পূর্ব বর্ধমান: ভোরবেলা নিয়মিত পড়তে বসা, অবসর সময়ে গল্পের বই, গান শোনা। উচ্চ মাধ্যমিকে সফল পূর্ব বর্ধমানের এই ছাত্রী। প্রকাশিত হল ২০২৪ সালের উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল। প্রথম দশের মেধা তালিকায় জায়গা করে নিল পূর্ব বর্ধমানের পড়ুয়ারা। পর্ষদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী প্রথম দশের মেধা তালিকায় রয়েছে মোট ৫৮ জন কৃতী শিক্ষার্থী। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন পূর্ব বর্ধমান জেলার একাধিক পড়ুয়া। উচ্চ মাধ্যমিক ২০২৪ এর প্রথম ১০ এর মেধা তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারির এক ছাত্রী।
আফরিন মণ্ডল নামে এই ছাত্রী মেধা তালিকায় ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেছেন। আফরিনের প্রাপ্ত নম্বর ৪৯১। ৯৮.২ শতাংশ নম্বর পেয়ে রাজ্যে তিনি ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেছেন। আফরিন, মেমারি ভি এম ইনস্টিটিউট ইউনিট ওয়ানের ছাত্রী। বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী আফরিনের ইচ্ছে আগামিদিনে চিকিৎসক হওয়ার।
আফরিন বলেন, “চিকিৎসক এমন একটা প্রফেশন যেটাকে সবাই ভগবানের পরে বলে মনে করেন। আল্টিমেট সময়ে চিকিৎসকের দরকার হয়। এছাড়াও আমি নিজে গ্রামে থাকি। আমি গ্রামের মানুষদের মধ্যে চিকিৎসা সম্পর্কে যে ভুল ধারণা রয়েছে সেগুলো দেখেছি। তাই আমি যদি চিকিৎসক হতে পারি তাহলে আল্টিমেট সময়ে মানুষকে সাহায্য করতে পারব এবং তাদের পাশে দাঁড়াতে পারব।”
আফরিন জানিয়েছেন, তিনি অবসর সময়ে ভালবাসেন গল্পের বই পড়তে, গান শুনতে। তাঁর পছন্দের গায়ক আতিফ আসলাম। তিনি জানিয়েছেন, পরীক্ষার আগে সে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা পড়াশোনা করতেন। নিজের পড়ার সময় হিসেবে তাঁর পছন্দ ছিল ভোরবেলা। একটানা পড়ার স্ট্রেস কমানোর জন্য মাঝে মধ্যে বেড়াতে ভালবাসতেন।
তাঁর কথায়, ডাক্তারি ছাড়া অন্যান্য অনেক পেশা থাকলেও, পেশা হিসাবে ডাক্তারিই তাঁর পছন্দ। সেই পথেই এগোতে চান তিনি। নিজস্ব মেধা আর বুদ্ধিমত্তার জেরে রাজ্যের মেধাতালিকায় জায়গা করে নেওয়া আফরিন মণ্ডল আরও জানিয়েছেন, বিভিন্ন মনীষীদের লেখা বই থেকে অনেক কিছু শিখেছেন।
ক্যামেরার মুখোমুখি হয়ে আফরিন জানান, এ পি জে আব্দুল কালামের লেখা ‘দ্য উইংস অফ ফায়ার’, তাঁকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। অন্যদিকে, স্কুলের ছাত্রীর এই ফলে স্বভাবতই খুশি স্কুলের শিক্ষকেরাও। সেই সঙ্গে তারা আফরিনকে নিয়ে আশাবাদী ছিলেন বলেও মন্তব্য করেছেন।
এই প্রসঙ্গে মেমারি ভি এম ইনস্টিটিউট এর প্রধান শিক্ষক কেশব কুমার ঘোষাল আরও জানান, এই বছর উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যের মেধা তালিকায় ৫৮ জনের মধ্যে পূর্ব বর্ধমান থেকে রয়েছে চার জন পড়ুয়া। আফরিন ছাড়াও জেলা থেকে মেধাতালিকায় একসঙ্গে তিন পরীক্ষার্থী দশম স্থান অধিকার করেছেন। তবে আফরিনের এই সাফল্যে খুশি হয়েছেন তাঁর বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকা থেকে পরিবারের লোকজন সকলেই।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী