মুম্বই: ‘হিরামান্ডি’ আর্থিক দিক থেকে সফল। কিন্তু সমালোচনা জুটেছে প্রশংসার চেয়ে বেশি। বিশেষ করে ভাগ্নি শরমিন সেহগলকে অভিনয়ের সুযোগ করে দেওয়ায় সঞ্জয় লীলা বনশালির উপরে হাড়ে চটা অনেকেই। এক সময়ের অন্ধ ভক্তরাও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন এই ওয়েব সিরিজ থেকে। বনশালি কিন্তু নিজের সিদ্ধান্তে অনড়। “হয়তো আমার ছবি আর হিট হবে না, অন্য পরিচালকদের মতো ব্লকব্লাস্টার হবে না। কিন্তু বিষয়টা কোটি টাকা গোনার নয়। শিল্পী হিসেবে আমার কাছে যে অনুভূতিগুলো আসে, এটা সেই বিষয়”, বলছেন পরিচালক।
দ্য হলিউড রিপোর্টার ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের ছবি আর জীবন দুই নিয়েই মুখ খুলেছেন পরিচালক। জানিয়েছেন তাঁর জীবনের একটা সময় কেটেছে মুম্বইয়ের এক চওলে, ৩০০ বর্গফুটের ঘুপচি এক ঘরে। “সেই ঘর বর্ণহীন হলেও জীবন ছিল কল্পনার রঙে ভরা”, জানিয়েছেন তিনি। বলতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেননি, “আমার মা নাচতে ভালবাসতেন। জীবনে চওলের ১০০ বর্গফুটের ঘর ছাড়া আর কোথাও নাচার সুযোগ তাঁর হয়নি। আর এখন আমার নায়িকা বিশাল বিলাসবহুল সেটে নাচেন”।
আরও পড়ুন- এই গান গাইতে গিয়ে গলা দিয়ে রক্ত বেরিয়ে গিয়েছিল সোনু নিগমের! ২৭ বছর পরেও তা সুপারহিট!
জীবন এভাবেই পরতে পরতে জড়িয়ে গিয়েছে পরিচালকের শিল্প এবং ছবির ভাবনার সঙ্গে। তিনি জানিয়েছেন, যতই দারিদ্র্যে দিন কাটুক, সিনেমার দুনিয়া ছিল তাঁদের পরিবারের সবার উন্মাদনার জায়গা। বলেছেন, তাঁর বাবা একবার জাহাজি লুটেরা নামে এক ছবি প্রযোজনা করেছিলেন। ছবি চলেনি, পরিবার আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়ে। ঠাকুমা বহু কষ্টে সঞ্চিত ১০ হাজার টাকা ঢেলেছিলেন সোনে কা হাথ নামে এক ছবির পিছনে, জীবন সেই বাজি জিততে দেয়নি।
আরও পড়ুন- কোন দেশে একটাও পথকুকুর নেই? উত্তর দিতে পারবেন না বেশিরভাগই…চ্যালেঞ্জ!
সেই জায়গা থেকেই বনশালির সাফল্যের পথ তৈরি হয়েছে। সাফ বলছেন তিনি, “আমি কিন্তু বড় বড় ছবি বানিয়েছি। বড় ছবি বানানোর অধিকার আমি অর্জন করেছি আসলে। তার পুরোটাই তৈরি হয়েছে আমার জীবনের বিশৃঙ্খলা থেকে। দেবদাসের যে সিনেম্যাটিক মুহূর্ত, ওটা আমার বাবা যে বোতল থেকে মদ খেতেন, তার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি। আমার প্রতিটি ছবিই জীবনের এক উপ-অধ্যায়। আর সেই উপ-অধ্যায়গুলো আসে নিখাদ স্বতস্ফূর্ত জীবন অভিব্যক্তি থেকে”।