দক্ষিণ দিনাজপুর: সবজি খেতে ভালবাসেন না অনেকেই। কিন্তু, স্বাস্থ্যের জন্য পাতে সবজি থাকা খুবই প্রয়োজন। রোজকার একঘেয়ে পাঁচমিশালি সবজি মুখে রোচে না অনেকেরই। তবে সেই রোজকার সবজিতেই যদি একটু টুইস্ট আনা যায়, তাহলে কিন্তু মন্দ হবে না। সেরকমই পুরনো দিনের মা-ঠাকুমাদের হাতের একটি রান্নার রেসিপি কুমড়োর চাপড় ঘণ্ট। কীভাবে বানাবেন কুমড়োর এই চাপড় ঘণ্ট জানুন।
প্রথমেই চাল কুমড়ো কিনে এনে তা মাঝ বরাবর দু’টুকরো করে নিতে হবে। এরপর তা থেকে বেশ কয়েকটি টুকরো করে হাতের সাহায্যে পাতলা পাতলা করে কেটে নিয়ে ঝিরি ঝিরি করে নিতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে কুমড়ো যত ঝিরিঝিরি করে কাটা যাবে তত খেতেও বেশ সুস্বাদু হবে। অপরদিকে পরিমাণ মত মটর ডাল আগে থেকে উষ্ণ গরম জলে বেশ কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হবে এতে ডাল অনেকটাই নরম হয়ে যাবে। এরপর ডাল থেকে জল ঝরিয়ে নিয়ে ডালটা একটা মিক্সি জারে ঢেলে দিয়ে উপর থেকে সামান্য জল দিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে মিশ্রণটি যেন খুব পাতলা না হয়।
এরপর ডালের মিশ্রণটি একটি পাত্রে ঢেলে নিয়ে তাতে বেশ কিছুটা পরিমাণ হলুদ গুঁড়ো সামান্য নুন ও সামান্য লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে হাতের সাহায্যে মেখে নিতে হবে। এবার কড়াইতে সামান্য সর্ষের তেল দিয়ে হালকা নেড়ে নিয়ে তাতে ডালের মিশ্রনটি দিয়ে হাতের সাহায্যে চেপে চেপে দিতে হবে। এক পাশ ভাল মত ভাজা হয়ে গেলে কয়েকটা টুকরো করে আবার উল্টে পাল্টে বরার আকারে ভেজে নিতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে ডালের বরা মাঝারি হয়।
অপরদিকে আবারও কড়াইতে পরিমাণ মত সর্ষের তেল গরম করে তাতে মেথি ফোড়ন দিয়ে বেশ কয়েকটা চেড়া কাঁচালঙ্কা দিয়ে নেড়ে নিয়ে ঝিরি ঝিরি করে কাটা কুমড়ো দিয়ে দিতে হবে। এরপর উপর থেকে সামান্য হলুদ ও নুন দিয়ে হালকা উপর নীচ করে একটা পাত্র দিয়ে ঢাকা দিয়ে রাখতে হবে। বেশ কিছুক্ষণ পর ঢাকা তুললে দেখা যাবে কুমড়ো থেকে বেশ অনেকটা জল বেরিয়েছে। এরপর আবারও একটু নেড়ে-চেড়ে ঢাকা দিয়ে রাখতে হবে কিছুক্ষণ। এতে জলের সঙ্গে কুমড়ো বেশ ভালভাবেই সেদ্ধ হয়ে যাবে। কিছুক্ষণ পর ঢাকা তুলে জল শুকিয়ে এলে তাতে সামান্য চিনি দিয়ে নেড়েচেড়ে নিয়ে আগে থেকে ভেজে রাখা ডালের বড়া গুলো দিয়ে বেশ ভালভাবে কুমড়োর সঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে। সবশেষে ওপর থেকে সামান্য আদাবাটা ও বেশ কিছুটা পরিমাণ ঘি ঝরিয়ে নেড়ে-চেড়ে নামিয়ে নিলেই তৈরি গরমা গরম কুমড়োর চাপড় ঘণ্ট। দুপুর হোক বা রাত আবার ভাত হোক বা রুটি, এক বাটি কুমড়োর চাপড় ঘণ্টর সঙ্গে জাস্ট জমে যাবে। ঠাকুমার হাতে তৈরি পুরনো যুগের এই রান্নাই বাচ্চা থেকে বড় মন জয় করবে সকলের। সাফ হবে আপনার প্লেটের খাবার।
সুস্মিতা গোস্বামী