রানা কর্মকার, ডানকুনি: জেপিসি-র বৈঠকে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে কী নিয়ে বচসা তৈরি হয় কার? কীভাবে হাত কেটে রক্তাক্ত হয়েছিলেন তিনি? শেষ পর্যন্ত মুখ খুললেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়৷ শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদের পাল্টা অভিযোগ, তমলুকের বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ই প্রথমে তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে উদ্দেশ্য করে অশ্লীল মন্তব্য করেন৷ জেপিসি-র চেয়ারম্যানের দিকে বোতল ছুড়ে মারার অভিযোগও অস্বীকার করেছেন কল্যাণ৷
গত ২২ অক্টোবর ওয়াকফ নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটির বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তমলুকের সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এর মধ্যেই বোতল ভেঙে হাতে চোট পান কল্যাণ। আহত তৃণমূল সাংসদের হাতে ৪টে সেলাই পড়ে৷ কমিটির চেয়ারম্যান জগদম্বিকা পাল অভিযোগ করেন, তৃণমূল সাংসদই বৈঠকে অভব্য আচরণ করেন এবং তাঁর দিকে বোতল ছু়ড়ে মারেন৷
আরও পড়ুন: বাংলার প্রবীণদের কাছে ক্ষমা চাইলেন মোদি! নতুন স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্প নিয়েও জট?
মঙ্গলবার হুগলির ডানকুনিতে একটি কালীপুজোর উদ্বোধনে গিয়ে এই ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেন কল্যাণ গঙ্গোপাধ্যায়৷ শ্রীরামপুরের সাংসদ বলেন, ‘আমি মা কালীর ভক্ত ।মাই আমাকে সবকিছুর ক্ষমতা দেন। তাঁর ক্ষমতার জন্য সব কিছু করতে পারি। জেপিসি-র বৈঠকের কথা বাইরে বলা যায় না। কিন্তু যেহেতু চেয়ারম্যান এবং অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আমার বিরুদ্ধে অনেক মন্তব্য করেছেন, সেই কারণেই আমি এই মঞ্চ থেকে মুখ খুলছি৷ এর আগে ৩০ থেকে ৪০টা মিটিং হয়েছে। সব সময় বিজেপির সদস্যরা আমাদের উপর খুব ঝামেলা করেন। আমাদের বিরুদ্ধে মামলাও করেছে৷ নোংরামির চূড়ান্ত চলছে। গত মঙ্গলবারের বৈঠকে কংগ্রেসের এক সাংসদের সঙ্গে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কথা কাটাকাটি চলছিল। তখন আমি সেই সময় বলি এত চিৎকার করছেন কেন? এটা বলার পরেই উনি আমাকে অত্যন্ত নোংরা ভাষায় গালিগালাজ করেন। আমার মা, বাবা, এমন কি আমার স্ত্রীকে নিয়েও গালিগালাজ করেন। হাইকোর্টের একজন প্রাক্তন বিচারপতি ছিলেন, তাঁর এই মুখের ভাষা?’
কল্যাণ গঙ্গোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, প্রতিবাদ করলে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁকে মারার হুমকিও দেন৷ কল্যাণ দাবি করেন, ‘এই ঘটনার সময় চেয়ারম্যান ঘরে ছিলেন না৷ তৃণমূল সাংসদ বলেন, আমার হাতে জলের বোতল ছিল সেটাকে আমি টেবিলে ঠুকি। হাত দিয়ে যখন রক্ত বেরোয় তখন বোতল ছেড়ে দিলে সেটা গড়াতে গড়াতে চলে যায় । তাঁরা অভিযোগ করেছেন, আমি নাকি মারতে গিয়েছিলাম । আমি কোনও বোতল ছু়ড়িনি । বোতল ছুড়লে যার দিকে ছুড়ব তাঁর মাথাতেই লাগবে। আমি চেয়ারম্যানকে বলেছিলাম আমার কোনও উদ্দেশ্যই ছিল না তাঁকে বোতল ছোড়ার। আমি দুঃখিত এ কথাও বলেছিলাম।’
যদিও বিজেপি সাংসদ এবং জেপিসি চেয়ারম্যান জগদম্বিকা পাল অভিযোগ করেছিলেন, ইচ্ছাকৃত ভাবেই তাঁর দিকে বোতল ছুড়ে মারেন তৃণমূল সাংসদ৷