ব্রেকফাস্টে প্রতিদিন মেটাতে হত বসের শখ! প্রতিবাদ করতেই চাকরি গেল মহিলা কর্মচারীর

China News: ব্রেকফাস্টে প্রতিদিন মেটাতে হত বসের শখ! প্রতিবাদ করতেই চাকরি গেল মহিলা কর্মচারীর

নয়াদিল্লি : সদ্য চাকরিতে যোগ দিয়েছিল এক মহিলা কর্মচারী৷ সুযোগ বুঝে দিনের পর দিন অত্যাচার চালাত বস৷ সেটাই আর মেনে নিতে পারেনি সে৷ ফলে চাকরি চলে গিয়েছিল তাঁর৷ পরে তীব্র তোপের মুখে পড়ে মেয়েটিকে চাকরি ফেরাতে বাধ্য হল সেই কোম্পানি৷

আরও পড়ুন : পেটে প্রচণ্ড যন্ত্রণা, ছুটি বাতিল করে দেয় ম্যানেজার, অফিসেই প্রাণ গেল মহিলার

ঘটনাটি চীনের এক এডুকেশনাল ফার্মের৷ সেখানে না কি রোজই মেয়েটিকে দিয়ে বিশেষ কাজ করাতে চাইতেন বস৷ মেয়েটির কাজের মধ্যে ছিল, বসের সকালের খাবারের ব্যবস্থা করে দেওয়া৷ সাউথ চায়না পোস্টে জানানো হয়েছে, মেয়েটির নাম লউ৷ তিনি চীনের একটি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপে গোটা বিষয়টি খোলসা করেন৷ তিনি জানান, কোম্পানির সুপারভাইসার লিউ কীভাবে দিনের পর দিন অত্যাচার করেছে তাঁর উপর৷

আরও পড়ুন : ১২ স্ত্রী, ১০২ সন্তান নিয়ে বিশাল পরিবার বৃদ্ধের! জেলা ঘোষণা করার দাবী নেটিজনদের

ঠিক কী জানিয়েছেন সেই মহিলা? এটাই যে, অফিসে ঢুকলেই তাঁকে বসের জন্য হট আমেরিকানো এবং ডিমের ব্যবস্থা করে রাখতে হত৷ শুধু তাই নয়৷ বসের জলের গ্লাস যেন সবসময় ভর্তি থাকে সেটাও খেয়াল রাখতে হত লউকে৷

সেই পোস্টে চীনের মেয়েটি জানিয়েছেন, অফিসে জয়েন করার পর থেকেই বস তাঁর উপর অত্যাচার শুরু করেছিল৷ তিনি লিখেছেন, “আমি ওখানে বসের সহকারী হিসাবে জয়েন করিনি৷ কিন্তু সেই কাজ গুলোই আমায় দিয়ে দিনের পর দিন করানো হত৷ রোজ বস সকালে এসে কী খাবেন তার ব্যবস্থা করে রাখতে হত আমাকে৷”

লিউ অবশ্য প্রথমেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পুরো ব্যাপারটি জানাননি৷ তিনি অফিসের এক গ্রুপে পুরো ব্যাপারটি জানিয়েছিলেন৷ সেখানে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়৷ তার পর কোনও মাইনে ছাড়াই চাকরি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়৷ ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তা ভাইরাল হয়ে যায়৷ নেটিজেনরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন৷ এমনকি গোটা ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আবেদন করা হতে থাকে৷ এতেই প্রবল চাপে পড়ে যায় সেই কোম্পানি৷

বদনাম বাড়তে থাকলে এরপর নড়েচড়ে বসে চীনের কোম্পানিটি৷ তাদের তরফ থেকে জানানো হয়, মেয়েটিকে তাঁর চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ শেষ নয়, তদন্ত করে তারা জানতে পেরেছে সেই সুপারভাইজার সমস্ত ঘটনার জন্য দায়ী৷ তাই তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে দেওয়া হয়েছে৷

তবে মেয়েটি চাকরি ছাড়ার আগে পর্যন্ত যে কদিন কাজ করেছিলেন, সেই কদিনের কমপেনশেসনের টাকা আদৌ পাবেন কি না সেটা নিয়েও তৈরি হয়েছে প্রশ্ন৷ ওই কোম্পানির এইচআর ড্যাফেং নিউজকে জানিয়েছেন, “মেয়েটিকে যেভাবে তাঁর সুপারভাইজার তাড়িয়ে দিয়েছিল, সেটা কোম্পানির পলিসির সঙ্গে যায় না৷ পুরো সিদ্ধান্তই ছিল ওই বসের ব্যক্তিগত ব্যাপার৷ মেয়েটি চাকরিতে জয়েন করলেও প্রশ্ন থাকবে৷ এটাই যে, ও ওর কমপেনসেশনের টাকা আদৌ আর পাবে কি না৷”

অফিসের বিষাক্ত পরিবেশ, এবং তার জেরে চাকরি ছেড়ে দেওয়া৷ এমন ঘটনা এই প্রথম তাও নয়৷ বছরের শুরুতেই এমন একটি বিষয় সামনে চলে এসেছিল৷ এইচএসবিসি-এর এক মহিলা কোম্পানি সেবার সোশ্যাল মিডিয়ায় অফিস কালচার নিয়ে মুখ খুলেছিলেন৷ তিনি বলেছিলেন, অফিসের পরিবেশ নিয়ে একাধিকবার অভিযোগ জানানোর পরও সংস্থা সেগুলিকে গুরুত্ব দেয়নি৷

ঘটনাটি ঘটেছে এই দেশে৷ জনপ্রিয় ওয়েবসাইল লিঙ্কডইনে মেয়েটি লিখেছিলেন, “অফিসের কাজের পরিবেশ নিয়ে কথা বলায় সবাই আমাকে নিয়ে মজা করেছে৷ একজন বলেছে, এমন থাপ্পড় মারব যে বিহার পৌঁছে যাবে৷ ব্যাপারটা ম্যানেজারকে গিয়ে জানিয়েছিলাম৷ তিনি পুরো বিষয়টাকে পাত্তা দেননি৷”