নয়াদিল্লি: সে দিনের মিউজিক ফেস্টিভ্যালে উপস্থিত ছিলেন ইজরায়েলি তরুণী শিরেল গোলানও। হামাসের হাত থেকে ভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। ২২ বছরের জন্মদিনে নিজের বাড়িতেই আত্মহত্যা করলেন তিনি।
পরিবারের দাবি, হামাসের আক্রমণের সময় কোনওরকমে পালিয়ে যান শিরেল। কিন্তু চোখের সামনে সেই নৃশংস হত্যাকাণ্ড দেখার পর থেকেই পোস্ট ট্রমাটিক ডিসঅর্ডারে ভুগছিলেন। এক বছর এভাবেই কাটে। ২০ অক্টোবর ছিল তাঁর জন্মদিন। সেদিন পোরার নিজের বাড়িতে আত্মহত্যা করেন শিরেল।
জন্মদিনে সপরিবারে ওয়েস্টার্ন ওয়াল এবং প্যাট্রিয়ার্কসের গুহা দেখতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই সব শেষ। মেয়ের আত্মহত্যার জন্য ইজরায়েলি সরকারকে তুলোধনা করেছে শিরেল গোলানের পরিবার। তাঁদের দাবি, পোস্ট ট্রমাটিক ডিসঅর্ডার কাটাতে শিরেলের মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু ইজরায়েলি সরকার কোনওরকম সাহায্য করেনি।
সংবাদমাধ্যমকে শিরেলের ভাই ইয়াল বলেছেন, “ঘটনার পর থেকেই পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেসের সমস্ত লক্ষণ ফুটে উঠেছিল। বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে মিশত না। নিজেকে সব কিছু থেকেই দূরে সরিয়ে নিয়েছিল। আমি সবসময় শরীরের যত্ন নিতে বলতাম। কিন্তু সরকার কোনও সাহায্য করেনি। আজ যদি সরকার পাশে দাঁড়াত, তাহলে এই দিন দেখতে হত না।”
বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সরকারকে তোপ দেগে ইয়াল আরও বলেন, “এই সরকার আমার বোনকে দু’বার খুন করেছে। প্রথমবার অক্টোবরে, মানসিকভাবে। আর আজ দ্বিতীয়বার, শারীরিকভাবে।” তিনি বলছেন, রাষ্ট্রকে “জাগানোর” প্রয়োজন, নাহলে এরকম আত্মহত্যা আরও হবে। ইয়ালের কথায়, “আমি বোনকে হারিয়েছি। কিন্তু আর কেউ যেন তাঁর প্রিয়জনকে না হারায়, তা সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে।”
মিউজিক ফেস্টিভ্যাল থেকে বেঁচে ফেরার পর দু’বার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন শিরেল। এক সপ্তাহ পর থেকেই তাঁর মধ্যে পোস্ট ট্রমাটিক ডিসঅর্ডারের লক্ষণগুলো ফুটে উঠতে শুরু করে। ইয়াল বলছেন, “নিজেকে একদম গুটিয়ে নিয়েছিল। সরকারের কাছে সাহায্য চাইতে বলেছিলাম। বলেছিল, সরকারের কাছে সাহায্যের আর্জি জানিয়েও লাভ হয়নি। যেটুকু সাহায্য করেছে সেটা নোভা কমিউনিটি অ্যাসোসিয়েশন।”
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইজরায়েলের নোভা মিউজিক ফেস্টিভ্যালে হামলা চালিয়েছিল হামাস। এলোপাথাড়ি গুলিতে মৃত্যু হয় ৩৬৪ ইজরায়েলির। অপহরণ করা হয় কয়েক ডজন তরুণীকে। কোনওরকমে প্রাণে বাঁচেন শিরেল গোলান এবং তাঁর সঙ্গী আদি। কিন্তু নৃশংস হত্যাকাণ্ড দেখার পর থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। অবশেষে নিজের বাড়িতেই আত্মহত্যা করলেন তিনি।