Kanchenjunga Express accident: ‘শোওয়ানো দেহগুলোর মাঝে রাখা…’! ঘরে ফিরলেন না স্ত্রী, ট্রেনে চেপে বসতেই সব শেষ

পূর্ব বর্ধমান: চাপার কথা ছিল হলদিবাড়িতে। কিন্তু সেই ট্রেন ছিলনা ! অগত্যাই ট্রেন না পেয়ে বাড়ি ফেরার জন্য চাপতে হয়েছিল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে। আর তারপরই প্রাণ হারাতে হল পূর্ব বর্ধমানের গৃহবধূকে। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় এবার প্রাণ হারাতে হল পূর্ব বর্ধমান জেলার এক গৃহবধূকে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই গৃহবধূর নাম বিউটি বেগম। তাঁর বয়স প্রায় ৪৩। জানা গিয়েছে , মৃত বিউটি বেগম পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইটাচাঁদা এলাকার বাসিন্দা।

মৃত বিউটি বেগমের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বিউটির স্বামী শিলিগুড়িতে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। একমাস সেখানেই ছিলেন বিউটি বেগম নামে ওই গৃহবধূ। সোমবার সকালে তিনি নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে ট্রেন ধরে গুসকরায় ফিরছিলেন। কিন্তু ভয়াবহ দুর্ঘটনায় তাকে প্রাণ হারাতে হল। দুর্ঘটনার পর জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে স্ত্রীর মৃতদেহ সনাক্ত করেছেন স্বামী হাসমত শেখ। সূত্রের খবর, ময়নাতদন্তের পর দেহটি গুসকরায় নিয়ে আসা হচ্ছে।

পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা শহরের ইটাচাঁদার বাসিন্দা হাসমত শেখের, এক ছেলে এবং এক মেয়ে। ছেলে বিশাল শেখ কেরালায় কাজ করেন। মেয়ে সুইটি খাতুনের একমাস আগেই বিয়ে হয়েছে। মেয়ের বিয়ের পর বিউটি বেগম তাঁর স্বামীর কাছে গিয়েছিলেন। মৃত বিউটির স্বামী হাসমত শিলিগুড়িতে ঘরভাড়া নিয়ে থাকেন। আর সেখানেই ছিলেন তাঁর স্ত্রী। এই প্রসঙ্গে মৃত বিউটি বেগমের স্ত্রী হাসমত শেখ বলেন, “আমার স্ত্রীকে সকালে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে ছেড়ে দিয়ে চলে গিয়েছিলাম। ওর হলদিবাড়ি এক্সপ্রেস ট্রেন ধরার কথা ছিল। কিন্তু পরে জানতে পারি ওই ট্রেনটি ছিল না। তাই কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে চেপেছিল। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে স্ত্রীর মোবাইলে ফোন করছিলাম। কিন্তু বারবার সুইচ অফ বলছিল। এরপর দুপুর নাগাদ জলপাইগুড়ি হাসপাতালে আসি। স্ত্রীর ছবি দেখাই। তারপর শোওয়ানো দেহগুলোর কাছে গিয়ে আমার স্ত্রীর দেহটি দেখতে পাই।”

হাসমত শেখ আরও জানিয়েছেন, এদিন সোমবার ভোরে ঘুম থেকে উঠে তার জন্য রান্না করে দিয়েছিলেন বিউটি বেগম। কিন্তু নিজে সেই খাবার খাননি। সকালে স্টেশনে এসে স্ত্রীর জন্য ফল ও বিস্কুটও কিনে দিয়েছিলেন হাসমত। তারপর তিনি নিজের কাজে চলে যান। আর পরবর্তীতেই কানে আসে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কথা। হাসমতের কথায় , হলদিবাড়ি এক্সপ্রেস ট্রেন থাকলে হয়তো তার স্ত্রীকে প্রাণ হারাতে হতনা।

বনোয়ারীলাল চৌধুরী