Bratya Basu-Partha Bhowmick: ‘গ্রামের লোকেদের কাছে ডাক্তারেরা ভগবান, তাঁদের কাছে ভগবান থাকুন…’ সুপ্রিম নির্দেশের পরেই বার্তা তৃণমূলের

কলকাতা: আরজি কর কাণ্ডের প্রেক্ষিতে জুনিয়র ডাক্তারদের যে কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন, তা নিয়ে কড়া নির্দেশ দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার আহ্বান জানালেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। এবার এ নিয়েই মুখ খুললেন রাজ্য়ের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং ব্যারাকপুরের তৃণমূল সাংসদ পার্থ ভৌমিক।

ব্রাত্য বসু  বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট আজকে শুনানি করেছে। প্রতিবাদ কখনওই দায়িত্ব অবহেলা করে হয় না, এই কথা বলার জন্য বিশেষ ধন্যবাদ। আগামিকাল বিকাল ৫’টার মধ্যে জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে। আমরা তাঁদের আন্দোলনের প্রতি সহানুভূতিশীল। আমাদের আবার অনুরোধ, তাঁরা কাজে ফিরুন। ২৩ জন মারা গিয়েছেন বিনা চিকিৎসায়। আমার বিধানসভা এলাকা ডেঙ্গিতে আজ একজন মারা গিয়েছেন। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ২৪ হয়েছে। এই কর্মবিরতির কারণে লক্ষাধিক মানুষ বিপন্ন হয়েছে।’ একই কথা বলেন ব্য়ারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিকও। তাঁর কখায়, ‘মূল ইস্যু থেকে আমরা দূরে সরে গিয়েছি। ধর্ষণ ও খুনের বিচার হোক তাড়াতাড়ি সেটা আমরা চেয়েছিলাম। ২৭ দিন পেরিয়ে গেছে সিবিআইয়ের হাতে তদন্ত। কিন্তু আদালতে তাদের  আইনজীবী অনুপস্থিত থেকেছেন। গ্রামের গরিব মানুষ ডাক্তার বাবুদের ভগবান মনে করেন। তাঁদের প্রতি ভগবানের মতো আচরণ করুন।’

 সিপিএমের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে পার্থ বলেন, ‘সিপিএমের কাছে একটা মৃতদেহ দরকার ছিল। তারা সেটা পেয়েছেন। দুই বিরোধী দলের মধ্যে পারস্পরিক প্রতিযোগিতা চলছে। আমাদের নির্যাতিতার খুন ও ধর্ষণের ঘটনা চলে গেছে দ্বিতীয় সারিতে। তবে মানুষ এর জবাব দেবে।’

সোমবার সকালে সুপ্রিম কোর্টে  আরজি কর কাণ্ডের দ্বিতীয় শুনানি  শেষ হতেই প্রশাসনিক বৈঠকে  পুজো প্রস্তুতিতে জোর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নের সভাঘরে বৈঠকে তিনি বললেন, ‘১ মাস ১ দিন হয়ে গিয়েছে এবার উৎসবে ফিরুন। সিবিআই তদন্ত শেষ করুক দ্রুত।’ এ প্রসঙ্গে ব্রাত্য বসু জানান, মুখ্যমন্ত্রী পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়া অর্থনীতির কথা বলেছেন। একাংশ এর বিকৃত ব্যাখ্যা করছেন। অনেক মানুষের রুটি রোজগার যুক্ত থাকে।

শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের ট্যুইট নিয়ে জলঘোলা করা হয়েছিল। কিন্তু ট্যুইটে অভিষেক বন্দোপাধ্যায় যা বলেছিলেন আজ সেই একই ধরনের কথা শোনা গিয়েছে প্রধান বিচারপতির গলায়। ফলে অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের ট্যুইট যথাযথ ছিল। এই কর্মবিরতির কারণে লক্ষাধিক মানুষ বিপন্ন হয়েছে। শল্য চিকিৎসকদের দিকে তাকিয়ে আছেন প্রায় সাড়ে ছয় লক্ষ রোগী। আপনারা আপনাদের বিবেক বিবেচনা করুন।

আরও পড়ুন:  ময়না তদন্তের ‘সময়’ নিয়ে সংশয়! কে করেছিল সেই ভিডিওগ্রাফ…? কী তাঁর ডেজিগনেশন? প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টে

প্রসঙ্গত, এর আগে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় লিখেছিলেন, ‘যদি প্রতিবাদ চালিয়ে যেতে হয়, তাহলে তা গঠনমূলকভাবে করা উচিত। সহানুভূতি ও মানবতার সঙ্গে করা উচিত। যাতে নিষ্ক্রিয়তা বা অবহেলার মাধ্যমে আর কোনও জীবন ঝুঁকির মধ্যে না পড়ে। জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি অত্যন্ত ন্যায্য। কিন্তু তা বলে আন্দোলনের ফলে চিকিৎসার অভাবে মানুষের মৃত্যুও তো অপরাধযোগ্য হত্যাকাণ্ডের সমতুল্য।’  অভিষেকের ট্যুইট আর সুপ্রিম কোর্টের জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশের মিল খুঁজছে তৃণমূল কংগ্রেস। গ্রামের লোকেদের কাছে  ডাক্তারেরা ভগবান। তাঁদের কাছে ভগবান থাকুন, বার্তা তৃণমূলের।