প্রতীকী ছবি৷

Mob lynching: চোর সন্দেহে নির্মম মার, আরও দুই মৃত্যু! গণপিটুনি রোগ এবার ঝাড়গ্রাম, তারকেশ্বরে

ঝাড়গ্রাম এবং তারকেশ্বর: কলকাতা, সল্টলেকের পর ঝাড়গ্রাম, তারকেশ্বর৷ সংক্রামক রোগের মতোই ছড়াচ্ছে গণপিটুনির ব্যাধি৷ গণপিটুনির জেরে রাজ্যের দুই প্রান্তে রবিবার মৃত্যু হল আরও দুই যুবকের৷ দুটি ক্ষেত্রেই চোর সন্দেহে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে৷ দুটি ঘটনায় মোট চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ৷

ঝাড়গ্রামের গণপিটুনির ঘটনাটি অবশ্য ঘটেছিল গত ২২ জুন৷ ঝাড়গ্রামের খাটখুরা এলাকার ওই ঘটনায় একসঙ্গে দু জন যুবককে গণপিটুনি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ৷ গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তাঁরা৷ গতকাল তাঁদের মধ্যে সৌরভ শাহু বলে এক যুবকের মৃত্যু হয়৷ আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন সৌরভের বন্ধুর৷
অন্যদিকে, হুগলির তারকেশ্বরেও গতকাল চোর সন্দেহে বেধড়ক মারে মৃত্যু হয় বিশ্বজিৎ মান্না (২৩) নামে এক গাড়ি চালকের৷ মৃতের পরিবারের অভিযোগ, চুরির অভিযোগে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম ভাবে মারে বিকাশ সামন্ত এবং তার ছেলে দেবকান্ত সামন্ত নামে দু জন৷ চুরি করেননি বলে বার বার কাকুতি মিনতি করলেও বিকাশকে নির্মম ভাবে মারতে থাকে দু জন৷ রাত দুটো নাগাদ বিকাশ সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে তাঁকে তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখানেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা৷ এই ঘটনায় অভিযুক্ত দু জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ৷

আরও পড়ুন: আজ থেকেই লাগু ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, নতুন আইনে কার বিরুদ্ধে দায়ের হল প্রথম এফআইআর?

ঝাড়গ্রামের ঘটনার ক্ষেত্রেও মারধরে জড়িত থাকার অভিযোগে দু জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ৷ অভিযোগ, কিছুদিন আগে ঝাড়গ্রামের খাটখুরা এলাকায় একটি রাস্তা নির্মাণের কাজ চলছিল৷ সেখানে ঠিকাদারি সংস্থার একটি গাড়ি থেকে কিছু জিনিস চুরি হয় বলে অভিযোগ৷ ঘটনার দিন মায়ের স্কুটি নিয়ে খাটখুরা এলাকায় বন্ধুকে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন সৌরভ সাউ নামে ওই যুবক৷ অভিযোগ, তখনই রাস্তায় তাঁদের ঘিরে ধরে চোর সন্দেহে মারধর শুরু করে ওই ঠিকাদারি সংস্থার কর্মীরা৷

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় জামবনি থানার পুলিশ। দু’জনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঝাড়গ্রাম সরকারি মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যায় তারা। ওই হাসপাতালে ন’দিন চিকিৎসার পর মৃত্যু হয়েছে সৌরভের। মৃতের বাবা অবনী সাউ পেশায় টোটোচালক। ছেলের মৃত্যু নিয়ে তিনি বলেন, ‘ও এক বন্ধুর সঙ্গে মায়ের স্কুটি নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিল সে দিন। এলাকার মানুষজন চোর সন্দেহে আমার ছেলে ও তাঁর বন্ধুকে মারধর করে। পরে আমরা বিষয়টি জামবনি থানা মারফত জানতে পেরে হাসপাতালে আসি। এখানে এসে দেখি আমার ছেলে ও তার বন্ধু ভর্তি রয়েছে। আজ সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছেলের মৃত্যু হয়েছে।’ তাঁর সংযোজন, ‘চোর সন্দেহে কাউকে এ ভাবে মারা ঠিক নয়। তার জন্য তো পুলিশ-প্রশাসন রয়েছে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’গণপিটুনির ঘটনায় ঠিকাদারি সংস্থার দুই ম্যানেজারকে আটক করে পুলিশ৷

প্রতিবেদন- রানা কর্মকার ও রাজু সিং