশোধ করতে হবে।

তাড়াতাড়ি বিনিয়োগ শুরু – কম-ঝুঁকির বিনিয়োগ শুরু করার কথা বিবেচনা করতে হবে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।

অবসর সম্পর্কে চিন্তা – নিজেদের অবসর পরিকল্পনায় অবদান রাখতে হবে (যেমন প্রভিডেন্ট ফান্ড)। চক্রবৃদ্ধি থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিজস্ব অবসর অ্যাকাউন্ট শুরু করতে হবে।

আরও পড়ুন: আজ সোনার দাম কত হল ? আরও বাড়ল দাম ?

৩০ বছর বয়সে আর্থিক ফাউন্ডেশনের বিল্ডিং –

৩০ বছর বয়সে সম্ভবত নিজেকে কর্মজীবনে আরও বেশি প্রতিষ্ঠিত করা প্রয়োজন। এই সময়ে নিজেদের একটি পরিবার বা বাড়ির মতো আর্থিক দায়িত্ব যুক্ত হতে পারে। এর জন্য এই আর্থিক ভুলগুলি এড়িয়ে চলতে হবে –

সঞ্চয়ে ফোকাস – একটি বাজেট বজায় রাখতে হবে এবং নিজের আয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সঞ্চয় এবং বিনিয়োগে মনোযোগ দিতে হবে। আয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ব্যয় বাড়ানো এড়িয়ে চলতে হবে।

অবসর গ্রহণে অবদান – প্রতি বছর আয়ের একটি উচ্চ শতাংশ জমা করে অবসরকালীন সঞ্চয়কে অগ্রাধিকার দিতে হবে। অবসরকালীন সঞ্চয় বাড়াতে খরচ কমাতে হবে।

একটি বাড়ি ক্রয় – একটি বাড়ি কেনার জন্য সঞ্চয় করা প্রয়োজন। এর জন্য অন্যান্য অপ্রত্যাশিত ব্যয় কম করতে হবে।

একটি জরুরি তহবিল – অপ্রত্যাশিত খরচ, যেমন মেডিকেল বিল, চাকরি হারানো বা বাড়ির মেরামত নিজেদের আর্থিক পরিকল্পনাকে লাইনচ্যুত করতে পারে। তাই আগে থেকেই একটি জরুরি তহবিল গড়ে তোলা প্রয়োজন।

বিনিয়োগে বৈচিত্র্য – স্টক, বন্ড এবং অন্যান্য সম্পদের মিশ্রণ বাজারের মন্দার সময় নিজেদের সম্পদ রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে।

৪০ বছর বয়সে দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক সাফল্য সুরক্ষিত করা –

যখন কেউ ৪০ বছরে এসে পৌঁছেছে, তখন নিজেদের আর্থিক ভবিষ্যত সুরক্ষিত করার দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত –

অবসর পরিকল্পনা – অবসর গ্রহণের পরিকল্পনায় অনুমোদিত যে কোনও অবদানের সুবিধা নিতে হবে এবং তা নিশ্চিত করতে একজন আর্থিক পরিকল্পনাকারীর সঙ্গে দেখা করা প্রয়োজন।

ঋণ থেকে মুক্তি – এটি ক্রেডিট কার্ড, ব্যক্তিগত ঋণ, বা অন্যান্য যে কোনও লোন হোক না কেন, তা থেকে মুক্তি পেতে হবে। এই সময়ে আক্রমণাত্মকভাবে ঋণ পরিশোধের উপর ফোকাস করতে হবে।

বিমা – অপ্রত্যাশিত ঘটনার ক্ষেত্রে নিজেকে এবং পরিবারকে রক্ষা করার জন্য জীবন ও স্বাস্থ্য বিমা আছে কি না তা নিশ্চিত করতে হবে।

খরচের জন্য পরিকল্পনা – বাড়ির খরচের জন্য আগে থেকেই বাজেট করে রাখা প্রয়োজন। কারণ অবসরের পরে যেন বাড়ির খরচ চালাতে অসুবিধা না হয়, তাই আগে থেকেই সঞ্চয় করা প্রয়োজন।

জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে দীর্ঘমেয়াদী সাফল্যের জন্য এভাবে সঠিক আর্থিক সিদ্ধান্ত নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।