হাওড়া: পুজো মণ্ডপে বাংলার ১৪ ভূত! ভূত চতুর্দশীর পরের অমাবস্যায় এই বাংলায় মা কালীর আরাধনার রীতি সে কাল থেকে। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোর পর দ্বিতীয় বড় উৎসব বলা যেতে পারে বাঙালির কালী পুজো। সারা বাংলা জুড়ে কালীপুজো নিয়ে মানুষ মেতে উঠলেও দক্ষিণবঙ্গ কালী ক্ষেত্র নামে পরিচিত। তাই দক্ষিণবঙ্গে সর্বত্রই কালীর আরাধনা কালী মন্দির রয়েছে। সারা বছর কালীর আরাধনা অনুষ্ঠিত হয়। তেমনি আবার দুর্গাপুজোর পর অমাবস্যায় অনুষ্ঠিত হয় দীপান্বিতা কালীপুজো। এদিন জাঁকজমক পূর্ণ মা কালীর আরাধনায় মেতে ওঠে সারা বাংলার মানুষ। কালী পুজোর আলোর উৎসবে বর্তমান সময়ে থিমের মণ্ডপ ও প্রতিমা। আর এই ছবি প্রায় অধিকাংশ মণ্ডপে। এবার হাওড়া কলা বাগান বটতলা শিব মন্দির কমিটির পুজো মণ্ডপে চৌদ্দ ভুতের থিম।
আরও পড়ুনঃ ১০ দিনেই ধরাশায়ী যন্ত্রণা! ১টি পাতা রক্ত থেকে ছেঁকে বের করবে ইউরিক অ্যাসিড! আরাম পাবেন ব্যথা থেকে
আসলে কালীপুজোর সঙ্গে অতপ্রতভাবে জড়িয়ে বাংলার ভূত ও ভূতের নানা কাহিনী। একসময় বাংলার শৈশব মানে কৌতূহলের নানা ভূতের কাহিনী। কালের নিয়মের সেসব যেন অতীত। পুরনো সেই শৈশবকে ফিরিয়ে দিতে মণ্ডপ জুড়ে শাকচুন্নি, ব্রহ্মদত্তি, কন্দ কাটা, মেছো ভুতের মত নানা চরিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। আর এতেই ছেলে বুড়োর মন মজেছে। ভৌতিক নির্দেশন এর কারুকার্যের মাধ্যমে সুসজ্জিত হবার ঘটনা এই প্রথম নয় শহরতলির বুকে।
বাংলার ভূতের কাহিনী এই পুজো মণ্ডপে ভিন্ন প্রচেষ্টায় মানুষের কাছে গ্ৰাম বাংলার মাটির কাছাকাছি পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা। আলোক ঝলমলে শহরের মধ্যে অমাবস্যার রাত আচ্ছা আলোর পুজো মণ্ডপ এবার শহরবাসীর অন্যতম আকর্ষণে। এখানে যেমন ভৌতিক পরিবেশ রয়েছে। একই সঙ্গে এই বাংলার ১৪ ভূতের যে মাহাত্ম্য ও ভুতুড়ে গল্প বিশেষ যা ছোট থেকে ঠাকুমা দিদিমার কাছে শুনে বড়ো হওয়া, তা তুলে ধরা। বিশেষত এই নব প্রজন্মের কাছে যারা বর্তমান যুগে বৈদেশিক হ্যালুয়েনশের ভীড়ে আধুনিকতার ছোঁয়ায় ভুলতে বসেছে বাংলার ১৪ ভূত ও ভূতচতুর্দশীর ইতিহাস।
মূলত পুরো মণ্ডপটিকে গ্ৰাম বাংলার ভৌতিক পরিবেশের রূপে রাপান্তরিত করতে হোগলা পাতা,খড়, শুকনো গাছের ডাল, কাঁচা বাঁশ, ভাঙা লাল ইটের টুকরো সহ মাটির প্রলেপ। এবং মূল আকর্ষণ হিসেবে বাঙালির প্রতিটি ১৪ ভূতের নির্দশন থাকছে বর্ণনা সমেত। একদম প্রথম সারিতে ব্রক্ষ্মাদৈত্য থেকে শুরু করে পেত্মী, শাঁকচুন্নী ও অন্যান্য সকল ভূতের মাহাত্ম্য নিয়ে ভয়ানক গা ছমছমে এক পরিবেশে শক্তির আরাধনা।এ প্রসঙ্গে উদ্যোক্তা প্রীতম দাস জানান, প্রতিবছর হাওড়া কলা বটতলার কালীপুজোয় থিমের মণ্ডপ। গ্রাম বাংলার বিভিন্ন থিম এর দিক গুরুত্ব দেওয়া হয় মণ্ডপে সাজে। তখনও মণ্ডপ সজ্জার কাজ বেশ খানিকটা বাকি। শহরের ছেলে বুড়ো ভিড় জমাতা শুরু করেছে এই মণ্ডপে।
রাকেশ মাইতি