মালদহ: এ যেন সাক্ষাৎ দশভূজা! বন্যায় বিধ্বস্ত গোটা ভুতনি। বন্যার জলকে উপেক্ষা করেই কখনও নিজেরাই ছোট ডিঙি ঠেলে, আবার কখনও সাইকেল নিয়ে জলকাদা রাস্তার উপর দিয়ে ছুটছেন এই দুই নারী। নিয়মিত পৌঁছে যাচ্ছেন এলাকার প্রসূতি মা থেকে শিশুদের কাজে। নিজের হাতে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে, শারিরীক অবস্থার খোঁজখবর নিচ্ছেন। তারপর সেই তথ্য সঠিক সময়ে পৌঁছে দিচ্ছেন ব্লক স্বাস্থ্য দফতরে। ভুতনির দুই আশা কর্মী ইন্দু রবিদাস ও সুমিত্রা রাণী মন্ডলের এমন কাজে প্রশংসা করছেন নেট দুনিয়া।
আরও পড়ুন- কোন বাঙালি খাবার খেয়ে নিটোল যৌবন ধরে রাখেন জাপানিরা? জানেন সেই সিক্রেট?
ইতিমধ্যেই দুই নারীর সংগ্রামের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সমাজ মাধ্যমে। এলাকায় তাঁরাই ‘দেবী দুর্গা’ এখন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বাস্থ্য পরিসেবা দিচ্ছেন প্লাবিত এলাকায়। আশা কর্মী হিন্দু রবিদাস বলেন, “মূলত প্রসূতি ও শিশুদের আমরা নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছি নজরদারি রাখছি। ওদের থেকে আমাদের কষ্ট বেশি। বন্যার জল চারিদিকে। তার মধ্য দিয়ে আমাদের যেতে হচ্ছে। আমরা না গেলে তারা পরিষেবা পাবে না।”
মালদহের মানিকচক ব্লকের তিনটি পঞ্চায়েত গঙ্গার জলে প্লাবিত। কোথাও এক কোমর জল। আবার কোথাও এক মানুষ। এলাকার প্রায় প্রতি ঘরে ঢুকেছে জল। এমন অবস্থায় যৎসামান্য মাসিক বেতনভুক্ত আশাকর্মীরা তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করে চলেছেন। কখনো ডিঙি নৌকা নিয়ে। আবার কখনও বালির বস্তা দিয়ে তৈরী রাস্তার উপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরিষেবা দিতে পৌঁছে যাচ্ছেন বাড়িতে বাড়িতে। আশা কর্মী সুমিত্রা রানী মন্ডল বলেন, “আমাদের নিজের নৌকা নেই। অন্যের নৌকা ডিঙি নিয়ে আমরা যাতায়াত করছি। সকলের খোঁজ খবর নিয়ে আমাদেরকে স্বাস্থ্য দফতরে পাঠাতে হচ্ছে।” প্রসূতি ও শিশু ছাড়াও এলাকাবাসীর স্বাস্থ্যের খোঁজ খবর নিচ্ছেন। রিপোর্ট দিচ্ছেন ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
হরষিত সিংহ