ব্যবসা-বাণিজ্য Income Tax: ১ লাখ টাকা বেতনে কত ট্যাক্স দিতে হবে জানেন? নতুন ট্যাক্স স্ল্যাব ভাল না কি ‘ওল্ড ইজ গোল্ড’ Gallery July 31, 2024 Bangla Digital Desk বাজেটে একাধিক কর ছাড়ের ঘোষণা করেছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের সীমা ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। পাশাপাশি নতুন কর কাঠামোয় বেশ কিছু পরিবর্তনও করেন তিনি। তবে বিভ্রান্তি কাটেনি। মাসিক ৫০ হাজার বা ১ লাখ টাকা বেতনে কত টাকা ট্যাক্স দিতে হবে বা কোন কর ব্যবস্থা সুবিধাজনক, বুঝে উঠতে পারছেন না অনেকেই। ২০২৩-এর বাজেট থেকেই নতুন ট্যাক্স ব্যবস্থা ডিফল্ট, অর্থাৎ করদাতা যদি পুরনো এবং নতুন কর কাঠামোর মধ্যে কোনও একটা বেছে না নেন তাহলে তাঁকে নতুন ট্যাক্স ব্যবস্থার আওতাতেই ফেলা হবে। এক্ষেত্রে বেতন যদি ৫০ হাজার টাকা হলে কোনও চিন্তা নেই। কারণ বার্ষিক আয় দাঁড়াচ্ছে ৬ লাখ টাকা। এর মানে তিনি ট্যাক্স ক্যাটাগরিতে আসেন না। মাসিক ১ লাখ টাকা বেতনে কোন কর ব্যবস্থা সুবিধাজনক: এখন প্রশ্ন হল, বেতন মাসে ১ লাখ টাকা হলে নতুন ট্যাক্স স্ল্যাব ভাল না কি ‘ওল্ড ইজ গোল্ড’? এর সরাসরি উত্তর হল, ১ লাখ টাকা বেতনে কোনও ট্যাক্স দিতে না চাইলে পুরনো কর ব্যবস্থাই বেছে নিতে হবে। তবেই তিনি বিভিন্ন জায়গায় বিনিয়োগ এবং রিইম্বারসমেন্টের উপর ট্যাক্স ছাড় দাবি করতে পারবেন। এর মধ্যে পরিবহন, এলটিএ, বিনোদন, ব্রডব্যান্ড বিল, জ্বালানি খরচ ইত্যাদি রয়েছে। সবার আগে এলটিএ-এর বিষয়টা দেখে নেওয়া যাক। এতে বেড়ানোর খরচ ধরা হয়। চার বছরে ২ বার এই সুবিধা মেলে। বেসিক স্যালারির ১০ শতাংশ এলটিএ হিসাবে পাওয়া যায়। অর্থাৎ ১২ লাখ টাকার বার্ষিক বেতনে বছরের বেসিক স্যালারি হবে ৬ লাখ টাকা। সুতরাং এলটিএ হবে ৬০ হাজার টাকা। গড়ে বার্ষিক ৩০ হাজার টাকা ছাড় পাওয়া যাবে। মেট্রো শহরে ৫০ শতাংশ এবং নন-মেট্রোতে ৫০ শতাংশ হারে এইচআরএ দেওয়া হয়। মোট ভাড়া থেকে মূল বেতনের ১০ শতাংশ কেটে নেওয়ার পরে যে পরিমাণ অবশিষ্ট থাকে তা এইচআরএ হিসাবে দাবি করতে পারেন করদাতা। এই পরিস্থিতিতে মেট্রো শহরে বসবাসকারী কোনও করদাতা ২০ হাজার টাকার মাসিক ভাড়ার উপর ১.৮০ লক্ষ টাকা এইচআরএ ছাড় পেতে পারেন। -রিইম্বারসমেন্টে কত ছাড় দাবি করা যায়: মাসিক ১ লক্ষ টাকা বা ১২ লক্ষ টাকার বার্ষিক বেতনে, পরিবহণ ভাতা ১-১.৫০ লক্ষ টাকা। যার মানে এই পরিমাণ সম্পূর্ণ অকরযোগ্য।-৭০০-১০০০ টাকার মাসিক ব্রডব্যান্ড বিলে ট্যাক্স ছাড় দাবি করা যেতে পারে। অর্থাৎ বার্ষিক ১২০০০ টাকা ট্যাক্স ছাড় দাবি করতে পারেন করদাতা।-১ লক্ষ টাকা মাসিক বেতনে প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা বিনোদন ভাতা দেওয়া হয়। অর্থাৎ এর আওতায় একজন করদাতা বছরে ২৪ হাজার টাকা করছাড় দাবি করতে পারেন। -অনেক কোম্পানি ইউনিফর্ম, বই বা পেট্রোল বিলে ভাতা দেয়। এর আওতায় বার্ষিক ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড় দাবি করতে পারবেন করদাতা।-মোট রিইম্বারসমেন্টের আওতায় ১.৯৮ লাখ টাকা পর্যন্ত করছাড় দাবি করা যায়।-বিনিয়োগ থেকে কত ছাড় মিলবে: একজন করদাতা ইপিএফ, পিপিএফ, সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা, এনপিএস, সন্তানের টিউশন ফি, এলআইসি, হোম লোন ইত্যাদি থেকে আয়করের ধারা ৮০সি-এর অধীনে ১.৫ লক্ষ টাকার বার্ষিক কর ছাড় পেতে পারেন। ধারা ৮০সিসিডি (১বি)-এর আওতায় এনপিএস-এ বিনিয়োগ থেকে অতিরিক্ত ৫০ হাজার টাকা কর ছাড় দাবি করা যায়। ধারা ৮০ডি-এর অধীনে স্বাস্থ্যবিমার উপর ২৫ হাজার টাকা এবং পিতামাতার স্বাস্থ্যবিমার উপর ২৫ হাজার টাকা কর ছাড় মেলে। অর্থাৎ মোট ৫০ হাজার টাকার কর ছাড়। অর্থাৎ বিনিয়োগ থেকে মোট ২.৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ছাড় পেতে পারেন করদাতা। তাহলে এখনও পর্যন্ত ১২ লাখ টাকা আয়ে সব মিলিয়ে ৭.০৮ লাখ টাকা করছাড় দাবি করা হয়েছে। হাতে কর যোগ্য আয় পড়ে থাকছে ৪.৯২ লাখ টাকা। এখন এখানে আয়করের আরেকটা নিয়ম প্রযোজ্য হবে। পুরনো কর কাঠামোয় করযোগ্য বেতন ২.৫ লাখ টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। এর উপর ৫ শতাংশ হারে ট্যাক্স চাপলে ১২,৫০০ টাকা কর দিতে হবে। আবার ৫ লাখ টাকা আয়ে ধারা ৮৭এ-এর আওতায় ১২৫০০ টাকা করছাড় পাওয়া যায়। তাহলে ১২,৫০০ – ১২,৫০০, অর্থাৎ এক পয়সা কর দিতে হচ্ছে না।