Nadal Australian Open champion: মেডভেডেভকে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতে রেকর্ড গ্র্যান্ড স্লামের মালিক নাদাল

#মেলবোর্ন: কেরিয়ারের ২১ তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের জন্য রবিবার মেলবোর্নে নেমেছিলেন রাফায়েল নাদাল। প্রতিপক্ষ গতবারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালিস্ট তরুণ রাশিয়ান টেনিস তারকা ড্যানিল মেডভেডেভ, যিনি ঠিক একবছর আগে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে জকোভিচের কাছে স্ট্রেট সেটে হেরে গেলেও ইউএস ওপেনের ফাইনালে নোভাক জকোভিচের ক্যালেন্ডার স্ল্যামের স্বপ্ন শেষ করে দিয়েছিলেন। তাই লড়াইটা সহজ হবে না স্প্যানিশ তারকার পক্ষে সেটা জানাই ছিল।

আরও পড়ুন – Virat Kohli you vs you : আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কার সঙ্গে লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিলেন বিরাট কোহলি ?

বর্তমানে নাদালের রাঙ্কিং যেখানে ৫, সেখানে মেডভেডেভ বর্তমানে বিশ্বের ২ নম্বর খেলোয়াড়। শুরু থেকেই দুরন্ত ছন্দে পাওয়া গেল রুশ তারকাকে। প্রথম সেটে দাঁড়াতে দেননি নাদালকে। জিতলেন ৬-২। দ্বিতীয় সেটে নাদাল ৪-১ এগিয়েছিলেন। সেখান থেকে স্বপ্নের কামব্যাক মেডভেডেভের। টাইব্রেকারে জিতে নিলেন দ্বিতীয় সেট। তৃতীয় সেটে নাদালকে ঘুরে দাড়াতেই হত। ৬-৪ জিতে আশা বাচিয়ে রাখলেন রাফা।

কিন্তু এদিন নাদালের খেলায় প্রচুর আনফোর্সড এরর এবং ডবল ফল্ট লক্ষ্য করা গেল। নেট প্লের ক্ষেত্রেও ভুলভ্রান্তি করছিলেন নাদাল। তুলনায় রুশ তারকা অনেক বেশি ধারাবাহিক খেলছিলেন। সার্ভিস, কোর্ট কভারেজ, ফোর হ্যান্ড সবদিক থেকেই মেডভেডেভকে যেন অপরাজেয় মনে হচ্ছিল। এস মরার ক্ষেত্রেও তিনি এগিয়েছিলেন। কিন্তু প্রতিপক্ষের নাম যখন রাফাল নাদাল, তখন বিনা লড়াইয়ে মেডভেডেভ ট্রফি নিয়ে যাবেন সেটা সম্ভব ছিল না।

অসাধারণ লড়াই হল চতুর্থ সেটেও। শেষ পর্যন্ত নাদাল জিতলেন ৬-৪ ব্যবধানে। দুটি সেট পিছিয়ে থেকে কামব্যাক করা সহজ ছিল না। বিশেষ করে যেখানে নাদালের বয়স ৩৫ বছর, প্রতিপক্ষ মেডভেডেভ ২৬ বছর, সেখানে বয়সের দিক থেকে অ্যাডভান্টেজ ছিল রুশ তারকার পক্ষে। আজকের আগে পর্যন্ত দুটি সেট পিছিয়ে থেকে ক্যারিয়ারে মাত্র তিনবার কামব্যাক করেছিলেন নাদাল। আজ আবার করলেন।

ক্রস কোর্ট, ডাউন দ্যা লাইন, উইনার মারার ক্ষেত্রে ছন্দ ফিরে পেলেন নাদাল। এরপর যেন রক্তের স্বাদ পেয়ে গেলেন স্প্যানিশ তারকা। হারিয়ে যাওয়া আত্মবিশ্বাস ফিরে এল। পঞ্চম সেটে ড্যানিলকে ব্রেক করে এগিয়ে গেলেন। মনে হচ্ছিল বুল ফাইটের শক্তি নিয়ে নড়াচড়া শুরু করেছেন রাফা। কিন্তু রাশিয়ান মেডভেদেভ এতো সহজে হার মানার বান্দা নন। প্রতিটা পয়েন্টের জন্য নাদালের কড়া পরীক্ষা নিলেন।

কিছু ড্রপ শট ফিরিয়ে দিলেন অনবদ্য কোর্ট কভারেজ করে। ব্রেক পয়েন্ট আদায় করলেন। যদিও শেষ পর্যন্ত নাদাল এগিয়ে গেলেন ৪-২ ব্যবধানে। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রশ্ন ছিল ১৩ বছর পর দ্বিতীয় অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিততে পারবেন নাদাল? এতটাই লড়াই করলেন মেডভেদেভ। জল পানের বিরতির সময় ফিজিওকে ডেকে মাসাজ করালেন পায়ে। ব্রেক করলেন নাদালকে। যেন মৃত্যুর মুখ থেকে ঘুরে দাঁড়ালেন।

কিন্তু চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত ৬-৫ এগিয়ে থেকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য সার্ভিস ধরে রাখলেন নাদাল। শেষ পর্যন্ত আর হাত থেকে ম্যাচ বের হতে দেননি। দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ ঘন্টার লড়াই শেষে টেনিসের এভারেস্টে পা রাখলেন রাফায়েল নাদাল।

পেছনে ফেলে দিলেন রজার ফেডেরার এবং নোভাক জোকোভিচকে।চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর মুখে হাত চাপা দিয়ে কিছুক্ষণ যেন অবিশ্বাসের ভঙ্গিতে ছিলেন নাদাল। আনন্দাশ্রু বেরিয়ে এল চোখ দিয়ে। ইতিহাসের রাতে তারা হয়ে জ্বলে উঠলেন রাফায়েল নাদাল।