কলকাতা: সদ্য লোকসভা নির্বাচনে ফের শূন্য পেয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছে বামেরা। কোনও মতে একটি আসন নিয়ে সবেধন নীলমণি কংগ্রেস। তবে বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের সঙ্গে আকচাআকচি কিছুতেই মিটছে না কংগ্রেসের।
রাজ্যে চারটি বিধানসভা উপনির্বাচনে রায়গঞ্জ আসনটি কংগ্রেসকে ছেড়ে বাকি তিনটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে বামফ্রন্ট। বাগদা কেন্দ্রটি দেওয়া হয় ফরওয়ার্ড ব্লককে। ওই কেন্দ্রে প্রাক্তন বিধায়ক কমলাক্ষী বিশ্বাসের পুত্র গৌরাদিত্য বিশ্বাসকে প্রার্থী করে দল। কিছুদিন পরে প্রার্থী ঘোষণা করে কংগ্রেস। রায়গঞ্জের পাশাপাশি বাগদাতেও প্রার্থী দিয়ে দেয় তারা। আর এতেই চটে লাল ফরওয়ার্ড ব্লক।
আরও পড়ুন: লোকসভা ভোটেও কেন কাটল না শূন্যের গেরো? জেলার রিপোর্টে চিন্তা বাড়ল সিপিএমের
ইতিমধ্যেই রায়গঞ্জে বাগদার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ঘুঁটি সাজাচ্ছে বামেদের এই শরিক দলটি। ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “কংগ্রেসের সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই। বাগদায় তৃণমূল, বিজেপির মতোই কংগ্রেস আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী। সবার বিরুদ্ধেই সমান ভাবে লড়াই করে আমরা জিতব। আর রায়গঞ্জে কংগ্রেসের সমর্থনে আমরা মাঠে নামছি না। বাকিটা কী করা হবে জেলা নেতৃত্ব ঠিক করবে।”
আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে গত শুক্রবার বামফ্রন্টের বৈঠকে ঠিক হয়, কলকাতার মানিকতলা আসনে সিপিএমের রাজীব মজুমদার এবং নদিয়ার রানাঘাট দক্ষিণ (সংরক্ষিত) আসনে অরিন্দম বিশ্বাস প্রার্থী হচ্ছেন। উত্তর ২৪ পরগণার বাগদা (সংরক্ষিত) আসনে এ বার উপনির্বাচনে প্রার্থী বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের গৌরাদিত্য বিশ্বাস। বিধানসভা উপনির্বাচনের জন্য এআইসিসি-র তরফে মঙ্গলবার প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। রায়গঞ্জে প্রার্থী হচ্ছেন দলের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি ও ওই কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত। বাগদায় প্রার্থী অশোক হালদার। তিনি পেশায় শিক্ষক, ব্লক কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি ছিলেন।
বামফ্রন্টের তরফে বাগদায় আগেই প্রার্থী হিসেবে ফ ব-র প্রাক্তন বিধায়ক গোরাদিত্য বিশ্বাসের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। কংগ্রেসের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার ফলে বাগদাকে ঘিরে জোটে জোট ঘণীভূত হল। উল্লেখ্য বাগদা বিধানসভা যে লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে, সেই বনগাঁতেও এ বার কংগ্রেসের প্রার্থী ছিল। সেই কারণেই এই আসনটি নিজেদের হাতেই কংগ্রেস রাখতে চায় বলে দলীয় সূত্রে খবর। আর এই ঘটনায় উপনির্বাচনে সদ্যসমাপ্ত লোকসভা ভোটে কোচবিহার ও পুরুলিয়ার ছায়া এসে পড়েছে বলে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ।
কোচবিহারে যেমন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুর অনুরোধ সত্ত্বেও কংগ্রেস প্রার্থী প্রত্যাহার করেনি, তেমনই পুরুলিয়ায় বামফ্রন্টের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নিজেরা লড়েছিল ফ ব। এর প্রভাব পড়েছিল অন্যত্রও। কলকাতা উত্তরে কংগ্রেস প্রার্থীর প্রচারে বামফ্রন্টের অন্য শরিকেরা থাকলেও ফ ব নামেনি। তারই পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে রায়গঞ্জে৷