মুর্শিদাবাদ: জাল ওবিসি সার্টিফিকেট দিয়ে তৃণমূলের টিকিটে পঞ্চায়েত সদস্যপদ। সেই তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যা সুমনা দাস চৌধুরীর সদস্য পদ বাতিল করল জেলা প্রশাসন। মুর্শিদাবাদের সুতি ২ ব্লকের উমরাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উমরাপুরের ১২ নং বুথের ১৩ নং সংসদের সদস্য সুমনা দাস চৌধুরীর সদস্য পদ বাতিল বলে ঘোষনা করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের তরফে। দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যার সদস্য পদ বাতিল করলেন জঙ্গিপুর মহকুমা শাসক একাম জে সিং। অভিযোগের ভিত্তিতে এই সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর সুতি ২ নম্বর ব্লকের ৭ নম্বর জেলা পরিষদের সিপিআইএমের প্রার্থী মহঃ তফিজুল ইসলাম সুতি ২ বিডিও ও জঙ্গিপুরের মহকুমা শাসকের দফতরে তৃণমূলের ওই পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে অভিযুক্ত ও অভিযোগকারি সহ সাক্ষীদের মহকুমা শাসকের দফতরে হাজিরার নির্দেশ দেয়। অভিযুক্ত তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যা তাঁর সার্টিফিকেট সহ নথি নিয়ে হাজিরা দিলে সার্টিফিকেট জাল বলে ধরা পড়ে। এবং আধার ও ভোটার কার্ড বিকৃত করে জাল ওবিসি শংসাপত্র করা হয়েছে বলে স্বীকার করে নেন সুমনা দাস চৌধুরী।
আরও পড়ুন: বাংলার সিপিএম, কংগ্রেসকে ধরবেন না…ইন্ডিয়া জোট জিতলে কী অবস্থান? জানিয়ে দিলেন মমতা
এর পরেই জঙ্গিপুরের মহকুমা শাসক সুমনা দাস চৌধুরীর ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল ঘোষণা করে, সুতি থানা পুলিস কে তৃণমূল সদস্যার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার নির্দেশ দেন। সুতি থানার পুলিশ সুমনা দাস চৌধুরীর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪১০/৪২০/৪৬৮/৪৭১ ধারায় মামলা দায়ের করে।সুতি থানা পুলিশ মামলা দায়ের করার পর গা ঢাকা দেন তৃণমূলের অভিযুক্ত তৃণমূল সদস্য। তার পরে আইনজীবী মারফত জঙ্গিপুর মহকুমা আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তার পরে জামিনে মুক্ত হোন তিনি।
জাল ওবিসি শংসাপত্র বাতিল হলেও সুমনাদেবী পঞ্চায়েতের কাজকর্ম করে চলেছেন দেখে গত ৫ এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন অভিযোগকারী সিপিআইএমের জেলা পরিষদের প্রার্থী মহম্মদ তফিজুল ইসলাম। হাইকোর্টে মামলা দায়ের হতেই নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাষন। ২২ এপ্রিল ফের দু’পক্ষ কে হাজিরা দিতে বলা হয় জঙ্গিপুরের মহকুমা শাসকের দফতরে। এর পরেই ৯ মে ২০২৪ তারিখে জঙ্গিপুরের মহকুমা শাসক একাম জে সিং সুতি ২ ব্লকের উমরাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সুমনা দাস চৌধুরীর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য পদ বাতিল করেন।
অভিযোগকারী সিপিআইএম নেতা তফিজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা জালিয়াতির বিরুদ্ধে লড়াই করি। সাধারণমানুষের জন্য লড়াই করি। সুমনা দাস চৌধুরী নিজের জাল ওবিসি শংসাপত্র করে তিনি তাঁর সাংসদ এলাকার মানুষদের সঙ্গে জালিয়াতি করেছে। জালিয়াতি করা তৃণমূলের কাজ। সুমনা দাসের জাল ওবিসি শংসাপত্র করার পিছনে তৃণমূল নেতাদের বড় ভুমিকা রয়েছে। আমাদের লড়াই আমরা জিতবই। তৃণমূলের জালিয়াতি মানুষেপ সামনে এনে দিয়েছি।’
কৌশিক অধিকারী