কি খেতে ভালোবাসতেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য

Buddhadeb Bhattacharjee: ‘মৌরলা মাছ, আর…’, এই দুই পদই ছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের খুব পছন্দের, আবেগে গলা বুজল রাঁধুনির

পুরুলিয়া: ৩৪ বছর ধরে বাংলায় রাজত্ব করেছে বামফ্রন্ট সরকার। বাম সরকারের অন্যতম মুখ, বাম আমলের শেষ মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ২০১১ সাল পর্যন্ত টানা ১১ বছর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতিতে যুগান্তকারী পরিবর্তন এসেছিল তার হাত ধরে। এদিন সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তার মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই শোকস্তব্ধ গোটা রাজনৈতিক মহল।

বৃহস্পতিবার সকালে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মৃত্যুর খবর জানান তাঁর সন্তান সুচেতনা ভট্টাচার্য। জানা গিয়েছে, এদিন সকালে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য প্রাতঃরাশ করেছিলেন। তার পরেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন বেশ কয়েকবার পুরুলিয়া সফরে এসেছিলেন প্রাক্তন প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সেই সময় পুরুলিয়ার সার্কিট হাউসে রাত্রিযাপন করতেন। তাঁকে ঘিরে তখন নানা সরকারি আয়োজন থাকত সার্কিট হাউসে।

আরও পড়ুনঃ ছুটছে ডবল ডেকার বাস! বিলাসবহুল ক্রুজের রাজকীয় ছবি প্রকাশ্যে! দিঘায়, গোয়ার মজা কবে থেকে? জানুন

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর খাবারের দায়িত্ব থাকত সার্কিট হাউসে কর্মরত কালীপদ মাঝির উপরে। দিনভর চলত রান্নার তোড়জোড়। বুদ্ধবাবুকে ঘিরে তাঁর রয়েছে একাধিক স্মৃতি। তাঁর প্রয়ানের খবর পেতেই শোকাহত কালীপদ মাঝি। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের জন্য কি কি আয়োজন থাকত সেই সময়? কি খেতে ভালবাসতেন প্রাক্তন প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী? সেই স্মৃতিচারণ করলেন কালিপদ মাঝি।

কালীপদ মাঝি বলেন, বুদ্ধবাবুকে তিনি চার-পাঁচবার নিজের হাতে রান্না করে খাইয়েছেন। তাঁর খাবারের তালিকায় থাকত সবজি, মৌরলা মাছ, কুমড়ো ফুলের বড়া, ডাল, দই-সহ একাধিক পদ। তবে বুদ্ধবাবু সবচেয়ে বেশি ভালবাসতেন কুমড়ো ফুলের বড়া আর মৌরলা মাছ খেতে। যেভাবেই হোক কুমড়ো ফুল তাঁর জন্য জোগাড় করতেই হত। যখন থেকে তিনি শুনেছেন বুদ্ধবাবু পরলোক গমন করেছেন, পুরনো বহু স্মৃতি তার মনে ভিড় করছে, মন ভারাক্রান্ত।

আরও পড়ুনঃ ঘড়িতে সকাল ৮.২০ মিনিট, না ফেরার দেশে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতেই প্রয়াণ

এ বিষয়ে কালিপদ মাঝির স্ত্রী বলেন, সেই সময়টা যখন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সার্কিট হাউসে আসতেন তখন তার স্বামীর ব্যস্ততা বেড়ে যেত। ঠিক করে বাড়িতে সময় পর্যন্ত দিতে পারতেন না। আজ সকাল থেকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকে স্বামী শোকাহত। তিনিই স্বজন হারানোর যন্ত্রণা অনুভব করছে।

দীর্ঘদিন ধরেই গুরুতর অসুস্থ ছিলেন প্রাক্তন প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। অসুস্থতার কারণে শেষ কয়েক বছর কার্যত গৃহবন্দি ছিলেন। আগে একাধিক বার হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় তাঁকে। দীর্ঘ জীবনের লড়াইয়ের পর ৮০ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। ১১ বছরের শাসনকালে তাঁকে ঘিরে বাংলার রাজনীতি ছিল সরগরম। সেই সমস্ত স্মৃতিই যেন আজ রাজনৈতিক মহলে ঘুরপাক খাচ্ছে।

শর্মিষ্ঠা ব্যানার্জি