জলপাইগুড়ি: ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে সমস্যার মুখে জলপাইগুড়ি শহর। বর্ষার শুরুতেই অতি ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জঙ্গল ছেড়ে হাতির দল শহরমুখী হয়েছে! শতাধিক হাতি ক্রমশ শহরের দিকে এগিয়ে আসছে।
গত তিন-চার দিন ধরে লাগাতার বৃষ্টি চলছে উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি সহ পাহাড়ে। যার জেরে কার্যত ফুঁসছে তিস্তা নদীর জল। আর এতেই নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে শহরমুখী হয়েছে প্রায় শতাধিক বুনো হাতির দল।
আরও পড়ুন: চলন্ত ট্রেনের দরজায় দাঁড়িয়ে সাবধান! ইদের ছুটিতে বাড়ি ফেরা হল না মালদহের পরিযায়ী শ্রমিকের
বৃহস্পতিবার রাত থেকেই চলছে অবিরাম বৃষ্টি।লাগাতার বৃষ্টির জেরে উত্তর সিকিমের পরিস্থিতি ক্রমশই জটিল রূপ নিচ্ছে। ধস নামছে পাহাড়জুড়ে। পাহাড়ে বৃষ্টির জেরে জলপাইগুড়ি, ডুয়ার্স সহ বিভিন্ন এলাকার নদী এবং পাহাড়ী ঝোরাগুলোতে বেড়েছে জলের স্রোত। আর এতেই মানুষের পাশপাশি বন্য প্রাণীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। এদিকে, শুক্রবার ভোর হতেই জলপাইগুড়ি শহর থেকে সামান্য দূরে অবস্থিত বৈকুণ্ঠপুর বনাঞ্চল ঘেঁষা কালিয়াগঞ্জ গ্রামে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ঢুকে পড়েছে শতাধিক বুনো হাতির দল।
শহরের দিকে বুনো হাতির দলের এগিয়ে আসার খবর পেয়ে নজরদারি শুরু করেছে বন বিভাগ। এখনও অবধি কোনও হতাহতের খবর নেই। তবে গ্রামে ছড়িয়েছে হাতির আতঙ্ক। রীতিমতো সন্ত্রস্ত অবস্থা বাসিন্দাদের মধ্যে।
সুরজিৎ দে
আলিপুরদুয়ার: প্রচন্ড গরমে নাজেহাল হাতিরা। জঙ্গল ছেড়ে একটু জলের খোঁজে নদীর ধারে চলে আসছে তারা। আলিপুরদুয়ার জেলার জঙ্গল সংলগ্ন এলাকাগুলিতে দেখা যাচ্ছে এই ছবি।
কখনও জয়ন্তী আবার কখনও তোর্ষা নদীর ধারে দেখা যাচ্ছে হাতিদের। এমন বীভৎস গরমে নাজেহাল সকলেই। রাস্তায় দেখা যায়না মানুষজন।সকালে সূর্যের তাপের রেশ থেকে যায় বিকেল পর্যন্ত। রাতেও কমতে চায় না গরম। মানুষের পাশাপাশি নাজেহাল বন্য প্রাণীরা।
আরও পড়ুন- চরম আর্থিক অনটন! দিনে মাত্র ৫০ টাকা আয়, খরচ বাঁচাতে যা করতেন নায়িকা…! বিখ্যাত পরিচালকের মেয়ের রোজগার শুনলে আঁতকে উঠবেন
এদিকে শুকিয়ে যাচ্ছে নদী ও জলাশয়ের জল। অল্প জলেই তৃষ্ণা মেটানোর পাশাপাশি শরীর ভিজিয়ে নিতে দেখা যায় হাতিদের।
আরও পড়ুন- শক্তি বাড়িয়ে ধেয়ে আসছে সাইক্লোন রিমল! ভয়ঙ্কর দুর্যোগের আশঙ্কা বাড়ছে দক্ষিণবঙ্গে, উত্তরেও কি চলবে তাণ্ডব? আবহাওয়ার বিরাট আপডেট
এই ছবি মুঠোফোনে বন্দী করছেন পর্যটকেরা।জঙ্গলে একবেলার জন্য এসে এমন দৃশ্য দেখা ভাগ্য ভাল থাকলেই হয় বলে জানিয়েছেন তারা।
Annanya Dey
জলপাইগুড়ি: হাতির দলের রাস্তা পেরোনোর জন্য রেললাইনের রেকের ধারে সাধারণত করিডোর থাকে। কিন্তু সেই করিডোরেই রয়েছে উঁচু বোল্ডারের স্তূপ। এভাবে উঁচু বোল্ডার জমে থাকায় যাতায়াতে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে হাতির দলকে। ফলে ঠিক করে তারা রাস্তা পারাপার করতে পারছে না। এই অবস্থায় হাতির দল ক্ষেপে গিয়ে লোকালয়ে হানা দিতে পারে বলে পরিবেশবিদদের আশঙ্কা।
হাতিদের চলাচলের করিডোরে ব্যাঘাত ঘটার জন্য রেলের দিকে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। রেললাইন রক্ষা করতে ডুয়ার্সের মোরাঘাট এলাকায় হাতিদের হাই সেনসেটিভ করিডর আটকে বোল্ডার দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে বাঁধ। গোটা ঘটনায় রীতিমত ক্ষুব্ধ পরিবেশপ্রেমীরা। চিন্তায় পড়েছে বন দফতরও। হাতিদের করিডোর বাঁচাতে ইতিমধ্যেই বন দফতর ও পরিবেশপ্রেমীদের তরফে রেলকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। রেললাইন সংলগ্ন বন্যপ্রাণীদের যাতায়াতের রাস্তায় বাধা পেলে লোকালয়ে বন্যপ্রাণীর হানা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা কথা জানিয়েছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: অক্ষয় তৃতীয়ায় ভোগে মাছের মাথা পেলেন তারাপীঠের মা তারা!
বর্ষাকালে ভুটান থেকে অতিরিক্ত বৃষ্টির জল হাতিনালা দিয়ে এসে রেললাইনের ক্ষতি করতে পারে, এই আশঙ্কা থেকেই জলপাইগুড়ির বানারহাট ব্লকের মরাঘাট চৌপথি থেকে হাতিনালার একপাশের পাড়ে বাঁধ দিচ্ছে রেল। বিন্নাগুড়ি এলাকায় বানারহাট হিন্দি কলেজ সংলগ্ন হাতির কয়েকটি করিডর রয়েছে। প্রায়দিন ভোরে বা রাতে রেতির জঙ্গল থেকে মরাঘাট জঙ্গল এই পথ দিয়েই গিয়ে হাতিনালা পার হয় হাতির দল। এবার এই এলাকায় হাতিনালাগুলিতে বোল্ডার দিয়ে পাড় বাঁধ দেওয়ায় শাবক নিয়ে হাতির দল ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীরা করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হবে। আর তাতেই লোকালয়ে হানাদারী বাড়বে বলেই আশঙ্কা। গোটা বিষয়টি নিয়ে আতঙ্কে ভুগছেন স্থানীয়রা। এই বিষয়ে রেল আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হলেও তাঁরা কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
সুরজিৎ দে
Just another WordPress site