বিভিন্ন নতুন রেলওয়ে লাইন প্রকল্পের কাজ সম্পাদনের দ্বারা উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির রূপান্তরের ক্ষেত্রে ভারতীয় রেলওয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে আসছে। ভৈরবী-সাইরাং নতুন রেল লাইন প্রকল্পটি এমন একটি প্রকল্প যা উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মিজোরামের রাজধানীর সাথে দেশের অন্যান্য অংশকে সংযুক্ত করবে, এবং এটি সম্পূর্ণ হওয়ার শেষ পর্যায়ে।
ভৈরবী ও সাইরাঙের মধ্যে ৫১.৩৮ কিমি নতুন রেলওয়ে লাইনটি চারটি সেকশনে বিভক্ত করা হয়েছে, এগুলি হলো যথাক্রমে ভৈরবী-হর্তকি, হর্তকি-কাওনপুই, কাওনপুই-মুয়ালখাং এবং মুয়ালখাং-সাইরাং। ১৭.৩৮ কিমি দৈর্ঘের ভৈরবী-হর্তকি সেকশনটি জুলাই, ২০২৪ তারিখে সম্পূর্ণ হয় ও চালু করা হয় এবং ২০২৪-এর আগস্ট থেকে ট্রেন পরিষেবা চালু হয়। এই প্রকল্পটি সম্পূর্ণ হলে মিজোরামের মানুষের জন্য যোগাযোগ ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা ঘটবে।
আরও পড়ুন: ডিপ ফ্রিজে জমে বরফের পাহাড়! বারবার কেন হয় এই সমস্যা? ৫ মিনিটে গলবে কীভাবে? জেনে নিন সহজ টোটকা
সাশ্রয়ী এবং পরিবেশ অনুকূল এই রেলওয়ে পরিষেবাটি রাজ্যের প্রায় সমস্ত উন্নয়নমূলক কাজে এক ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।কঠিন ভূখণ্ডে নির্মীয়মাণ ভৈরবী-সাইরাং রেলওয়ে প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ৪৮টি টানেল। এই প্রকল্পে টানেলের মোট দৈর্ঘ হলো ১২৮৫৩ মিটার, যার মধ্যে ইতিমধ্যে ১২৮০৭ মিটার টানেলের কাজ ইতিমধ্যে সম্পূর্ণ হয়েছে। প্রকল্পটিতে মোট ৫৫টি মেজর ব্রিজ এবং ৮৭টি মাইনোর ব্রিজ রয়েছে। প্রকল্পটির সবচেয়ে উঁচু পিয়ার অর্থাৎ সাইরাং স্টেশনে প্রবেশের সময় ১৯৬নং. ব্রিজের পিয়ার পি-৪ নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেছে।
এই পিয়ারের উচ্চতা ১০৪ মিটার, যা কুতুব মিনারের তুলনায় ৪২ মিটার উঁচু। এছাড়াও প্রকল্পটিতে ৫টি রোড ওভার ব্রিজ এবং ৬টি রোড আন্ডার ব্রিজ রয়েছে। প্রকল্পটির অধীনে রয়েছে চারটি স্টেশন যথাক্রমে হর্তকি, কাওনপুই, মুয়ালখং এবং সাইরাং।এই প্রকল্পটি সম্পাদনের ক্ষেত্রে মিজোরামে প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত ও দীর্ঘকালীন বর্ষার জন্য খুব কম কাজের সময়, গভীর জঙ্গলের মধ্য দিয়ে খুব কঠিন ও পাহাড়ি ভূ-খণ্ড, নিম্নমানের প্রবেশযোগ্যতা, নির্মাণ উপকরণ ও দক্ষ শ্রমিকের অভাবের মতো একাধিক প্রত্যাহ্বান সত্ত্বেও উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে এই প্রকল্পটি দ্রুত চালু করার প্রতিশ্রুতি পূরণে সমস্ত প্রচেষ্টা করেছে।
নতুন এই রেল প্রকল্পটি মিজোরামের জনগণকে উন্নত সংযোগ ব্যবস্থা প্রদান করার পাশাপাশি অঞ্চলটিতে ক্ষুদ্র মাপের শিল্প বিকাশে সাহায্য করবে এবং রাজ্যের পর্যটন শিল্পকেও উৎসাহিত করবে। এই প্রকল্পটি স্থানীয় জনগণের প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য পাহাড়ি রাজ্যটিতে যাত্রী ও বিভিন্ন উপকরণ তথা সামগ্রী পরিবহণের ক্ষেত্রে ব্যয়ের হার যথেষ্ট হ্রাস করটা নিশ্চিত করবে। মিজোরামের রাজধানী এবং অসমের নিকটবর্তী স্থানগুলির মধ্যে ভ্রমণের সময় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস হবে। এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষ দেশের দূর দূরান্ত অঞ্চলে যাওয়ার সুবিধা লাভ করবেন এবং অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রীর বাধাহীন সরবরাহ লাভ করবেন।