'ডাক্তারবাবু মিথ্যা কথা বলছেন!' সন্তান হারিয়ে ফের RG kar নিয়ে বিস্ফোরক কোন্নগরের সেই মা

Konnagar Youth Death Controversy: ‘ডাক্তারবাবু মিথ্যা কথা বলছেন!’ সন্তান হারিয়ে ফের RG kar নিয়ে বিস্ফোরক কোন্নগরের সেই মা

কলকাতা: ছেলের মৃত্যুর পর ৪দিন কেটে গিয়েছে। বুকভরা ক্ষোভ নিয়ে বিচারের আশায় দিন কাটছে মা কবিতা ভট্টাচার্যের। ডাক্তারবাবু মিথ্যা কথা বলছেন! আর এখন তাঁকেও মিথ্যাবাদী প্রমাণ করার চেষ্টা হচ্ছে। বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে ছেলের, তার বিচার কে দেবে? প্রশ্ন তুললেন কোণ্নগরের বিক্রম ভট্টাচার্যের মা কবিতা।

শুক্রবার হুগলির কোন্নগরের যুবক পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন। শ্রীরামপুর হাসপাতাল থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় আরজি করে। মৃতের মায়ের অভিযোগ, জরুরি বিভাগ থেকে বর্হিবিভাগ দৌড়ে বেড়িয়েও ছেলের চিকিৎসার বন্দোবস্ত করতে পারেননি। শেষে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে বিক্রম মারা যান বলে দাবি পরিবারের। আরজি কর-কাণ্ডে বিচারের দাবিতে যখন দৈনিক নাগরিক আন্দোলন চলছে, তখন ছেলের মৃত্যুর বিচার চেয়েছেন মা কবিতা।

আরও পড়ুন-‘স্বর নামিয়ে কথা বলুন!’ কৌস্তভকে তিরস্কার বিচারপতির! শুনানির সময় চিৎকার করে বিপাকে বিজেপি নেতা

জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে প্রথম দিন থেকেই ডাক্তারদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিচারের দাবি জানিয়েছিলেন বিক্রমের মা। বিক্রমের মৃত্যুর পর সেই ঘটনা উল্লেখ করে ডাক্তারদের কাজে ফেরার আবেদন জানিয়ে টুইট করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক যে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে টুইট করেছিলেন সেই অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এমনকি বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর ঘটনাকেও অস্বীকার করেছেন চিকিৎসকরা।

আরও পড়ুন- ‘এক মাস হয়ে গেল, এবার উৎসবে ফিরুন, পুজোয় ফিরুন’, জনগণের কাছে আর্জি মমতার

এই কথা সংবাদ মাধ্যমে জানতে পেরে, বিক্রমের মায়ের দাবি, চিকিৎসকরা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা বলছেন। এ দিন বিক্রমের মা বিনা চিকিৎসায় নিজের ছেলের মৃত্যুর বিচার চেয়ে বলেন, “ডাক্তারবাবুরা যদি বলেন যে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়নি তাহলে তাঁরা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা বলছেন। আহত ছেলেকে নিয়ে আরজি কর হাসপাতালে যাঁরা ছিলেন তাঁদের বার বার অনুরোধ করেছিলেন যে ডাক্তার কোথায়? কিন্তু কেউ কিছুই জানায়নি। আমি আমার ছেলেকে নিয়ে প্রায় তিন ঘন্টা নিয়ে ছোটাছুটি করেছি কিন্তু কোথাও ডাক্তার ছিল না। এমনকি ট্রমা কেয়ার থেকে আউটডোরে ছিল না কোনও ডাক্তার।”

এর পরই কবিতা বলেন, “তাঁরা ট্রিন্টমেন্ট করেননি আর আমি আমার ছেলেকে হারিয়েছি আর এখন আমাকেও মিথ্যাবাদী বানাচ্ছেন!” গরিব মানুষরা সরকারি হাসপাতালে যায়। আমিও সেই আশা নিয়ে গিয়েছিলাম। আরজি কর হাসপাতালে আমার ছেলেটা ট্রিটমেন্ট পাবে, সুস্থ হবে। কিন্তু আমার সেই আশা পূর্ণ হয়নি। আমার ছেলেটা ওখানে ট্রিটমেন্ট পায়নি আর বাঁচতেও পারল না। আমি শুধু হাসপাতালে একবার এদিক একবার ওদিক ছুটে বেড়ালাম। একটা মায়া লাগল না ডাক্তারবাবুদের?”

কবিতার দাবি, যাঁদের মায়ামমতা নেই তাঁরা কেমন ডাক্তার? অন্য রোগীর পরিজনদের মায়া লাগছে, তাঁরা বলছেন, “ছেলেটা সাদা হয়ে যাচ্ছে… কিন্তু ডাক্তারবাবুদের একটু মায়া হল না!”

ইতিমধ্যেই বিক্রমের বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর ঘটনায় বিচার চেয়ে রবিবার রাতে দাবি উঠেছে ” জাস্টিস ফর কোন্নগর “। রবিবার রাতে নাগরিক সমাজের ডাকে কয়েক হাজার মানুষ প্রথমে মোমবাতি জ্বালিয়ে ও ফোনের ফ্ল্যাশ জেলে মানব বন্ধন করে বিক্রমের বিচার চেয়ে পথে নাবে। এর পর আবার রাতে কয়েক হাজার মানুষ বিক্রমের মৃত্যুর বিচার চেয়ে মশাল মিছিল করে। সেই মিছিলে ছেলের মৃত্যুর বিচার চেয়ে রাতে রাস্তায় ছিলেন সন্তানহারা কবিতাও।

-রানা কর্মকার