বীর বিষ্ণু শ্রেষ্ঠা

Indian Army: চলন্ত ট্রেনে ৪০ জন ডাকাতের সঙ্গে একক যুদ্ধে এক ভারতীয় সেনা! বাংলা সীমান্তের এই ঘটনা সাড়া ফেলে গোটা বিশ্বে

রাঁচি: হাতে মাত্র একটা খুকরি, সামনে প্রায় ৪০ জন দুর্ধর্ষ ডাকাত। মোকাবিলার জন্য প্রয়োজন অস্ত্র চালানোর দক্ষতা আর বুকে অনেকটা সাহস। আর সেই সাহস ছিল একজন ভারতীয় সেনার বুকে। হ্যাঁ ঠিকই পড়েছেন। চলন্ত ট্রেনের মধ্যে একজন নাবালিকার সম্মান বাঁচাতে ৪০ জন ডাকাতের সঙ্গে একাই লড়েছিলেন এই সেনা জওয়ান। ঘটনাটা খুব পুরনো না হলেও চিরকাল ভারতবাসীর মনে গেঁথে থাকবে। সেই জওয়ানের নাম বিষ্ণু শ্রেষ্ঠা। গোর্খা রেজিমেন্টের সৈন্য ছিলেন তিনি।

আজও ভারতীয় সেনাবাহিনী গোর্খা রেজিমেন্টের সৈন্যদের খুকরি নামক বাঁকানো ধারালো ছুরি দেওয়া হয়। এদের অসাধারণ বীরত্ব গোটা বিশ্বের কাছে বারংবার প্রশংসা কুড়িয়েছে। একবার এক তরুণীর সম্মান বাঁচাতে ৪০ জন ডাকাতের উপর গোর্খা জওয়ান বিষ্ণু শ্রেষ্ঠা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তাঁর হাতে অস্ত্র বলতে ছিল মাত্র একটা খুকরি। ঠিক কি হয়েছিল সেদিন? ঘন জঙ্গলে রাতের অন্ধকারের মধ্যে দিয়ে ছুটে চলছিল একটি এক্সপ্রেস ট্রেন। সেখানেই জানালার ধারে সিটে বসেছিলেন বিষ্ণু শ্রেষ্ঠা।

আরও পড়ুন: পৃথিবীর একমাত্র প্রাণী, যার মাথা কেটে দিলেও দিব্যি বেঁচে থাকতে পারে! এত চেনা প্রাণীটি, শুনলে বিশ্বাসই যেন হবে না

তার সহযাত্রীরা অনেকেই ছিলেন ঘুমের ঘোরে। ৩৫ বছরের এই গোর্খা সৈনিক পাকাপাকি সংসার জীবনের গণ্ডিতে প্রবেশ করতে ট্রেনে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন। হঠাৎ জঙ্গল পেরোতেই ট্রেনটি থেমে যায়। মাঝপথে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে যাত্রীদের। ওই কামরায় হুড়মুড়িয়ে ওঠে একদল ডাকাত। তাদের কারও হাতে তরোয়াল, কারও হাতে ভোজালি। তাদের সঙ্গে পেরে উঠবে না বলে সবাই একে একে তাদের জিনিস দিয়ে দিতে থাকেন। গয়না, ল্যাপটপ, মানিব্যাগ আরও কত কী। তখনও কিন্তু বিষ্ণু টুঁ শব্দ করেননি।

বিষ্ণুর পাশের সিটে এক পরিবার ছিল। সেখানে ছিলেন একজন ১৮ বছরের তরুণী, তাদের দিকে ডাকাতদের কুদৃষ্টি পড়তেই চুপচাপ থাকতে পারেননি তিনি। একাই খুকরি নিয়ে ডাকাতদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। বিষ্ণুর হাতে ডাকাত দলের তিনজন প্রাণ হারায়, আর ঘায়েল হয় ৮ জন। সেদিন বিষ্ণু মারাত্মক চোট পেয়েছিলেন, তবে তার সাহসের কাছে পিছু হটে ছিল ডাকাত দল। তার খুকরির জোরে প্রাণ বেঁচে ছিল ট্রেন যাত্রীদের।

এবার আসা যাক গোর্খা বাহিনীর কথায়। এই বাহিনী বিশ্বের অন্যান্য সেনাবাহিনী থেকে এক্কেবারে আলাদা। যুদ্ধের স্ট্র্যাটেজিও ভিন্ন। হাতে থাকে খুকরি। প্রয়োজন নেই গোলা বারুদের, জাস্ট একটা খুকরি হেরে যাওয়া যুদ্ধকে জিতিয়ে দিতে পারে এই দুর্ধর্ষ মারণাস্ত্রের ভয় পায় গোটা বিশ্ব। কথায় আছে, গোর্খারা মৃত্যুকে ভয় পায় না। কারণ গোর্খাদের হাতে রয়েছে খুকরি। সেদিন খুকরি দিয়ে চলেছিল একের পর এক মারণ কোপ, যার জন্য পিছু হটেছিল দুর্ধর্ষ ডাকাতেরা।