কলকাতা: মালদা, মুর্শিদাবাদে গঙ্গা ভাঙ্গন চিন্তা বাড়িয়েছে প্রশাসনের।কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলেছে রাজ্য। এবার কল্যাণী থেকে ফলতা অবধি গঙ্গার ভাঙ্গন নিয়ে বিশেষ নজর কেন্দ্রের।কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ এবার এই দীর্ঘ পথে ভাঙ্গনের কারণ বুঝতে আই আই টি খড়গপুরকে সমীক্ষার দায়িত্ব দিল।কল্যাণীর কাছে একটা অংশে বন্দর কর্তৃপক্ষ ভাঙ্গন প্রতিরোধে কাজ করছে।আর ফলতার কাছে ভাঙ্গন চিন্তায় রেখেছে বন্দরকেও। কলকাতা পুরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডে জনবহুল এলাকায় গঙ্গার ভাঙনে ছাদ হারিয়েছে একাধিক পরিবার।
গঙ্গার গতিপথও বদলে গিয়েছে একাধিকবার। আগামীতে গঙ্গার গতিপথ যে পরিবর্তন হবে না এমনটা নিশ্চিত করে বলা যায় না। আবার জোড়াবাগান এলাকাতেও এই সমস্যা বারবার উঠে এসেছে। উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতায় গঙ্গা বা হুগলি নদীর তীরে বারবার সমস্যা হয়েছে ভাঙ্গনকে ঘিরে। এমনকি গোডাউন বা বাড়ি জলের তলায় চলে যেতে পারে এই ভয়ও তৈরি হয়েছে। ভাঙনের মোকাবিলা এবং নদীর গতিপথ বদল নিয়ে যে কলকাতা বন্দরের সঙ্গে যৌথভাবেই কলকাতা পুরসভা কাজ করতে চায় বহুবার এই প্রসঙ্গে কথা হয়েছে।
বন্দরের আধিকারিকরা মনে করছেন, বিশ্ব উষ্ণায়নে ক্রমশ গঙ্গার জলস্ফীতি ঘটছে। ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সংখ্যাও বাড়ছে। কলকাতার আশপাশে গঙ্গার পাড় গড়ে উঠেছে প্রাকৃতিক নিয়মে। গঙ্গার পলিমাটি জমে তৈরি হয়েছে বাঁধ। সেই বাঁধ ততটা শক্তপোক্ত নয়। তাই ভাঙনের আশঙ্কা বেশি। যেহেতু এই অংশে প্রতিদিন জোয়ার, ভাটা হয়, তাই রোজ পাড় ভাঙছে। হঠাৎ করে যদি কোনও দিন গঙ্গায় জলস্ফীতি হয়, তা হলে পাড় ভেঙে কলকাতা শহরে জল ঢুকে যাওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।’কলকাতা বন্দরের চেয়ারম্যান রথীন্দ্র রমণ জানিয়েছেন, “বন্দরের সার্ভে টিম প্রতিনিয়ত নানা ভাবে তথ্য যোগাড় করে। কলকাতায় জোড়াবাগান ও বেশ কয়েকটি জায়গায় ভাঙ্গনের বিষয় আমাদের নজরে এসেছে। আমরা সেখানে খড়গপুর আইআইটি’র সাহায্য নিচ্ছি। এছাড়া আমরা কল্যাণীর কাছে ভাঙ্গন প্রতিরোধে একটা কাজ হাতে নিয়েছি। সেটা ডিসেম্বর মাসে শেষ হয়ে যাবে।”
হুগলির ত্রিবেণী থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের গেঁওখালি পর্যন্ত প্রায় ১১৪ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে হুগলি নদীর পাড়ে ভাঙনের কারণ জানতে বিশদে সমীক্ষা হবে। গঙ্গার পাড় ভেঙে যে সব জায়গায় ভবিষ্যতে বন্যা হতে পারে, সেই এলাকাগুলি শনাক্ত করা হবে। হুগলি নদীর পাশাপাশি তার সংযোগকারী বিভিন্ন নদ-নদী ও খালের অবস্থাও সরেজমিনে খতিয়ে দেখা হবে। এই সব এলাকায় সারা বছর আবহাওয়া কেমন থাকে, তার উপরও স্টাডি করা হবে। পাশাপাশি বিশ্লেষণ করা হবে গত ২৫ বছরের আবহাওয়ার রিপোর্টও। বিশ্বব্যাঙ্কের ঋণের টাকায় এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।