‘প্রয়োজনে হুইলচেয়ারে ঘুরব…’, হাসপাতাল থেকে প্রথম বার্তা মমতার

#কলকাতা: তিনি আহত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উত্তাল হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। পথে নেমে পড়েছেন তৃণমূল কর্মীরা। এই আবহে এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডের সাড়ে বারো নম্বর কেবিন থেকে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে প্রথম ভিডিও বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শরীরে ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট, গলার স্বরও ম্রিয়মান। তবু দামাল নেত্রী বরাবরের মতোই পথে নামার বার্তা দিলেন। বললেন, কোনও কর্মসূচি বাতিল করবেন না। প্রয়োজনে হুইলচেয়ারে বসে সভা করবেন। পাশাপাশি দলীয় কর্মীদের শান্ত থাকার বার্তাও দিলেন মমতা।

মমতা এদিন বলেন, “আমার কর্মী ভাইবোন ও সাধারণ মানুষকে বলছি. আমার কাল খুব জোরে লেগেছিল। মাথায় ও বুকে ব্যথা লাগে। বনেটের উপর দাঁড়িয়ে নমস্কার করছিলাম। তখন এমন জোরে চাপ আসে, আমার গাড়িটা চেপে যায় পায়ে। তখনই সঙ্গে যে ওষুধ ছিল তা খেয়েই কলকাতায় রওনা হই। সকলকে অনুরোধ করব শান্ত থাকুন, ভালো থাকুন। এমন কিছু করবেন না যাতে মানুষের অসুবিধে হয়। আশা করি দুতিন দিনে কাজে ফিরব পায়ের সমস্য়া থাকবে ম্যানেজ করে নেবো। আগামী দিনে আমার প্রোগ্রাম বাতিল হবে না। হয়তো হুইল চেযারে ঘুরতে হবে।” অর্থাৎ আগামী দুতিনদিনেই প্রচারে ফিরছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সব ঠিক থাকলে  ১২ মার্চ পুরুলিয়ায় মঞ্চে থাকবেন তৃণমূল সুপ্রিমো।

বুধবার সন্ধ্যায় নন্দীগ্রামে আহত হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করেন, চার পাঁচজন গাড়ির দরজা ইচ্ছাকৃত ভাবেই ঠেলে দিয়েছিল।  তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে আসা হয় কলকাতায়। চিকিৎসক মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধীনে একটি বোর্ড গঠন করে চিকিৎসা শুরু হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়ের। দেখা যায়, তাঁর পায়ের হাড়ে গভীর চোট লেগেছে। লেগেছে গলায়, ঘাড়েও। এই সময়েই উদ্দেশ্য প্রণোদিত হামলার অভিযোগ নিয়ে কমিশনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তৃণমূল নেতারা। অন্য দিকে রাস্তায় নেমে পড়েন তৃণমূল কর্মীরা।

দলের উপরতলার মূল চিন্তা ছিল, সুপ্রিমোকে বাদ দিয়ে কী ভাবে প্রচার পরিকল্পনা সারা সম্ভব হবে। হঠাৎ ধাক্কা খাওয়া প্রচার স্ট্র্যাটেজি নিয়ে আজ কোর কমিটির মিটিংও ডেকেছে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের ভিডিও বার্তা দলে বাড়তি অক্সিজেন দেবে বলাই বাহুল্য। সবচেয়ে বড় কথা, হুইলচেয়ারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এই ইমেজটাকে বিজেপি কী ভাবে প্রতিহত করতে পারে তাই দেখতে মুখিয়ে থাকবে রাজনীতি প্রিয় বাঙালি।