শিক্ষা Education News: ভারতের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষাগুলিতে পাশ করা কঠিন, তবে চাকরি পেলেই বিপুল বেতন! জানুন Gallery July 24, 2024 Bangla Digital Desk স্কুলে পড়ার সময় মনে হতেই পারে যে, স্কুলের পাঠ বেশ কঠিনই। এমনটা মনে হলে আর একটু অপেক্ষা করে যেতে হবে। মানে ওই দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত। আসলে দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষার আগেই অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী নিজেদের কেরিয়ারের পথ ঠিক করে ফেলেন। আর তার জন্য কী কী প্রবেশিকা পরীক্ষা উতরোতে হয়, কী কী করণীয়, সেই বিষয়েও তারা রীতিমতো গবেষণা করে নেয়। তবে ভারতে দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরে বেশ কিছু কোর্স রয়েছে, যা শেষ করতে বেশ কয়েক বছর সময় তো লাগেই। তার সঙ্গে লাগে প্রচুর পরিশ্রমও। দ্বাদশ শ্রেণি পাশের পরে নিজের জন্য উপযুক্ত কেরিয়ার বাছাই করে নেওয়ার ক্ষেত্রে নিজের আগ্রহ এবং ক্ষমতার পাশাপাশি বাজেট বা খরচের দিকটাও পরিকল্পনা করা আবশ্যক। শুধু তা-ই নয়, যে কেরিয়ার বিকল্প বাছাই করা হচ্ছে, আগামী ৫-১০ বছরে তার বাজার কেমন থাকবে, সেটা খতিয়ে দেখাটাও জরুরি। আবার ভারতে কঠিন কোর্সের জন্য প্রচুর পরিশ্রম করতে হয় ঠিকই, তবে পরে চাকরি পেলে সেটা পুষিয়ে যায়। কারণ বেতন হিসেবে হাতে আসতে থাকে লক্ষ লক্ষ এমনকী কোটি কোটি টাকাও। তাহলে ভারতের সবথেকে কঠিন কোর্সগুলির সঙ্গে পরিচয় করে নেওয়া যাক। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং: সবথেকে কঠিন অথচ ট্রেন্ডিং কোর্স হল কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং। প্রোগ্রামিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, মেশিন লার্নিংয়ের মতো টেকনিক্যাল কনসেপ্ট শেখানো হয় এই কোর্সে। আর প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রয়োজন রয়েছে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের। আর প্রতি বছর প্রচুর ছাত্রছাত্রী কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হন। চাকরি জীবনের শুরুতেই কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়াররা লক্ষ লক্ষ চাকা বেতন পান। আর শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও চাকরির দারুণ সুযোগ। চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (সিএ): সিএ পরীক্ষা ভারতের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত। এতে সফল হতে হলে হিসাব, নিরীক্ষা, কর ও ব্যবসায়িক আইন সম্পর্কে গভীর জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। সিএ হওয়ার প্রক্রিয়াটি বেশ দীর্ঘ। শিক্ষার্থীদের সিএ পরীক্ষায় ৩টি স্তরে উত্তীর্ণ হতে হবে। এর জন্য ৩-৪ বছর কিংবা তার বেশি সময়ও লাগতে পারে। দ্বাদশ শ্রেণী পাশের পরে সিএ পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করা যেতে পারে। অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন সিএ-র বেতন ৬০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।লেভেল ১: সিএ ফাউন্ডেশনলেভেল ২: সিএ ইন্টারমিডিয়েটলেভেল ৩: সিএ ফাইনাল মাস্টার অফ ফিলোজফি (এম.ফিল): মাস্টার অফ ফিলোজফি হল ভারতের অন্যতম চ্যালেঞ্জিং কোর্স। এটি ২ বছরের স্নাতকোত্তর কোর্স। এর জন্য নিজের পছন্দের বিষয় নিয়ে গবেষণা করতে হয়। এম.ফিল ডিগ্রি পেতে গবেষণা থিসিস সম্পূর্ণ করতে হবে। এম.