চুপি পাখিরালয় 

East Bardhaman News: কচুরি পানায় ঢেকেছে ছাড়িগঙ্গা, চরম চিন্তায় মাঝিরা 

পূর্ব বর্ধমান : গতবছরের মত আবারও কচুরি পানায় ঢেকেছে ছাড়িগঙ্গা। স্বভাবতই শীতের মরশুমে সমস্যায় পড়তে হবে মাঝিদের। পূর্বস্থলীর চুপির পাখিরালয়ে পরিযায়ী পাখি আসতে শুরু করেছে। কিছুদিন পর থেকেই শুরু হবে পর্যটনের মরশুম। ইতিমধ্যেই পর্যটকদের আসা যাওয়াও শুরু হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীতে। তবে যে জায়গা পর্যটকদের মূল আকর্ষণসেটা হল পূর্বস্থলীর চুপির পাখীরালয়। ওখানে ছাড়িগঙ্গায় পর্যটকরা ঘোরেন এবং ওই জায়গাতেই দেখা মেলে পরিযায়ী পাখির। কিন্তু বর্তমানে আবার কচুরি পানায় ভরে গিয়েছে ছাড়িগঙ্গা। এর ফলে পর্যটকদের নৌকায় বসিয়ে পাখি দেখাতে অসুবিধা হবে মাঝিদের।

বাবু শেখ নামের এক মাঝি জানিয়েছেন, “কচুরিপানা কিছুটা পরিষ্কার করেছি কিন্তু এই বিলে এখনওপ্রচুর কচুরিপানা রয়েছে। শীতের সিজনের জন্য আমাদের আবার পানা পরিষ্কার করতে হবে তা না হলে ঘাট বন্ধ থাকবে। পরিযায়ী অস্প্রে পাখিও আসতে শুরু করেছে। এবার আস্তে আস্তে ভিড় জমতে শুরু করবে। কিন্তু কচুরিপানা পরিষ্কার না হলে আমাদের অন্য ব্যবস্থা নিতে হবে।”গতবছর মাঝিরা নিজেদের উদ্যোগেই কচুরি পানা পরিষ্কারের কাজ করেছিলেন। বাঁশ এবং দড়ি দিয়ে কচুরিপানা সরিয়ে সেটাকে আটকে রেখে, নৌকা চলাচলের সুবিধার জন্য রাস্তা করতে হয়েছিল তাদের। যদিও পরবর্তীতে প্রশাসনের তরফেও পানা পরিষ্কারের কাজ করা হয়েছিল। কিন্তু এবছর আবারও সেই একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের কথায়, এখন থেকেই কচুরি পানা পরিষ্কার করা দরকার। তাহলেই ভরা শীতের মরশুমে আর কোনও অসুবিধা হবেনা।

আরও পড়ুন : এই জায়গাতেই রয়েছে মহাকবি কাশীরাম দাসের জন্মভিটে, একবেলা সময় থাকলে ঘুরে আসুন

এই জায়গার উপরেই নির্ভর করে থাকেন প্রায় ১০০ জন মাঝি। এই শীতের মরশুমে পর্যটকদের পরিযায়ী পাখি দেখিয়েই তাঁদের রোজগার হয়। রাজ্য তথা ভিন রাজ্য থেকেও পর্যটকরা বর্ধমানের এই জায়গায় ঘুরতে আসেন। কিন্তু বর্তমানে এখনকার পরিস্থিতি বেশ খারাপ। এই চুপি তেই আমাজন নামেও এক জায়গা রয়েছে। সকলের কাছে যা বাংলার আমাজন নামে পরিচিত। পর্যটকদের বেশ পছন্দের ওই জায়গা। কিন্তু সেই আমাজনেরও একই পরিস্থিতি। নৌকার মাঝি বাবু শেখ আরও বলেন, “আমাজনে এখন চুপির ঘাট থেকে নৌকা নিয়ে যাওয়া যাবে না। ওখানেও আপাতত কচুরিপানা ভর্তি হয়ে আছে। ওই জায়গায় নৌকা নিয়ে যেতে গেলে, কচুরিপানা পরিষ্কার করে ভাগীরথী নদীতে ছেড়ে দিতে হবে।”

আরও পড়ুন : এই চাষ করেই বিরাট লাভ! আয়ও হচ্ছে মোটা টাকা, রাতারাতি ‘মালামাল’ হতে চাইলে শুরু করুন

রাজ্য সরকার চুপির পাখিরালয়কে ঘিরে বড় পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলেছে। আর এই কারণে ওই এলাকার বাসিন্দাদের অর্থনৈতিক অবস্থাও পাল্টাচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে সংস্কারের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে ছাড়িগঙ্গা কচুরি পানায় ভরে উঠেছে। আগে এই জায়গা পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের তরফেও পরিদর্শন করা হয়েছিল। কিন্তু এখনও সেই অর্থে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এই পরিস্থিতিতে এখন আশঙ্কায় রয়েছেন চুপির সকল মাঝিরা।

বনোয়ারীলাল চৌধুরী