উদ্ধার হওয়া সেই কামানের গোলা৷

মাটি খুঁড়তেই বেরিয়ে এল মোচার মতো দেখতে ওটা কী? গলসিতে ছুটে এলেন সেনা কর্তারা

গলসি: চলছিল জমিতে মাটি সমান করার কাজ। আর তা করতে গিয়েই  উঠে এল মোচার মতো দেখতে লোহার সামগ্রী। মোচার মতো দেখতে বস্তুটি কী, তা নিয়েই প্রথমে জোর জল্পনা ছড়ায়৷ পরে জানা যায়, ওই বস্তুটি আসলে সেনাবাহিনীতে ব্যবহৃত মর্টার শেল বা কামানের গোলা।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার জোর চাঞ্চল্য ছড়াল গলসি থানার পারাজ পঞ্চায়েতের সিমনোড়ি গ্রামে। এ দিন গ্রামের ডিভিসি-র পাড় সংলগ্ন এলাকার ক্ষেতদিঘীর পাড়ে মাটি সামন করার কাজ হচ্ছিল। সেই সময়ে এক শ্রমিক একটি লোহার ডিম্বাকৃতি বস্তু দেখতে পান। অনেকটা দেখতে বড় গ্রেনেডের মতো, বেশ ভারী। লোহার তৈরি এই বস্তুটিতে জং পড়ে ছিল।

গ্রামের লোকেরা এটা নিয়ে দেখাশোনার ফাঁকেই গলসি থানায় ফোন করে খবর দেন শ্রমিকরা। পরে পুলিশ এসে সেই জায়গাটি ঘিরে রাখে।

আরও পড়ুন: ঠিক যেন ধুম সিনেমার গল্প, চেন্নাই থেকে কলকতায় আসার পথে উধাও ১০ কোটির আইফোন

প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, এটি সেনাবাহিনীতে ব্যবহার করা মর্টার শেল। পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটনার কথা জানিয়ে পানাগড় এসারবেস ক্যাম্পে যোগাযোগ করা হয়। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে পুলিশের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া বস্তুটির ছবি নেওয়া হয়। এ দিন সকাল আনুমানিক দশটা নাগাদ জেসিবি মেশিন দিয়ে ক্ষেতদিঘীর পাড়ে মাটি কাটাচ্ছিলেন সিমনোড়ি গ্রামের বাসিন্দা মফিজুল শেখ। তখনই মাটির চার ফুট নীচে ওই বস্তুটি দেখতে পান। মফিজুলই বাকিদের খবর দেন।

স্হানীয়রা বলেন, প্রথমে তাঁরা বুঝতেই পারেননি ওই বস্তুটি কী। ভয়ে মেশিন চালানো বন্ধ করে দেন তাঁরা। এক শ্রমিকের কথায়, ‘গর্ত থেকে মেশিন দিয়ে জিনিসটি উদ্ধার করি। বেশ ভারী ছিল বস্তুটি। গ্রামেরও অনেকে দেখতে থাকেন। গলসি থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে জিনিসটি দেখে। পরে এলাকাটা ঘিরে দেয়। সিভিক ভলেন্টিয়ার দিয়ে পাহারা বসানো হয়।’

এদিকে মর্টার শেল উদ্ধারের খবর জানাজানি হতেই চাউর হতেই গ্রামের মানুষ দেখতে ভিড় জমান। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘আমাদের মনে হয় সিমনোড়ি থেকে খুব দূরে নয় পানাগড়ের মিলিটারি ক্যাম্প। ওটি তাদেরই কোন অস্ত্র বা বোমা। কোনও ভাবে এখানে চলে এসেছে। মাটির তলায় চাপা পড়ে এমন হয়ে গিয়েছে। মিলিটারি ক্যাম্পের ভিতর থেকে চোরেরা ওটি লোহা ভেবে চুরি করে এনেছিল। পড়ে বিক্রী করতে না পেরে এখানে ফেলে দিয়ে গিয়েছিল, সেটাই মাটি চাপা পড়ে এমন হয়ে গিয়েছে।’

বুধবার সন্ধ্যায় পানাগড় এয়ারবেস ক্যাম্প থেকে মিলিটারি অফিসের একদল প্রতিনিধি সিমনোড়ি গ্রামে আসেন। তারা মর্টর শেলটি পরীক্ষা করে দেখার পরে সেটিকে বিস্ফোরণ করে নিস্ক্রিয় করার সিদ্ধান্ত নেন। পরে গ্রামের একটি মাঠে শেলটি কে নিস্ক্রীয় করা হয়।