মুক্তিপণের দাবিতে উড়োফোন এসেছিল মা-বাবার কাছে, প্রায় তিন সপ্তাহ নিখোঁজ থাকার পরে আমেরিকায় চরম পরিণতি ভারতীয় ছাত্রের

নিউ ইয়র্ক: গত বছরেই উচ্চশিক্ষার জন্য মার্কিন মুলুকে পাড়ি দিয়েছিলেন হায়দরাবাদের এক ছাত্র। ওহায়োর ক্লিভল্যান্ডে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পঁচিশ বছর বয়সী ওই যুবকের নাম মহম্মদ আব্দুল আরফত। ২০২৩ সালে ক্লিভল্যান্ড স্টেট ইউনিভার্সিটিতে মাস্টার্স করার উদ্দেশ্যে বিদেশে গিয়েছিলেন তিনি।

মার্কিন মুলুকে পড়তে গিয়ে এর আগেও বহু বার ভারতীয় পড়ুয়াদের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। এবার সেই তালিকায় যোগ হল মহম্মদ আব্দুল আরফতের নামও। এমনিতে আমেরিকায় একের পর এক ভারতীয় পড়ুয়া এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত মানুষের রহস্যজনক মৃত্যুতে উদ্বেগ বাড়ছে ভারতীয়দের মধ্যে।

আরও পড়ুনMurder: স্ত্রীকে খুন করে ২০০টা টুকরো..তারপরেই গুগলে সার্চ! জানেন কী নিয়ে..গায়ে কাঁটা দেবে এই বীভৎস হত্যাকাণ্ডের পুরো ঘটনা শুনলে

মঙ্গলবার এক্স প্ল্যাটফর্মে একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের মাধ্যমে নিউ ইয়র্কের ভারতীয় দূতাবাসের তরফে জানানো হয়েছে যে, প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে নিখোঁজ থাকার পরে ওই ছাত্রের দেহ উদ্ধার হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া সাইট এক্স-এর পোস্টে দূতাবাসের আধিকারিকরা জানান, “মহম্মদ আব্দুল আরফত নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়ে বিচলিত হয়ে তাঁর খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়। অবশেষে ওহায়োর ক্লিভল্যান্ডে তাঁকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। মহম্মদ আরফতের পরিবারের জন্য আমাদের গভীর সমবেদনা। এর পাশাপাশি নিউ ইয়র্কের ভারতীয় দূতাবাস স্থানীয় এজেন্সিগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে, যাতে ওই ছাত্রের মৃত্যুর তদন্ত ঠিকঠাক ভাবে হয়। মৃত ছাত্রের মৃতদেহ যাতে নিরাপদে ভারতে পৌঁছয়, তার জন্যও পরিবারের দিকে সমস্ত সম্ভাব্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।”

আরও পড়ুন: আগে গ্যারান্টি দাও, দেশ বেচবে না!’, মোদিকে নিশানা করে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন মমতা

গত মাসে আরফতের মা-বাবা জানিয়েছিলেন যে, পুত্রের নিরাপত্তার খাতিরে এক লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তাঁদের কাছে উড়োফোন এসেছিল। ফোনের ও-প্রান্তে থাকা এক ব্যক্তি দাবি করে, ২৫ বছর বয়সী ওই ছাত্রকে অপহরণ করা হয়েছে। এমনকী দাবি অনুযায়ী মুক্তিপণ না পেলে ওই ছাত্রের কিডনি বিক্রি দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিল অপহরণকারীরা।

সংবাদমাধ্যমের কাছে আরফতের বাবা মহম্মদ সালিম বলেন যে, তাঁর পুত্রের মুক্তির জন্য অপহরণকারীরা তাঁর থেকে ১২০০ ডলার দাবি করে। অথচ কীভাবে সেই মুক্তিপণ দিতে হবে, সেই ব্যাপারে কিছুই জানায়নি তারা।

মৃত পড়ুয়ার বাবার কথায়, “ও আমার একমাত্র পুত্র। ও বলেছিল যে, আমাদের আর ওর বন্ধুদের খুব মিস করছে। সেই কারণে বাড়িতেও ফিরতে চেয়েছিল। আমি ওকে বলেছিলাম, ছুটি পড়লে বাড়ি আসার কথা। প্রয়োজন বলে বিমান ভাড়াও আমি পাঠানোর কথা বলেছিলাম। গত ৭ মার্চ শেষ বারের মতো ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছিল। তা-ও মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য। এরপর দিন ও ওর বন্ধুকে ফোন করে কথা বলেছিল। আমাকে বলা হয়েছে যে, একজন গোয়েন্দা (পুলিশ অফিসার) এই ঘটনাটি খতিয়ে দেখছেন।” মার্কিন কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, আরফতকে শেষ বার যখন দেখা গিয়েছিল, তখন তাঁর পরনে ছিল একটি সাদা টি-শার্ট, ব্লু জিনস এবং লাল জ্যাকেট।