*চলমান ইতিহাসের সাক্ষী তাম্রলিপ্ত রাজবাড়ি। রাজবাড়ির ইটের পাঁজরে গাঁথা রয়েছে সেই ইতিহাস। মহাভারতের কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ থেকে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সংগ্রামী ইতিহাসের নানা পর্বের সঙ্গে যুক্ত ময়ূর রাজবংশের রাজপুরুষেরা। প্রতিবেদনঃ সৈকত শী। সংগৃহীত ছবি।*এক সময়ে স্বাধীনতা আন্দোলনের পীঠস্থান ছিল এই রাজবাড়ি। প্রায় পাঁচ হাজার বছরে বহমান কালের নানা ইতিহাসের সাক্ষী তাম্রলিপ্ত রাজবাড়ি। বর্তমানে ভগ্নপ্রায় রাজবাড়ির আনুমানিক বয়স প্রায় ৪০০ বছরের কাছাকাছি। সংগৃহীত ছবি।*২০০৪ সালে এই তাম্রলিপ্ত রাজবাড়িটি হেরিটেজ স্বীকৃতি লাভ করে। মধ্যযুগীয় ইন্দো ইসলামীয় স্থাপত্যের নিদর্শন তাম্রলিপ্ত রাজবাড়ি। ভারতের মধ্যযুগে দেখতে পাওয়া যায় তাম্রলিপ্তর নিদর্শন। মধ্যযুগে তাম্রলিপ্ত বন্দর ছিল অন্যতম। এই তাম্রলিপ্ত বন্দর দিয়ে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে সিংহল যাত্রা করেছিলেন সম্রাট অশোকের পুত্র ও কন্যা। সংগৃহীত ছবি।*তাম্রলিপ্ত নগরীতে এসেছিলেন বিখ্যাত পরিব্রাজক ফা হিয়েন, হিউ-এন-সাং। জানা যায়, প্রাচীন তাম্রলিপ্ত নগরী গৌরবময় ইতিহাসের কথা। আধুনিক কালে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে তাম্রলিপ্ত রাজবাড়ির কথা। সংগৃহীত ছবি।*তাম্রলিপ্ত রাজবাড়ি হয়ে ওঠে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বাসস্থান এবং আন্দোলনের পীঠস্থান। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন থেকে লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলনে উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা রাখে তাম্রলিপ্ত রাজ পরিবার। তাম্রলিপ্ত রাজবাড়ি নির্মাণ সম্পর্কে যে তথ্য উঠে আসে। সংগৃহীত ছবি।*তাম্রলিপ্তের ময়ূর রাজা লক্ষ্মীনারায়ণ রায় ১৮৩৭ সালে রাজবাড়ি তৈরি করানোর কাজ শুরু করেন। দু’লক্ষ টাকা দিয়ে কাজ শুরু হয়েছিল। দোতলা রাজবাড়ির কাজ এগিয়েছিল অনেকটাই। রাজপ্রাসাদ তৈরির সময়ে ব্রিটিশদের সঙ্গে তাম্রলিপ্ত রাজ পরিবারের হঠাৎই খাজনা সংক্রান্ত বিবাদ লাগে। সংগৃহীত ছবি।*ইতিহাসবিদদের মতে, এই খাজনা সংক্রান্ত বিবাদ ব্রিটিশদের দেশীয় রাজাদের লুটে নেওয়ার এক প্রকার কৌশল ছিল। খাজনা নিয়ে সময় ‘সূর্যাস্ত আইন’ ছিল। এই আইন অনুযায়ী, দেশীয় রাজা, জমিদার বা ইজারাদারদের নির্দিষ্ট দিনে সূর্যাস্তের আগে খাজনা জমা দিতে হত। না পারলে তাঁদের সম্পত্তি দখল করে নেওয়া হত। সংগৃহীত ছবি।*এ প্রসঙ্গে আঞ্চলিক ইতিহাসবিদ জয়দেব মালাকার জানান, ব্রিটিশ শাসনকালে সময়ে মেদিনীপুর শহরে রাজস্ব জমা দিতে যেতে হত। কিন্তু রাস্তা নিরাপদ ছিল না। পথে ডাকাতের ভয় ছিল। রাজা লক্ষ্মীনারায়ণের সেনারা রাজস্ব নিয়ে নদী এবং স্থলপথে মেদিনীপুরের দিকে যাত্রা করেন। কিন্তু ডাকাতের ছদ্মবেশে ব্রিটিশ শাসকেরা সেই রাজস্ব লুঠ করে। রাজস্ব জমা দিতে না পারায় রাজপরিবারের সম্পত্তির বড় অংশ নিলাম হয়ে যায়। সংগৃহীত ছবি।*বর্তমানে পুরানো প্রাসাদ পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগের অধীনে। সংরক্ষণের কাজ শুরু হয়েছে। ইংরেজদের দেওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, ভারতের প্রাচীনতম পরিবারগুলোর মধ্যে অন্যতম তাম্রলিপ্ত রাজপরিবার। যা অন্তত প্রায় বছরেরও পুরনো। রাজ পরিবারের এই রাজপ্রাসাদটি ভগ্নপ্রায়। সংগৃহীত ছবি।*২০০৪ সালে তাম্রলিপ্ত রাজবাড়ির হেরিটেজ স্বীকৃতি পায়। বর্তমানে তাম্রলিপ্ত রাজবাড়িঘিরে ট্যুরিজম গড়ে তোলার প্রয়াস শুরু করেছে জেলা প্রশাসন ও রাজ পরিবার। সংগৃহীত ছবি।