ফিল করতে চাইলে GATE, IIT JAM বা LPUNEST-র মতো প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। মেডিসিন: মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হতে হলে NEET UG পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। এর পরেই মেডিক্যাল কলেজের এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি হওয়া সম্ভব। NEET বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষার তালিকায় পড়ে। প্রতি বছর ২০ লক্ষেরও বেশি শিক্ষার্থী NEET পরীক্ষা দেন। যার মধ্যে মাত্র ১ লক্ষ প্রার্থী মেডিক্যাল কলেজে আসন পান। এমবিবিএস কোর্সটি প্রায় সাড়ে ৫ বছরের। ইঞ্জিনিয়ারিং: এটি ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় কোর্স। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী জেইই মেইন এবং জেইই অ্যাডভান্সড পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং সেরা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হন। ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সটি ৪ বছরের। আর B.Tech কোর্সটি বেশ কঠিন এবং দীর্ঘ। সময়মতো ডিগ্রি পাওয়ার জন্য প্রযুক্তিগত দক্ষতার মূল বিষয়গুলি এবং বাস্তব জীবনে তাদের ব্যবহারিক প্রয়োগ জানা উচিত। ভারতে একজন ইঞ্জিনিয়ারের বেতন কয়েক লক্ষ টাকা। মাস্টার অফ বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এমবিএ): যে কোনও বিষয়ে স্নাতক পাঠ শেষ করে এমবিএ কোর্সে ভর্তি হওয়া যায়। দেশের সেরা এমবিএ কলেজ অর্থাৎ আইআইএম-এ ভর্তির জন্য CAT পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া আবশ্যক। ২ বছরের কোর্সে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করে দেশ বিদেশের সেরা কোম্পানিতে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট, ব্যবসা, বিপণনের মতো ক্ষেত্রে উচ্চ বেতনের চাকরি পাওয়া সম্ভব। আর্কিটেকচার: এই ক্ষেত্রের চাহিদাও যথেষ্ট। এতে সফল হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের ডিজাইন, ইঞ্জিনিয়ারিং, কলা ও গণিত বিষয়ে দৃঢ় জ্ঞান থাকতে হবে। আর্কিটেক্ট হতে হলে B.Arch কোর্স করতে হবে। দেশের সেরা আর্কিটেকচার কলেজ থেকে B.Arch করতে হলে JEE পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া বাধ্যতামূলক। এই ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার মাত্রা অনেক বেশি। আর্কিটেকচার কোর্স শেষ করে ভাল প্যাকেজে চাকরি পাওয়া যায়। আইন: এটি একটি অত্যন্ত জটিল বিষয়। এই কোর্স সম্পন্ন করার জন্য প্রার্থীর বিশ্লেষণাত্মক এবং সমালোচনামূলক চিন্তা দক্ষতা খুব শক্তিশালী হতে হবে। এর পাশাপাশি শেখার দক্ষতাও হতে হবে শক্তিশালী। বিভিন্ন আইনি বিষয়, সাংবিধানিক আইন, ফৌজদারি আইন, নাগরিক আইন, চুক্তি আইন ইত্যাদি এলএলবি পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এতে ভর্তি হতে হলে CLAT পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। সিভিল সার্ভিসেস: সিভিল সার্ভিস কোনও কোর্স নয়, এটা দেশের শীর্ষ সরকারি চাকরি। কিন্তু এখানে পৌঁছতে হলে দেশের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা UPSC CSE পাশ করতে হবে। এরপর মুসৌরিতে অবস্থিত এলবিএসএনএএ-তে তাঁদের কঠোর প্রশিক্ষণ হয়। এটিকে একটি কোর্সও বলা যায়। থিওরি থেকে প্র্যাকটিকাল সবই এতে কভার করা হয়। ফার্মেসি: ফার্মেসি কোর্সও খুব কঠিন বলে মনে করা হয়। এই কোর্সে দক্ষ হতে হলে বিজ্ঞান, ফার্মাসিউটিক্যাল অর্গানিক, ইন-অর্গ্যানিক কেমিস্ট্রি, আয়ুর্বেদ এবং ফার্মাকোগনোসি সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে। ফার্মেসি কোর্সের সিলেবাস খুবই বড়। এর জন্য প্রচুর পরিশ্রম করা আবশ্যক।