পাহাড়ের চুড়ায় দাঁতালের মুখোমুখি হয় পরিবার

Wayanad landslide: ধস থেকে বাঁচতে পাহাড়ে, দাঁতালের মুখোমুখি পরিবার, তারপর যা হল, শুনলে চোখে জল আসবে

ওয়ানাড: ওয়ানাডে যখন দিকে দিকে ধ্বংসের ছবি তখনই প্রকৃতির অন্যরূপ দেখল সেখানকার এক পরিবার। ভূমিধসে যখন পায়ের মাটি সরে যাচ্ছে, নদী উথালপাথাল সেই সময়েই এক দল হাতি বাঁচিয়ে দিয়ে গেল এক মহিলা এবং তাঁর পরিবারকে।
সুজাতা আনাইচারা এবং তাঁর পরিবার এই ভয়াবহ বিপর্যয়ে থেকে রক্ষা পেয়েছেন। এবং রক্ষা পেয়ে তাঁরা ধন্যবাদ জানাছেন ওই হাতির দলকে। যখন দিকে দিকে মানুষ ভেসে যাচ্ছে, মাটি চাপা পড়ে মারা যাচ্ছে চারিদিকে হাহাকারের রবে বাতাস ভারী হয়ে উঠছে সেই সময়ে তাঁদের পাশে কিভাবে হাতি সারারাত দাঁড়িয়ে ছিল এবং এই বিপর্যয়ে থেকে তাঁদের রক্ষা করেছে তা ভাবলে এখন শিউরে উঠছেন সুজাতা।
সেই রাতের কথা বলতে গিয়ে সুজাতা জানান, ওই রাতে যখন তাঁদের পাশের দুই তলা বাড়ি ভেঙে পড়ে এবং নিজেদের বাড়িও ধূলিসাৎ হয়ে যায় তখন সেই বাড়ির নিচেই চাপা পড়ে যায় তাঁর ছেলে গিরেশ, পুত্রবধূ সুজিথা এবং তাঁর নাতনি মৃদুলা।
এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি আমার নাতনি মৃদুলার কান্না শুনতে পাই। আমি তাঁর আঙুল ধরে টেনে বের করে সাঁতরে ওই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসি।”

আরও পড়ুন: ওয়ানাডে আশার আলো মায়া এবং মারফি, কারণ জানলে অবাক হবেন!
সৌভাগ্যবশত পরিবারের বাকি সদস্যরাও নিজেদের বাঁচিয়ে কাছেই একটি পাহাড়ি চুড়ায় আশ্রয় নেয়। সেখানেই তাঁরা দেখতে পান একটি দাঁতাল হাতি সহ দুটি স্ত্রী হাতি। বন্য পশু গুলি কাছে আসার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁরা শঙ্কিত হয়ে পড়েন। সুজাতা জানান তিনি,কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। তিনি মনে মনে প্রার্থনা করছিলেন যাতে ওই পশুগুলি তাঁদের প্রাণভিক্ষা দেয়।
তিনি বলেন, “চারিদিক ঘন অন্ধকার ছিল, একটা দাঁতাল হাতি আমাদের থেকে মাত্র কয়েক হাত দুরেই দাঁড়িয়ে ছিল। আমি ভয়ঙ্কর ভাবে ভয় কাঁপছিলাম আর মনে মনে বলছিলাম আমাদের রেহাই দাও। আমরা একটু আগেই একটা বিপর্যয় পেরিয়ে এসেছি।”
না, তাঁদের আক্রমণ করেনি ওই দাঁতাল উলটে আরও কাছে এসে ঢাল হয়ে সারা রাত কার্যত ত্রাতার মতন দাঁড়িয়ে থেকে রক্ষা করে গেছে দুর্যোগ থেকে। সুজাতা জানান, সেই সময়ে ওই দাঁতালের চোখ দিয়েও জল গড়াচ্ছিল। পরের দিন ভোরে গ্রামবাসীরা এসে তাঁদের উদ্ধার না করা পর্যন্ত ঠায় তাঁকে এবং তাঁদের পরিবারকে আগলে রেখেছিল ওই দাঁতাল।
সুজাতা বলেন, “আমরা ওই দাঁতালের পায়ের খুব কাছে দাঁড়িয়ে ছিলাম। ও হয়ত বুঝতে পেরেছিল আমাদের সমস্যাটা। আমরা ওখানে ভোর ৬টা পর্যন্ত ছিলাম। ওই হাতিটাও আমাদের সঙ্গে ছিল। এরপর কিছু লোক এসে আমাদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়।”