খোলা হয়েছে দুর্গাপুর ব্যারেজের ২৮ টি লকগেট।

Durgapur Barrage: ‘বাংলার দুঃখ’ কি এবার আরও দুঃখ দেবে? লকগেট খোলায় দুর্গাপুর ব্যারেজের ভয়াল রূপ ভয় ধরাবে! দেখুন ভিডিও

দুর্গাপুর: কথাতেই আছ, ‘নদীর পাড়ে বাস, চিন্তা বারোমাস’। তার উপর সেই নদীর নাম যদি হয় বাংলার দুঃখ দামোদর, তাহলে তো আশঙ্কার কোনও শেষ থাকে না। ভয়াল দামোদর কি গ্রাম ডুবিয়েই ছাড়বে? এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বহু মানুষের মনে। দামোদরের নিম্ন অববাহিকায় অবস্থিত গ্রামগুলির মানুষজন চরম আতঙ্কিত। যে কোনও সময় এলাকায় জল ঢুকতে পারে বলে ভয় ধরেছে তাদের।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার প্রচুর পরিমাণে জল ছাড়ার পর, রবিবারেও হু-হু করে জল ছাড়া হয়েছে দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে। শনিবার মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে ছাড়া জল দুর্গাপুর ব্যারেজ এসে পৌঁছতেই জল ছাড়ার পরিমাণ বেড়েছে। রবিবার ৯৮ হাজার ৫২৫ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে। খুলে দেওয়া হয়েছে দুর্গাপুর ব্যারেজের ২৮ টি লকগেট।

আরও পড়ুন: এই একটি ফল নিয়ে বিমানে ওঠা নিষেধ, হতে পারে জেল-জরিমানা! জানেন কোন ফল?

অর্থাৎ, দুর্গাপুর ব্যারেজের সিংহভাগ লকগেট খুলে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে অতি ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে দামোদরের এই জলাধার। গত দু’দিন প্রচুর পরিমাণে জল ছাড়া হলেও, সেচ দফতরের আধিকারিকরা আশ্বাস দিয়েছিলেন, নিম্ন অববাহিকায় বন্যার আশঙ্কা নেই। কিন্তু রবিবার সেই সেচ দফতরকে দেখা গিয়েছে, মাইকিং করে মানুষকে সচেতন করতে। মাইকিং করে বারবার বলা হয়েছে, যাতে এই ভয়াল দামোদরে কেউ না নামেন।

আরও পড়ুন: মহিলা রেঞ্জারকে হুমকি! মমতার নির্দেশে কারামন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ অখিল গিরির

কোনওরকম দুর্ঘটনা এড়াতে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ এবং সিভিক ভলান্টিয়ারদের। যা দেখে দামোদরের নিম্ন অববাহিকায় অবস্থিত মানাচর সহ বর্ধমান এবং বাঁকুড়ার নদীপাড়ের গ্রামগুলির মানুষজনের ধুকপুকানি বেড়েছে প্রসঙ্গত, দুর্গাপুর ব্যারেজের দুই পাড়ে বাঁকুড়া এবং বর্ধমান জেলায় একাধিক গ্রাম রয়েছে। যে গ্রামের মানুষজন অনেকটা দামোদরের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু তাদের দুঃখের কারণও এই দামোদর।

নদীর দুকূল ছাপিয়ে জল ঢুকতে শুরু করলে, সেই সমস্ত গ্রামগুলির কৃষি জমিগুলি ডুবে যাবে। ওই এলাকাগুলিতে বাদাম চাষের আধিক্য দেখা যায়। জল ঢুকলে সেই সমস্ত কৃষি জমি নষ্ট হয়ে প্রচুর টাকার ক্ষতি হবে। জল ঢুকলে সমস্যা দেখা দেবে পানীয় জলের। আবার ওই এলাকায় বেশিরভাগই বাড়ি কাঁচা। ফলে দামোদর উপচে সেই বাড়ি ভেঙে পড়বে। সবমিলিয়ে দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে যত জল ছাড়া হচ্ছে, তত চিন্তা বাড়ছে সকলের।

চিন্তা শেষ হয়নি এখানেই। কারণ রবিবারও পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল ছাড়া হয়েছে। পাঞ্চেত জলাধার থেকে ১ লক্ষ ১৪ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে হু-হু করে জল ঢুকছে এই জলাধারগুলিতে। তাই জল ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ। রবিবার পাঞ্চেত যে জল ছেড়েছে, সেই জল রাতের দিকে পৌঁছবে দুর্গাপুর ব্যারেজ। তখন দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে আরও পরিমাণে জল ছাড়া হতে পারে বলে ধারণা। আর তার ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

নয়ন ঘোষ