উত্তর ২৪ পরগনা: বয়স প্রায় ৭০-এর কাছাকাছি। এখনও নিয়ম করে সকালবেলায় পৌঁছে যান থানাতে। কারণ তাঁকে ছাড়া অশোকনগর থানার পুলিশের অস্বাভাবিক মৃত্যুর কোনও ঘটনারই কাজ হয় না।
অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটলে তবেই চলে হাবরা থানার অন্তর্গত বানীপুর এলাকার বাসিন্দা রবি দাসের সংসার। তিনি পুলিশের হয়েই কাজ করেন একরকম। তবে তার জন্য মেলে না কোনও নির্দিষ্ট পারিশ্রমিক।
পুলিশ কেসে মৃত ব্যক্তির আত্মীয় পরিজনদের কাছ থেকেই নিতে হয় সামান্য কিছু পারিশ্রমিক। এভাবেই দীর্ঘ প্রায় কুড়ি বছর ধরে এই কাজ করে আসছেন অশোকনগর থানার জন্য। তবে এখনও কোনো সরকারিভাবে সাহায্য পান না।
অস্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে পুলিশের হয়ে দেহ উদ্ধার করেন তিনি। বছরে পুজোর সময় পুলিশের তরফ থেকে মেলে নাম মাত্র কয়েক হাজার টাকা বোনাস, ব্যাস ওটুকুই। যেখানে সরকারের তরফ থেকে সিভিক ভলেন্টিয়ারদের ক্ষেত্রেও মাস মাইনের বন্দোবস্ত রয়েছে সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে থানার অস্বাভাবিক মৃত্যু সংক্রান্ত মামলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা এই রবি দাস পান না কোনরকম সরকারি বা পুলিশের থেকে পারিশ্রমিক।
আরও পড়ুন- ঘরের বাইরে পা রাখলে কামড়ের আতঙ্ক! আচমকাই দাঁত বসাচ্ছে ‘ক্ষ্যাপা’, রক্তাক্ত বহু
তবু পেটের দায়ে এই কাজ করতে হয় তাঁকে। এই কাজ করেই কোনওরকমে দিন গুজরান হয় তাঁর। বাড়ির একমাত্র রোজগেরে তিনিই। স্ত্রী, পুত্র, কন্যা-সহ তাঁদের পড়াশোনা, খাওয়া-দাওয়া সমস্ত কিছুই চলে রবি দাস এর সামান্য কিছু আয় থেকে।
কোন মাসে তিন-চারটে দেহ উদ্ধার হয়, কোনো মাসে তাও মেলে না। এই ভাবেই আজও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন পুলিশের হয়ে অস্বাভাবিক মৃত্যুর বডি উদ্ধারের কাজ করা রবি দাস।
আরও পড়ুন- শুক্রবার বিজেপির ‘সিঙ্গুর চলো’ শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে সেই এলাকাতেই মৌন মিছিল
তবে সরকারের তরফ থেকে যদি কিছু সাহায্য মিলত তা হলে বেশ কিছুটা উপকার হত, আক্ষেপ নিয়েই জানালেন রবি। এখন দেখার পুলিশ প্রশাসন বা সরকারের তরফ থেকে রবির মতো পুলিশের হয়ে কাজ করা কর্মীদের আদৌ মেলে কিনা কোনও স্থায়ী পারিশ্রমিক!
Rudra Narayan Roy