নদিয়া: পুজোর বাকি আর মাত্র ৯৮ দিন। পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে বাংলাজুড়ে। পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার রানাঘাট কামালপুর এলাকায় তৈরি হচ্ছে সবচেয়ে উচ্চতম ফাইবারের দুর্গা প্রতিমা।
তিন মাস আগে থেকে শুরু হয়েছে কাজ। ইতিমধ্যেই তাদের দুর্গা প্রতিমার প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। এরপরই শুরু হবে ফাইবার দিয়ে কাজ । জানা যায় তাদের শুধু প্রতিমার উচ্চতা ১১১ ফুট, ঠাকুরের সম্পূর্ণ রূপদান করলে কিছুটা হলেও বাড়বে বলে জানান মৃৎ শিল্পীরা। এলাকারই প্রায় দুই বিঘা জমির উপর বাঁশের প্যান্ডেল তৈরি করে, সুদক্ষ মৃৎশিল্পী দিয়ে প্রায় ১০ জন শিল্পীর ছোঁয়ায় তৈরি হতে চলেছে বাংলার সবচেয়ে উচ্চতম প্রতিমা।
সূত্রের খবর, এর আগে কলকাতায় তৈরি হয়েছিল সব থেকে বড় দুর্গা , যার উচ্চতা ছিল ৮৮ ফুট। এবার কলকাতাকে টেক্কা দিয়ে নদিয়ায় হতে চলেছে ১১১ ফুটের দুর্গা প্রতিমা। কলকাতায় বড় দুর্গা প্রতিমা তৈরি করলেও মানুষ তা দেখতে পারেনি। ভিড়ের চাপে তা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় উদ্যোক্তারা । রানাঘাটের পুজো উদ্যোক্তারা বলেন আমাদের এখানে সবাই যেন দুর্গা প্রতিমা দেখতে পারেন ,তার জন্য বিরাট আকারে জায়গা ফাঁকা রেখে পুজোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
উত্তর ২৪ পরগনা: জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কায় বর্ষার বৃষ্টি এখন আর বর্ষাকালে ততটা হচ্ছে না। বরং শরৎকাল আগের থেকে অনেক বেশি বৃষ্টিস্নাত হয়ে উঠেছে। এদিকে এই বছর অক্টোবর মাসের প্রথম দিকেই পড়েছে দুর্গাপুজো। তাছাড়া এবার এমনিতেই দেরিতে বর্ষা প্রবেশ করেছে দক্ষিণবঙ্গে। ফলে বর্ষা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই। এই পরিস্থিতিতে দুর্গাপুজোর আগে বেশি বৃষ্টি হলে প্রতিমা সময়ে তৈরিতে সমস্যা হতে পারে। তাই চলতি বছর অগ্রিম প্রতিমা তৈরিতে হাত দিয়েছেন সুন্দরবনের মৃৎশিল্পীরা।
বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। আর মাত্র তিন মাস সময় রয়েছে হাতে। তার মধ্যেই আবহাওয়া দফতর পূর্বাভাস দিয়েছে এবার বর্ষাকাল একটু দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। তা শুনেই সুন্দরবনের মৃৎশিল্পীরা এখন থেকেই দুর্গা প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। উল্লেখ্য গত বছর টানা বৃষ্টিতে প্রতিমা তৈরি করতে চরম সমস্যায় পড়েছিলেন প্রতিমা শিল্পীরা। প্রতিমা তৈরি থেকে রৌদে শুকানো, একাধিক কাজে বারে বারে ব্যাঘাত ঘটেছিল। তা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার আগেভাগে নেমে পড়েছেন তাঁরা।
সুন্দরবনের প্রতিমা শিল্পীরা জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে এঁটেল মাটি দিয়ে স্ট্রাকচার বানিয়ে মাটি লাগানোর কাজ চলছে। এসময় তেমন কোনও অর্ডার না এলেও ভবিষ্যতে অর্ডার এলে যাতে সময়ে প্রতিমা ডেলিভারি করা যায় তার জন্যই আগেভাগে কাজ এগিয়ে রাখা হচ্ছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এই কাজ আরও জোরকদমে হবে বলে তাঁরা জানান।
উত্তর দিনাজপুর: আপামর বাঙালি তাকিয়ে থাকে বড় উৎসব দুর্গ পুজোর দিকে। সচরাচর আমরা প্রতিবছর দেখে থাকি রথের দিন কাটামো পুজো করে দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি শুরু করে দেন মৃৎ শিল্পীরা। কিন্তু ভিন্ন এক ছবি ধরা পরল উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ বালুরঘাট রাজ্য সড়কের ধারে মেরুয়াল বিএসএফ ক্যাম্পে একটি পালপাড়াতে। চরম ব্যস্ততা এখানকার মৃৎশিল্পীদের।
একদিকে বৃষ্টি অন্যদিকে মেঘলা আবহাওয়া সবকিছু উপেক্ষা করেই জোড় কদমে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। একটি বা দুটি নয়, ইতিমধ্যে আটটি দুর্গা প্রতিমা তৈরি করে সম্পূর্ণ করে ফেলেছেন কাজ। মৃৎ শিল্পী অদ্বৈত পাল জানান,নতুন বছর থেকেই আমাদের কাজ শুরু হয়ে যায়। প্রতিবছর ৩৫-৪০ টা অর্ডার আসে। আগে থেকে প্রস্তুতি না নিলে বেশি কাজ ধরা যায় না। তাই রথের আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়।
তবে এ কাজে এখন বাধ সেধেছে বৃষ্টি। আকাশে রোদের দেখা না থাকায় মাটির প্রলেপ শুকাতে সমস্যা হচ্ছে। কিছুদিন ধরেই দফায় দফায় বৃষ্টি হওয়ায় চিন্তায় পড়ছেন প্রতিমা শিল্পীরা। সঠিক সময় প্রতিমা তৈরীর কাজ শেষ করতে পারবে কিনা তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। কারণ গত কয়েক দিনের দফাই দফায় বৃষ্টিতে ব্যাহত হয়েছে কাজ। আরও খবর পড়তে ফলো করুন https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
*আর কয়েকদিন পরেই রথযাত্রা। কার্যত এই দিন থেকেই আমোদ প্রিয় বাঙালির উৎসবের মরশুম শুরু হয়ে যায়। রথযাত্রার দিনটি আরও অন্য একটি কারণে বিশেষ বাঙালির কাছে। কারণ এই দিন থেকেই বাঙালির আবেগের দুর্গাপুজোর ঢাকের প্রথম কাঠি পড়ে। এই দিনেই দুর্গা মূর্তির কাঠামোয় দেওয়া হয় প্রথম মাটি। প্রতিবেদনঃ নয়ন ঘোষ। সংগৃহীত ছবি।*দুর্গামূর্তি তৈরির কাজ শুরুর জন্য কেন এই দিনটিকেই বেছে নেওয়া হয়? কি বিশেষত্ব রয়েছে দিনটির? প্রবীণ প্রতিমা শিল্পী অনাথ পাল জানিয়েছেন, রথযাত্রার দিনটিকে বিশেষভাবে শুভ মনে করা হয়। মনে করা হয়, এই দিনে কোনও কাজ শুরু করলে, তা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায়। তাই এই দিনে দুর্গা পুজোর প্রথম কাজে হাত দেওয়া হয়। এই দিনে দুর্গা মূর্তির কাঠামোতে দেওয়া হয় মাটি। সংগৃহীত ছবি।*তিনি আরও জানিয়েছেন, রথযাত্রার দিনে দুর্গা মূর্তির কাঠামোতে মাটি দেওয়ার প্রথা বিশেষভাবে প্রচলিত রয়েছে প্রাচীন পুজোগুলির ক্ষেত্রে। জমিদার বাড়ির পুজো বা ঐতিহ্যবাহিবাড়ির পুজোগুলিতে এই নিয়ম এখনও মেনে চলা হয়। সংগৃহীত ছবি।*যে সমস্ত পুজোগুলির বয়স কয়েকশো বছর বা তার বেশি, সেই সমস্ত পুজোগুলিতে এখনও নিয়ম করে রথযাত্রার দিনে কাঠামোতে মাটি দেওয়া হয়। তারপর ধীরে ধীরে তৈরি হয় মূর্তি। সংগৃহীত ছবি।*প্রবীণ প্রতিমা শিল্পী জানিয়েছেন, দুর্গামূর্তির কাঠামোয় প্রথম মাটি দেওয়ার পাশাপাশি, এখন অনেকে এই দিন মণ্ডপের খুঁটিপুজো করেন। এ দিন থেকে বাঙালির পুজোর প্রস্তুতি অনেক জায়গায় শুরু হয়ে যায়। আর যে কারণে কুমোরটুলিগুলিতেও এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। কারণ দুর্গাপুজোর জন্য একাধিক অর্ডার থাকে। তাই সেই কাজ কিছুটা এগিয়ে রাখতে, অনেক আগে থেকেই তারা প্রস্তুতি শুরু করেন। সংগৃহীত ছবি।
বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ফের পুজো পুজো রব চারদিকে। আর মাত্র ১১০দিন বাকি উমার আগমনে। বাতাসে বইছে পুজোর গন্ধ। জলপাইগুড়িতে প্রস্তুতি শুরু এখন থেকেই।তবে একটু চিন্তার ভার তো আছেই মাথায়। কারণ, উত্তরে জাঁকিয়ে বসেছে বর্ষা। এই সময় মাটি শুকোতেও সময় লাগে। গত দু’ দিন জলপাইগুড়ির আবহাওয়া খানিক উন্নত হওয়ায় যতটা কাজ এগোনো সম্ভব তা এগিয়ে রাখছেন মৃৎশিল্পীরা।এখন এঁটেল মাটি, খড়-কুটো দিয়ে কাঠামো বানানোর কাজ শুরু হয়েছে। কাজ চলছে জোর কদমে । তবে কোনও অর্ডার মেলেনি বলেই আক্ষেপ করেন তাঁরা। আশা করা হচ্ছে বর্ষা কেটে গেলেই ক্লাবগুলিও দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করবে।তখন যাতে হিমশিম খেতে না হয় তার জন্যেই এখন থেকেই কোমর বেঁধে লেগে পড়েছেন মৃৎশিল্পীরা।আগামীতে অর্ডার পাওয়ার জন্যই কয়েকটি বড় আকৃতির দুর্গা প্রতিমা গড়ার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করেছেন অনেকেই। সব মিলিয়ে পাল পাড়ার বাসিন্দাদের ব্যস্ততা এখন তুঙ্গে।
: এক বছরে তিনবার হবে দুর্গাপুজো? এও কী সম্ভব! এই বিরল ঘটনাই এবার হবে ১৪৩১ বঙ্গাব্দে৷ বাংলার নতুন বছর তিনবার দুর্গাপুজো চাক্ষুষ করাবেবাঙালিকে। বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বাংলার ৪ বৈশাখ।পুরানো বছরকে পিছনে ফেলে অনেক আসা আকাঙ্খা নিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানাই বাঙালি। তবে বাঙালির নতুন বছরে সব থেকে আনন্দের দিন হয়ে উঠল দুর্গোৎসবে। Photo – Representativeপ্রসঙ্গত নতুন বছরে পঞ্জিকা মতে ১৪৩১ বঙ্গাব্দে বাঙালির সবচেয়ে প্রিয় উৎসব বড় উৎসব দুর্গোৎসব পড়েছে বছরে তিনবার। তবে এমনিতেই বছরে দু’বার দুর্গোৎসব হয়ে থাকে। একবার হয় শরৎকালে, যা শ্রী রামচন্দ্র অকালবোধন পুজো নামে পরিচিত বা