মুম্বই: জঙ্গলের ভিতর ভয়াবহ ঘটনা! পায়ে শিকলবাঁধা অবস্থায় উদ্ধার মহিলা। বছর ৫০-এর মহিলার কাছ থেকে মিলেছে তাঁর আমেরিকার পাসপোর্ট ও আর-ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি। এরমধ্যে রয়েছে মহিলার আধার-কার্ড-ও। পুলিশ জানিয়েছে, ঠিকানাটি তামিলনাড়ুর একটি জায়গার।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার সন্ধেবেলা এক মেষপালক মহারাষ্ট্রের সিন্ধুদুর্গের একটি জঙ্গলে গিয়েছিলেন মোষ চড়াতে। তিনিই প্রথম শুনতে পান এক মহিলার কান্নার আওয়াজ। সেই আওয়াজ অনুসরণ করে জঙ্গলের গভীরে ঢুকে পড়েন, এগোতে থাকেন, এবং তারপর যা দেখেন, তাতে রীতিমত শিউরে ওঠেন। চোখের সামনে এ কী পাশবিক দৃশ্য। গাছের সঙ্গে শিকল দিয়ে বাঁধা অবস্থায় এক মহিলা। শীর্ণ, দুর্বল। দেখেই বোঝা যাচ্ছে, বেশ কিছুদিন কোন-ও খাবার জোটেনি। ক্লান্তিতে এলিয়ে পড়েছে দেহ, চোখ ঠিকরে বার হয়ে আসছে যেন। মেষপালক তড়িঘড়ি স্থানীয় লোকজনকে ঘটনাটি জানান। তাঁরা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে মহিলাকে উদ্ধার করে।
পুলিশ জানিয়েছে, মহিলাকে উদ্ধার করে সাবন্তওয়াড়ির এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে সিন্ধুদুর্গের ওরসে স্থানান্তরিত করা হয়। পরে সেখান থেকে আবার গোয়া মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মহিলার মানসিক সমস্যা রয়েছে। তাঁর কাছে থেকে কয়েকটি প্রেসক্রিপশনও উদ্ধার হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মহিলার পা শিকল গিয়ে গাছের সঙ্গে বাঁধা ছিল। তাঁর কাছ থেকে আমেরিকার একটি পাসপোর্ট-এর ফোটোকপি এবং বেশ কিছু নথি পাওয়া গিয়েছে। রয়েছে আধার কার্ড, তামিলনাড়ুর একটি ঠিকানা রয়েছে তাতে। পুলিশ জানতে পেরেছে মহিলার নাম ললিতা কায়ি,তাঁর ভিসার মেয়াদ ফুরিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মহিলার নথি যাচাই করে জানার চেষ্টা চলছে তিনি ভারতের নাগরিক না কি অন্য কোনও দেশের। ‘ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস’- এর সঙ্গেও যোগাযোগ করেছে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, গত ১০ বছর ধরে ভারতেই রয়েছেন মহিলা। পুলিশের কথায়, ” মহিলা বয়ান দেবার মত শারীরিক অবস্থায় নেই। বেশ কিছুদিন ধরে অভুক্ত ছিলেন, ভারী বৃষ্টিতে দিনরাত জঙ্গলের মধ্যে পড়েছিলেন, শরীর অত্যন্ত দুর্বল। আমরা জানিও না, তিনি কতদিন ধরে জঙ্গলে বাঁধা অবস্থায় ছিলেন। আমাদের প্রাথমিক অনুমান, মহিলার স্বামী, যে কী না তামিলনাড়ুর বাসিন্দা,তাঁকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে পালিয়ে যায়।” মহিলার আত্মীয়দের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ।