মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

Mamata Banerjee: ‘এত সস্তা! উত্তরবঙ্গকে ভাগ করে দেবে? আসুন না একবার!’ বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ মমতার!

কলকাতা: নীতি আয়োগে তাঁকে বলতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। রাজ্যের সমস্যার কথা বলা না হওয়ায় ক্ষুব্ধ ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সপ্তাহের প্রথম দিনে বিধানসভা অধিবেশনে গিয়ে সরব হলেন তিনি। তিস্তার জলসমস্যা থেকে শুরু করে বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে খোলা চ্যালেঞ্জ শোনা গেল তাঁর কন্ঠে।
মমতা বলেন, “হড়পা বান আর ভারী বৃষ্টির কারণে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ভেসে যায়। কেন্দ্রর কাছে তথ্য যায়। তারা আমাদের জানায় না। ভুটান থেকে হঠাৎ জল ছেড়ে দেওয়ায় বনভূমি, চা বাগান,কৃষি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বন্যার জন্য আসাম, বিহার সবাই টাকা পেয়েছে। একমাত্র বাংলা টাকা পায়নি। স্যালুট টু বিজেপি সরকার। এই বৈষম্য, বঞ্চনার জন্য।”

এর পরই মমতা তোলেন ইন্দো-ভুটান রিভার কমিশনের প্রসঙ্গ। এই প্রস্তাব কিছুদিন আগেই দিয়েছিলেন তিনি। এবার বিধানসভায় বললেন, ” ইন্দো-ভুটান রিভার কমিশন গঠন করতে হবে। নজরদারি করতে হবে। রেন গেজের তথ্য চারের বদলে ৪৯ করা উচিত। সময় সময়ে রাজ্যকে তথ্য দেওয়া উচিত। মনে রাখবেন বাংলাকে না জানিয়ে তিস্তা ও ফারাক্কার জলবন্টন নিয়ে কেন্দ্র আলোচনা করেছে। এর আগে ছিটমহল, রেল চালুর সময় স্টেক হোল্ডার হিসাবে আলোচনা হয়েছিল। আমি এটা নীতি আয়োগের বৈঠকে বলব ভেবেছিলাম।” ক্ষোভ উগরে মমতা বলেন, “ফারাক্কা নিয়ে কেন্দ্রের টিম পাঠাবে। তাতে বাংলার বোধহয় এক জনকে রেখেছে তাতে কি হবে?”

মমতার মতে, তিস্তায় জল নেই। সিকিমে একের পর এক বাঁধ। কই তখন তো আলোচনা হয়নি! ১৪টা হাইডেল পাওয়ার প্রজেক্ট নিয়ে তো প্রতিবাদ হয়নি! জলের গতি কমে গিয়েছে। তাঁর কথায়, “কই গাছ কাটার সময়ে তো কিছু বলোনি। তিস্তার জল দিলে আমাদের মানুষ খাবার জল পাবে না। তিস্তার জল দেওয়া অসম্ভব। উত্তরবঙ্গের মানুষের স্বার্থে। এত সস্তা উত্তরবঙ্গকে ভাগ করে দেবে? আসুন না একবার ভাগ করতে?”

এর পরই মুখ্যমন্ত্রী জানান, তিস্তার জল যে দিতে পারছেন না সেটা বাংলার মানুষের স্বার্থেই। তাঁদের প্রয়োজন আগে মিটবে, তার পর প্রতিবেশী দেশ। এতে যে বাংলাদেশকে উপেক্ষা করছেন মমতা, এমনটা নয়। নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ। যা পেরেছি তা দিয়েছি। কিন্তু যা পারব না তাতে কথা বলব না। আমরা যাদের ভোটে জিতেছি। যার ভোট পাই বা না পাই। আমি বাংলার মানুষের কাছে দায়বদ্ধ। স্বার্থপর আচরণ করতে পারব না।”

মমতা তুলে ধরেন রাজ্যের বর্ষাকালীন পরিস্থিতির কথা। তাঁর আশঙ্কা, মাণিকচক ব্লকে ভাঙনের কারণে ১৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক যা উত্তর ও দক্ষিণের সংযোগকারী তা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। মমতার কথায়, “ফারাক্কা চুপ করে বসে আছে যেন চোখ নেই কান নেই নিধিরাম সর্দার।
ফারাক্কা ব্যারেজ এলাকার পাড় রক্ষণাবেক্ষণ যেন কাজ করে। আগের চুক্তি অনুযায়ী ১২০ কিমি যেন করে। আমরা আমাদের সীমিত ক্ষমতায় কাজ করেছি। টাকা দিয়েছি। গতবার ১০০ কোটি দিয়েছি। আগে এই কাজ করুক তারপর ফারাক্কা ব্যারেজ নিয়ে চুক্তির কথা বলবে।আমি বাংলায় ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে চেক ড্যাম করেছি। প্রায় ৫ লক্ষ পুকুর খনন করেছি। এরপর বিজ্ঞানসম্মত ভাবে কাজ হওয়ায় বন্যার জল অনেক রোধ করা সম্ভব হয়েছে।”

আরও পড়ুন-গেট ভাঙা ছিল, তাতেই জল ঢোকে কোচিং সেন্টারে! মালিক সহ গ্রেফতার ৭

মমতার মতে, ডিভিসির বন্যাটা হল ম্যান মেড বন্যা। তিনি বললেন, “কোনওভাবে যদি ড্রেজিংটা সঠিক সময়ে করত। স্টোরেজ ক্ষমতা বাড়ালে একাধিক জেলায় বন্যার প্রবণতা কমবে। মাইথন ও পাঞ্চেত বাঁধে ড্রেজিং করতে হবে। আমি শুনছি ডিভিসি বেসরকারীকরণ হচ্ছে। রেল থেকে ডিভিসি সব বেসরকারিকরণ করছে। দেশটাকেও না বেসরকারিকরণ করে দেয়। চিন্তা হয় আমাদের। “