নয়াদিল্লি: ব্যস্ত প্ল্যাটফর্ম। লোকে লোকারণ্য। তার মধ্যে দিয়ে হনহন করে হেঁটে চলেছে দু’জন। পরনে নোংরা, তেলচিটে জামাকাপড়। হাতে দামি ব্রিফকেস। এমন পোশাক-আশাকের সঙ্গে দামি ব্রিফকেস একেবারে বেমানান। সন্দেহ হয় জিআরপি-র। সঙ্গে সঙ্গে থামতে বলে দু’জনকে, “এই… দাঁড়াও”।
কে কার কথা শোনে! যেন কিছুই হয়নি, কোনও কথাই কানে আসেনি, এমন ভঙ্গিতে এগিয়ে চলে দুই ব্যক্তি। জিআরপি-র সন্দেহ আরও বাড়ে। থামতে বলার পরও থামল না কেন? দৌড়ে গিয়ে দু’জনের পথ আটকায় জিআরপি কর্মীরা। দু’জনকে হেফাজতে নিয়ে শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ।
আরও পড়ুন– ইলেকট্রিক কেটলি নিয়ে ট্রেনে উঠেছিলেন মহিলা, খুলতেই বেরিয়ে এল কোটি টাকার মাদক!
কী নাম? কোথায় বাড়ি? এখানে কেন এসেছ? একের পর এক প্রশ্ন। কিন্তু কোনও প্রশ্নেরই স্পষ্ট উত্তর দেয় না তারা। সবই এড়িয়ে যাওয়া কথাবার্তা। সন্দেহ বাড়তে থাকে জিআরপি কর্মীদের। তখন দামি ব্রিফকেস খুলতে বলা হয় দু’জনকে। এবার শুরু হয় আরেক প্রস্থ নাটক। দুজনেই একবাক্যে বলে দেয়, চাবি হারিয়ে গিয়েছে। জিআরপি-ও নাছোড়। সাফ জানিয়ে দেয়, চাবি হারিয়ে গেলে তালা ভাঙতে হবে।
শেষ পর্যন্ত ব্রিফকেস খুলে দেয় তারা। আর ব্রিফকেস খুলতেই জিআরপি কর্মীদের চক্ষু চড়কগাছ। ভিতরে থরে থরে সাজানো দামি মোবাইল। সবই চোরাই। এরপরই দু’জনকে গ্রেফতার করে জিআরপি।
লখনউ রেলওয়ের পুলিশ সুপার প্রশান্ত ভার্মা জানান, যাত্রী নিরাপত্তায় ট্রেন ও স্টেশনে অপরাধমূলক ঘটনা রুখতে রেলের তরফে জোরদার প্রচার করা হচ্ছে। চলছে টহলদারি। সেই অনুযায়ী জিআরপি চারবাগ ও সার্ভিলেন্স সেলের যৌথ দল বরাবাঙ্কি স্টেশনের ৬/৭ নম্বর প্ল্যাটফর্মের শেষ প্রান্তে টয়লেটের পিছন থেকে দুই চোরকে গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন কোম্পানির ৪২টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। ধৃতরা হল অশোক নোনিয়া এবং বিজয়। দু’জনেই পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার বাসিন্দা।
জিজ্ঞাসাবাদে ধৃতরা জানিয়েছে, ট্রেন ও স্টেশনে ঘুমন্ত যাত্রীদের টার্গেট করত তারা। শিকারের ঘুমোনোর সুযোগ নিয়ে চলত হাতসাফাই। চুরির জন্য লখনউ, কানপুর ও গোরখপুর ট্রেনে বেশি উঠত তারা। চোরাই মোবাইল ফোন গ্রামে গিয়ে সস্তায় বিক্রি করত। বাজারের তুলনায় দাম কম হওয়ায় তৎক্ষণাৎ কিনে নিত সাধারণ মানুষ।