কলকাতা: ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ ভয়ঙ্কর রূপে এ রাজ্যে আছড়ে না পড়লেও, ব্যাপক প্রভাব তো পড়েইছে। পশ্চিমবঙ্গের উপকূলের দুই জেলা পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন প্রান্তে লন্ডভন্ড পরিস্থিতি। গোটা রাত জেগে নবান্নে পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভিন্ন জেলার জেলাশাসকদের সঙ্গে সকালে দীর্ঘক্ষণ বৈঠকও করেন তিনি। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ-সহ রাজ্যের বিভিন্ন দফতরের সচিবরা। সেই বৈঠক সূত্রেই জানা গিয়েছে, ‘দানা’-র হামলায় রাজ্যে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে বাড়িতেই কাজ করার সময় তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। প্রয়োজনে তাঁর পরিবারকে আর্থিক সাহায্য করার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই ব্যক্তি পাথরপ্রতিমার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। ফলে প্রবল রূপ না নিলেও দানা-র কারণে মৃত্যু আটকানো গেল না রাজ্যে।
রাজ্যের মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতেই ঘূর্ণিঝড়ের সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে। ‘দানা’র হানায় রাজ্যে মৃত্যু, ভেঙেছে বাড়ি-ঘর, ফাটল বাঁধে। ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র গতিবিধি নজরে রাখতে রাতভর নবান্নে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার দুপুরেও তিনি সেখানেই রয়েছেন। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল থেকে একাধিক বার নিজের ১৪ তলার দফতর থেকে কন্ট্রোল রুমে নেমে এসে দুর্যোগ-পরিস্থিতির খোঁজখবর নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পর ফের নিজের দফতরে ফিরে জেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর দীর্ঘ বৈঠক করেন প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে।
আরও পড়ুন: দানার প্রলয়ে কী এমন ঘটল নিউ দিঘায়! নেমে পড়ল নৌসেনা, ৭১ কিলোমিটার সমুদ্রতটে কী ঘটে গেল?
ডিভিসির জলাধার থেকে জল ছাড়ছে কিনা তা নিয়েও মুখ্য সচিবের থেকে খোঁজ নেন মুখ্যমন্ত্রী। দুর্যোগ পরিস্থিতি নিয়ে রিপোর্ট নেওয়ার পর ফের দুপুর একটা নাগাদ দুর্যোগপূর্ণ ৭ জেলার জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী। বিভিন্ন জেলাগুলিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে পর্যালোচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, ঘূর্ণিঝড়ের ব্যাপকতা নিয়ে আশঙ্কা করা হয়েছিল আগেই। সেই মতো জোর প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছিল। তবে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির মধ্যে দানার জেরে ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই বেশি হল পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়। এখনও পর্যন্ত ৭১টি বিদ্যুতের খুঁটি পড়েছে। বিভিন্ন জায়গায় ২৫০-এর ও বেশি গাছ পড়ে গিয়েছে।