জলপাইগুড়ি: পাহাড় এবং সমতলে অবিরাম ভারী বৃষ্টির জেরে ফুঁসছে তিস্তা নদী। বেশ কিছু জায়গা প্লাবন পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। তিস্তার জল ঢুকে প্লাবিত মালবাজার মহকুমার টোটগাঁও গ্রাম। তিস্তা নদী ধীরে ধীরে গ্রাস করছে এই গ্রামকে। বৃষ্টি যত বাড়ছে আতঙ্কে রাতের ঘুম উড়েছে এখানকার বাসিন্দাদের।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তিস্তার জল ঢুকে এই এলাকার প্রায় ৫০-এর বেশি বাড়ি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। তিস্তার হড়পা বানে নদী তীরবর্তী বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরিস্থিতি এমন যে কোথায় রাস্তা আর কোথায় কৃষি জমি দেখে বোঝার উপায় নেই। গ্রামে ঢোকার রাস্তা থেকে শুরু করে সমস্ত কিছুই জলমগ্ন। নষ্ট হয়েছে জমির ফসল।
আরও পড়ুন: বাঁধের জন্য জমি দিলেও ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত দক্ষিণ কনকদিঘির মানুষ
প্রতিবছর বর্ষা এলেই এই এলাকার বাসিন্দাদের ভোগান্তি বাড়ে। তবে এই বছর পরিস্থিতি যেন আরও বেশি খারাপ। আগে যেদিক দিয়ে তিস্তা নদী বয়ে যেত সেখান থেকে ক্রমশ আগ্রাসী হয়ে গ্রামের দিকে এগিয়ে আসছে। বর্ষার শুরু থেকেই এই এলাকা প্লাবিত হয়ে গেছে। তিস্তার ভয়াল রূপ দেখে আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা। নিজেদের সম্বলটুকু নিয়ে বর্তমানে আশ্রয় নিয়েছে ত্রান শিবিরে। গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে টোটগাঁও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ত্রাণ শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে নিজেদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, গবাদি পশু সহ প্রায় সবকিছু নিয়েই আশ্রয় নিয়েছে বহু পরিবার।
ঘরে উনুন জ্বালানোর পরিস্থিতি নেই, তাই ত্রাণ শিবিরের খাবার খেয়ে খিদে মেটাচ্ছেন সকলে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বহুবার প্রশাসনকে জানানো সত্ত্বেও এই এলাকায় বাঁধ নির্মাণ করেনি। বাঁধ থাকলে আজ এই পরিস্থিতি হত না। বর্তমানে নদী যেভাবে গ্রামের দিকে এগিয়ে আসছে ভবিষ্যতে এর থেকেও আরও বেশি ভয়ঙ্কর পরিণতি হতে পারে। সমগ্র গ্রামটাই চলে যেতে পারে তিস্তার গর্ভে, এমনটাই আশঙ্কা গ্রামবাসীদের। সকলে চাইছেন এই বিপদ থেকে স্থায়ীভাবে রক্ষা পেতে এলাকায় বাঁধ নির্মাণ করুক প্রশাসন।
সুরজিৎ দে