গণস্বাক্ষর মজুদ করে নিয়ে যাওয়া হবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে

Hooghly News: হয় চাষ, নয় শিল্প! সিঙ্গুরের জমিতে আবারও সংঘটিত হচ্ছে আন্দোলন

হুগলি: একসময়ের জমি আন্দোলনের গড় ছিল হুগলির সিঙ্গুর। টাটা কারখানার অধিগৃহিত জমি ফেরতের জন্য তীব্র আন্দোলন করেছিল জমি বাঁচাও কমিটি। তবে চাষের জমি ফেরত পেলেও তা আর চাষযোগ্য নেই। তাই ফেরত জমি চাষযোগ্য করে তুলতে কিংবা পতিত জমিতে শিল্প করার দাবিতে গণসাক্ষর অভিযানে নামছেন সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনকারী কৃষকদের একাংশ । তৈরি হয়েছে সিঙ্গুর বন্ধ্যা জমি পুর্নব্যবহার কমিটি। ছাপানো হয়েছে আবেদন পত্র। আগামী ৩০শে আগষ্ট থেকে ক্যাম্প করে চাষীদের থেকে এই মর্মে আবেদনপত্র সংগ্ৰহ করবে কমিটি।

কমিটির সদস্যদের দাবি, সিঙ্গুরের অধিকাংশ জমিকে চাষযোগ্য করে দেওয়া হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী তাদের জমি চাষযোগ্য করে দিক সরকার তা না হলে সেখানে শিল্প স্থাপন করা হোক। যদিও পাল্টা সিঙ্গুরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী বেচারাম মান্নার দাবি, সিঙ্গুরের ৯০ শতাংশ জমি চাষযোগ্য হয়েছে। মিথ্যা বলছেন মন্ত্রী, পাল্টা কটাক্ষ করেছে সিপিআইএম।

২০০৬ সালে সিঙ্গুরেটাটা মোটর গাড়ি কারখানার জন্য জমি অধিগ্রহণ কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে কৃষিজমি আন্দোলন। সিঙ্গুরের বেড়াবেড়ি, বাজেমেলিয়া, খাসেরভেড়ি, সিংহের ভেড়ি, গোপালনগর এই পাঁচটি মৌজার হাজার হাজার চাষি আন্দোলনে যুক্ত হয়ে জমি অধিগ্রহণের বিরোধিতা করেন। রাজ্যের বর্তমান শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস আন্দোলনের রাস ধরে নিতে সক্ষম হয়। ফলে আন্দোলন তীব্র থেকে আরও তীব্রতর হয়ে ওঠে। কৃষকদের আন্দোলনের ফলে কারখানার কাজ প্রায় সমাপ্ত হয়েও ফিরে যেতে বাধ্য হয় টাটারা। ২০১৬ সালে ৩১শে অগাস্ট সুপ্রিম কোর্ট সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণ অবৈধ ঘোষণা করে প্রায় ১০০০একর জমি চাষযোগ্য করে তিন মাসের মধ্যে চাষিদের ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দেন। এরপর কারখানা ভেঙ্গে সিঙ্গুরের জমি চাষিদের ফিরিয়ে দেয় তৃণমূল সরকার। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রায় ৮বছর পরে আবারো সেই জমি নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলছেন সিঙ্গুরের আন্দোলনকারী কৃষকদেরই একাংশ।

যে জমি তাদের ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে তার বেশিরভাগই চাষযোগ্য করে দেওয়া হয়নি। বন জঙ্গলে ভর্তি এখনওপড়ে রয়েছে পাথর, কংক্রিটের আস্তরণ, ফলে ফেরত পাওয়া জমি এখনো চাষের অযোগ্য। তাই তাদের দাবি, সেই জমি চাষ যোগ্য করে দিতে হবে সরকারকে। জমি চিহ্নিত করে বুঝিয়ে দিতে হবে কৃষকদের, করতে হবে জল নিকাশীর উপযুক্ত ব্যবস্থা, আর যদি জমি চাষের উপযুক্ত না করে তোলা যায় তাহলে সেই জমিতে শিল্প হোক। চাষিদের আশা মানবিক মুখ্যমন্ত্রী তাদের কথা বুঝবেন।