শারদীয়া বলেও বহুল পরিচিত। অপর দুর্গা পুজোটি হল বসন্ত কালে যা প্রকৃত দুর্গাপুজোর সময় বলে মনে হয়। Photo – Representativeনতুন বছরে এই বাসন্তী পুজোর তিথি বছরে দু’বার পড়েছে অর্থাৎ এক বছরে দেবী দুর্গার আরাধনা হবে তিনবার। পয়লা বৈশাখ থেকে শুরু হয়েছে বাসন্তী পুজো। চলতি বছরে বাসন্তী পুজোর অষ্টমী তিথিতে হবে অন্নপূর্ণার পুজো। বুধবার নবমী এবং বৃহস্পতিবার দশমী এবং চৈত্র নবমীর রাত্রির অবসান দেশজুড়ে এদিন পালিত হবে রামনবমী। Photo – Representative১৪৩১ পড়ার পর বাসন্তী পূজোর তিথি পড়লকিন্তু যা আদতে ১৪৩০ বঙ্গাব্দে হওয়ার কথা। মল মাস পড়ে যাওয়ার কারণে বাসন্তী পুজোর তিথি পিছিয়ে যায় প্রায় একমাস এর কাছাকাছি।সেই কারণে বাসন্তী পুজোর তিথি ১৪৩০ ছাড়িয়ে পড়েছে ১৪৩১-এ।অর্থাৎ সবমিলিয়ে ১৪৩১ এর শুরুতেই বাঙালি মেতে উঠেছে বসন্তকালের দুর্গোৎসব বা বাসন্তী পুজাতে। Photo – Representativeএরপর আবারও নিয়ম করে শরৎকালে শারদীয়া উৎসব হবে।এই বছর শারদ উৎসব শুরু হচ্ছে ২৩আশ্বিন অর্থাৎ ইংরেজি ১০অক্টোবর। Photo – Representativeএরপর আবার বসন্তকালের দূর্গা পুজোর তিথি পড়ছে ৪এপ্রিল। ১৪৩১ বঙ্গাব্দে দুর্গা পুজোহবে মোট তিনবার। Photo – Representativeবছরে তিনবার দুর্গাপূজো হলেও বাঙালিরা মেতে ওঠেন শরৎকালীন দুর্গাপুজোতে।এবার সেই দুর্গাপুজোর তিথি পড়েছে চার দিনের জায়গায় তিন দিন।এই নিয়ে বাঙালির মনে একটু অসন্তোষ রয়ে গিয়েছে। পঞ্জিকা বলছে, ১৪৩১ বঙ্গাব্দে শারদীয়া দুর্গোৎসব শুরু হচ্ছে ২৩শআশ্বিন অর্থাৎ ইংরেজি ১০অক্টোবর। ২৩ আশ্বিন পড়েছে সপ্তমী,এদিন খুব সকালেই সপ্তমী তিথি শেষ হয়ে অষ্টমী পড়ে যাচ্ছে। হিন্দু ধর্ম মত অনুযায়ী তিথি শেষ ধরে পুজো করার রীতি রয়েছে।সেই হিসেবে পরের দিন অর্থাৎ ২৪ আশ্বিন বা ১১ অক্টোবর ধরা হচ্ছে অষ্টমী, সেদিন সকাল ৬ টার মধ্যেই অষ্টমী পুজো শেষ হচ্ছে। সকাল ৬:২৪ মিনিট থেকে শুরু হচ্ছে সন্ধি পুজোর ক্ষণ।সেটি শেষ হচ্ছে সকাল ৭:১২ মিনিটে। আবার পরদিন পঁচিশে আশ্বিন বা ১২ অক্টোবর নবমী ও দশমী তিথি পড়েছে একই সঙ্গে।দুই পুজো সম্পন্ন হবে একদিনেই। তবে বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত মতে শারদীয়া চার দিনের পুজো,তাই সেটি চার দিনেই হবে।সেক্ষেত্রে অষ্টমীর সন্ধি পুজো করা হবে সকাল ৬:২৪ মিনিটে জায়গায় বেলা ১১:৪৩ মিনিটে।এই সন্ধিপুজো শেষ হবে বেলা ১২:৩১ মিনিটে এবং এর সঙ্গে বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মহা নবমী ২৫আশ্বিন এবং দশমীর পরের দিন অর্থাৎ ২৬আশ্বিন ইংরেজি ১৩অক্টোবর।এবার তাই দেবী দুর্গার আরাধনার অনেক সময়-সুযোগ কোনও জায়গা নেই। তবে শুধু দুর্গোৎসব নয়,সারা বছর আনন্দ মেতে থাকুক সকলেই বাংলা বছরের শুরুতে মেতে উঠুক বাঙালি দুর্গোৎসবে। Input Souvik Roy