রুদ্রনারায়ণ রায়, উত্তর ২৪ পরগনা: সীমান্ত শহর বনগাঁর ইতিহাস বহু পুরনো। দেশভাগের ক্ষত নিয়ে বহু মানুষ এই শহরে আশ্রয় নেন। তারপর থেকে ক্রমেই আধুনিকতার ছোঁয়া লাগে প্রান্তিক এই এলাকায়। তবে বনগাঁর ইতিহাস ঘাঁটলে যেমন উঠে আসে সে সময়ের ত্রাস ধরানো ডাকাতের ঘটনা। তেমনই ইতিহাসকে সঙ্গী করে আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে ডাকাতদের পরম আরাধ্যা এই কালীমন্দির ‘সাত ভাই কালীতলা’ । বন-জঙ্গলে ঘেরা বট গাছের নীচে প্রতিষ্ঠিতএই কালীমূর্তি। সেই থেকে চলে আসছে বনগাঁর সাত ভাই কালীতলার পুজো।
কথিত, অবিভক্ত বাংলার যশোরের জমিদার বাড়িতে ডাকাতি করতে যায় সাতজন ডাকাতের একটি দল। সম্পর্কে তারা ছিল আপন ভাই। ডাকাতি করে ফেরার পথে কালীমূর্তিও সঙ্গে করে নিয়ে আসে তারা। বর্তমান উত্তর ২৪ পরগনা জেলার পুরাতন বনগাঁর ইছামতী নদীর ধারে জঙ্গল ঘেরা বটগাছের নীচে কালীমূর্তি স্থাপন করা হয়। দেবীপুজোর জন্য ডাকাত দল পুরোহিতের খোঁজে বের হয়। স্থানীয় এক চক্রবর্তী পুরোহিতকে খুঁজে পায়। তাঁরাই বংশ-পরম্পরায় পুজো করে আসছেন। পুজো শুরু হয় আনুমানিক প্রায় ৪০০ বছর আগে। জাগ্রত পুরাতন বনগাঁর এই কালী মন্দির সাত ভাই কালীতলা নামে পরিচিত।
মন্দিরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বাজার, কমিউনিটি হল এবং স্কুল। সারা বছরই থাকে ভক্তদের ভিড়। পৌষ মাসে হয় মেলা। কালীপুজোর আগে তাই সেজে উঠছে গোটা মন্দির চত্বর। জেলা-সহ নানা প্রান্ত থেকে মানুষজন আসবেন এই মন্দিরের মাকে দর্শন করতে। মায়ের কাছে কোনও কিছু চাইলেই ফেরার না মা, দাবি ভক্তদের। তাই সারা বছরই এই সাত ভাই কালীতলা মায়ের কাছে আসেন ভক্তরা।