গত কয়েকদিনে কিউসেক শব্দটা শোনা গিয়েছে বারবার। এই একটা শব্দ বহু মানুষের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। বর্ষার এই সময় কিউসেক শব্দটা বেশি শোনা যায়।

বর্ষায় বৃষ্টির দেখা নেই, দক্ষিণবঙ্গে চাষ বাঁচাতে জল দেবে ডিভিসি

বর্ধমান: প্রবল বৃষ্টির ঘাটতিতে কৃষকদের শঙ্কার মাঝেই কিছুটা স্বস্তি।মাইথন ও পাঞ্চেত জলধারে সঞ্চিত জলের পরিমাণ গড়ে ৬ ফুট করে বেশি। পাঁচ জেলার কৃষকদের সুবিধার্থে আগামী ২৫ জুলাই থেকেই  জল ছাড়বে ডিভিসি। এমনই সিদ্ধান্ত হল বৈঠকে ।

খরিফ মরশুমে দুই বর্ধমান, বাঁকুড়া, হুগলি ও হাওড়া জেলার কৃষকদের সুবিধার্থে আগামী ২৫ জুলাই থেকে মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল ছাড়বে ডিভিসি।পূর্ববর্ধমানের জেলাশাসকের সভাকক্ষে বর্ধমান বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার অবনীন্দ্রনাথ সিং -এর সভাপতিত্বে পাঁচ জেলার প্রতিনিধিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত  বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: অসহায় বাংলাদেশিদের আশ্রয় দেওয়ার ঘোষণা, মমতার মন্তব্যে কী প্রতিক্রিয়া ঢাকার?

পূর্ব বর্ধমান জেলাপরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার জানান, চলতি খরিফ মরশুমে পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রায় ৩ লক্ষ ৭৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হবে ধরে নিয়েই কৃষকদের সুবিধার্থে ২৫ জুলাই থেকে ডিভিসির জলধারগুলি থেকে জল  ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।সেই জল দুর্গাপুর ব্যারাজে পৌঁছতে ২৭ জুলাই পর্যন্ত সময় লাগবে।তারপর থেকেই জেলার চাষিরা সেচখালগুলি থেকে জল পাবেন।

এর ফলে পূর্ব বর্ধমানের ১৯ টি ব্লকসহ পাঁচ জেলার ৪২ টি ব্লক খরিফ চাষের জন্য জল পাবে। প্রাথমিকভাবে ১ লক্ষ ৩০ হাজার একর ফিট জল ছাড়া হবে। পরবর্তী সময়ে চাহিদা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মেহেবুব মণ্ডল জানান, চলতি মরশুমে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪৫.৯% বৃষ্টির ঘাটতি আছে।গত বছর জুন মাসে যেখানে গড় বৃষ্টি হয় ২২৬ মিলিমিটার মতো, সেখানে চলতি বছরে জুন মাসে বৃষ্টি হয়েছে ৬১.৯ মিলিমিটার।জুলাই মাসেও গড় বৃষ্টি ২০২.৫ মিলিমিটারের জায়গায় বৃষ্টি হয়েছে ১৬৯.৭ মিলিমিটার।যদিও জলাধারগুলিতে পর্যাপ্ত জল মজুত আছে। জেলায় ইতিমধ্যেই ২৫ হাজার ২৪৫ হেক্টর জমিতে ধান রোপন করা হয়ে গিয়েছে৷ অন্যদিকে জেলার প্রায় ৯৮ শতাংশ জমির বীজতলাও তৈরি করা হয়ে গিয়েছে।ফলে আমাদের লক্ষ্য ছিল দ্রুততার সঙ্গে জল ছাড়ার যাতে কৃষকরা তাঁদের ধান চটজলদি রোপন করতে পারেন।

গত মরশুমে মাইথন জলাধারে জল ছিল ৪৬০.৩৩ ফুট৷ সেখানে এই বছর এখনও পর্যন্ত জল আছে ৪৬৬.৩৩ ফুট। অন্যদিকে পাঞ্চেত জলাধারে গত মরশুমে থাকা ৩৯৯.৮৬ ফুট জলের জায়গায় চলতি মরশুমে জল আছে ৪০৬.২০ ফুট। অর্থাৎ প্রতিটি জলাধারেই প্রায় ৬ ফুট করে বেশি জল মজুত আছে। প্রথম পর্যায়ে ২৫ জুলাই থেকে ১ অগাস্ট পর্যন্ত ১ লক্ষ ৩০ হাজার একর ফিট জল ছাড়া হবে, পরবর্তীতে পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।