কলকাতা: উত্তর-দক্ষিণ হোক বা পূর্ব-পশ্চিম, নানা দিকে স্রেফ মেট্রো রুটে সংযুক্ত। এখনও কাজ চলছে আরও বেশি রুট সংযোগের জন্য। দমদম থেকে টালিগঞ্জ, যা এখন দক্ষিণেশ্বর থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত বিস্তৃত, সেই রুটই এই মুহূর্তে সবচেয়ে ব্যস্ততম। আর সেখানে যাতায়াতের সময় ঘটে যাচ্ছে দুর্ঘটনা। মেট্রোরেলের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে। কলকাতা মেট্রোয় আত্মহত্যা রুখতে কেন্দ্রের সাহায্য চেয়ে, লোকসভার স্পিকারকে চিঠি দিলেন দক্ষিণ কলকাতার সাংসদ মালা রায়। এরই মধ্যে তার সংসদীয় কেন্দ্রের মধ্যে কালীঘাট স্টেশনে বসল গার্ডরেল। ব্লু লাইনে আত্মহত্যা রুখতে পদক্ষেপ নিল কলকাতা মেট্রো। কালীঘাট স্টেশনে বসানো হল গার্ডরেল। ৪ ফুট উচ্চতার গার্ডরেল দিয়ে ঘেরা হল স্টেশন, যাতে সহসা কেউ প্ল্যাটফর্ম থেকে স্টেশনে ঝাঁপ দিতে না পারে।
একটি মেট্রো প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৭৫ মিটার। এর মধ্যে ৫.৭ মিটার দূরত্বে গার্ডরেল বসতে চলেছে। প্ল্যাটফর্মে যেখানে মেট্রোর দরজা খোলা বন্ধ হয়, সেখানে ফাঁক থাকবে। ফলে যাত্রীদের অনেকের প্রশ্ন সেই ফাঁক গলে যে কেউ যে কোনও সময় লাইনে নেমে পড়তে পারেন। আবার গার্ডরেল যে উচ্চতার করা হয়েছে তা স্বাভাবিক উচ্চতার একজন মানুষের কোমর সমান। ফলে যে কেউ সেটাও টপকাতে পারবেন। তাই যাত্রীরা এর উদ্দেশ্য বুঝে উঠতে পারছেন না।
কালীঘাট মেট্রো স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম জুড়ে দেখা গেল অভিনব ছবি। প্ল্যাটফর্ম জুড়ে বসানো হয়েছে গার্ড রেল। আপ এবং ডাউন লাইন বরাবর গোটা প্ল্যাটফর্ম জুড়েই বসানো হয়েছে এই গার্ড রেল । প্ল্যাটফর্মে ট্রেন থামলে যেখানে মেট্রোর দরজা পড়ে, সেই অংশটুকু ফাঁকা রেখে ওই গার্ড রেল বসানো হয়েছে। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন যাত্রীদের একাংশ । তাঁদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে যে ভাবে মেট্রোর লাইনে একের পর এক ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে চলেছে, তা রুখতে এই পদক্ষেপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদিও এই বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন যাত্রীদের একটা অংশ। তাঁদের অভিযোগ, গার্ড রেল বসানোর পরে কোনও মেট্রোর রেক যদি একটু এগিয়ে বা পিছিয়ে দাঁড়ায়, তা হলে ওঠানামার ক্ষেত্রে খুবই সমস্যা হচ্ছে। আপাতত সাতটি গার্ডরেল বসে গিয়েছে কালীঘাট মেট্রো স্টেশনে।
মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানিয়েছেন, আমাদের কাজ মানুষকে সচেতন করা। আমরা সেই কাজ করছি। আশা করছি গার্ডরেল লাইনে নেমে পড়া বা ঝাঁপ দেওয়ার প্রবণতা ঠেকাবে। আমরা সচেতনতা প্রচারও চালাব। সাংসদ মালা রায় অধ্যক্ষকে পাঠানো তার চিঠিতে প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর বসানোর কথা বলেছেন। কিন্তু ব্লু লাইন মানে পুরনো মেট্রোয় তা সম্ভব নয় বলেই জানাচ্ছে মেট্রো।বুধবারই চাঁদনি চকে মেট্রোর সামনে ঝাঁপ আত্মহত্যা করেন স্কুল ফেরত এক শিশুর মা। ইমারজেন্সি ব্রেক কষে ট্রেন থামালেও শেষরক্ষা হয়নি। ট্রেনের চাকায় ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় ওই তরুণীর দেহ। এইরকমই, গত কয়েক মাসে মেট্রোয় একের পর এক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। এর জেরে দীর্ঘক্ষণ পরিষেবা ব্যাহত হয়।