ইছামতী নদীর নাম ইছামতী হল কেন জানেন! 

Ichhamati River: সুন্দরী এই নদীর উল্লেখ বিভূতিভূষণের উপন্যাসেও, সীমান্তের এই নদীর নাম ইছামতী হল কেন জানেন কি!

বসিরহাট:  বড় সুন্দরী সেই নদী। নাম, ইছামতী! সীমান্তের এই নদী দেখতে সারা বাংলা থেকে লোকে ছুটে যান বসিরহাটে। কিন্তু কেন এমন নামকরণ হল নদীর? অনেকেই জানেন না।

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবাহিত এই নদী। কথাসাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ইছামতী’ উপন্যাসে উল্লেখ আছে এই নদীর। ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত অর্ন্তসীমানায় অবস্থিত নদীটির উৎপত্তি হয়েছে মাথাভাঙা থেকে, যা কিনা বাংলাদেশের প্রধান নদী পদ্মার ডান তীরের একটি শাখা নদী। মাথাভাঙা নদীটি পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার মাজদিয়া নামক স্থানে বিভক্ত হয়ে যায়। একটি চূর্ণী, অপরটি ইছামতি নামধারণ করে নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে। বাংলাদেশের দিনাজপুরে ও পাবনা থেকে পশ্চিম ঢাকা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ দুই নদীর নামও ইছামতি। অনেকে মনে করেন, নদী দু’টোই আগে একসময় রাজ্যের ইছামতি নদীর সঙ্গেই যুক্ত ছিল যা পরে ভৌগলিক কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

আরও পড়ুন: কাঁটাতার পেরিয়ে এসে ভোটদান, বাংলার এই গ্রামের বাসিন্দাদের জন্য কড়া নিরাপত্তা

ইছামতি নদীটিকে বর্তমান নদী গবেষকগণ তিন ভাগে ভাগ করেন। উচ্চ ইছামতি, মধ্য ইছামতি এবং নিম্ন ইছামতি। উচ্চ ইছামতি নদীটি পদ্মা নদীর একটি শাখা নদী। মাথাভাঙা নদী থেকে প্রবাহিত হয় এবং বেনাপোল পর্যন্ত প্রবাহিত হয়। মধ্য ইছামতি নদী বেনাপোল থেকে দেবহাটা পর্যন্ত প্রবাহিত হয়। নিম্ন ইছামতি নদী পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন এবং বাংলাদেশের সুন্দরবনের বুড়ি গোয়ালিনী রেঞ্জ পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে রায়মঙ্গল নদীতে গিয়ে মেশে।

নদীটির উৎস থেকে দেবহাটার পশ্চিম পর্যন্ত মোট দৈর্ঘ্য ২০৮ কিমি। প্রবাহ থেকে শেষ অংশ উত্তর ২৪ পরগণা জেলা‎র হাসনাবাদের কাছে এবং সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটার কাছে কালিন্দী নদীর সঙ্গে যুক্ত হয় একসময়ের পশ্চিম ঢাকার প্রধান নদী এবং দিনাজপুরের ইছামতি। ১৭৬৪-৬৬ সালের মানচিত্র অনুসারে শেষোক্ত নদী দু’টি একীভূত হতে দেখা যায়।

আদিকাল থেকে বারবার এই নদী যেন ইচ্ছেমতো গতি পরিবর্তন করেছে। খুব সম্ভবত এই কারণেই এই নদীর নাম ইছামতি বলে মনে করেন অনেকেই। ভারত বাংলাদেশের বহু মানুষ ইছামতি নদীকে কেন্দ্র করেই তাদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করে।

জুলফিকার মোল্যা