উত্তর ২৪ পরগনা: জেলার মিষ্টিপ্রেমীদের জন্য এক বড় সুখবর। যে মিষ্টির স্বাদ নিতে চাইলে এতদিন পাড়ি দিতে হত কলকাতায়, সেই মিষ্টির স্বাদ এবার মিলবে জেলাতেই। ব্যারাকপুর মহকুমার সোদপুর-সহ বিভিন্ন জায়গায় বিরিয়ানিতে যেমন দখল নিয়েছে “দাদা বৌদি”, “ডি বাপী” ঠিক তেমনভাবেই জেলার একটি বিশাল অংশের মিষ্টিপ্রেমী মানুষকে টানতে এবার সোদপুরে বিটি রোড-এর উপরই বাংলার ঐতিহ্যের নামকরা কে সি দাশের মিষ্টির দোকান তাদের নতুন আউটলেট খুলল। ফলে আর কলকাতায় গিয়ে এই মিষ্টির স্বাদ নিতে হবে না জেলার ভোজনরসিকদের।
বাড়ির যে কোনও অনুষ্ঠান হোক বা অতিথি আপ্যায়ন, একেবারে হাতের নাগালে মিলবেই রসগোল্লা, রসমালাই, হরেক রকমের সন্দেশ-সহ মিষ্টির এলাহি সম্ভার। এদিন সোদপুরের এই নতুন আউটলেটের উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন দোকানের বর্তমান কর্ণধার ধীমান দাস, পানিহাটি পৌরসভার পৌর প্রধান মলয় রায়, রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী শশী পাঁজার মেয়ে পূজা পাঁজা-সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। জানা যায়, প্রতিষ্ঠাতা কে সি দাশের পুরো নাম কৃষ্ণচন্দ্র দাশ। তার বাবা নবীনচন্দ্র দাশ রসগোল্লা সৃষ্টি করেন ১৮৬৮ সালে। তার পর ১৯৩০ সালে কে সি দাশ বাজারে আনেন ক্যানবন্দি রসগোল্লা।
তারও দু’বছর পর, ১৯৩২ সালে কে সি দাশের হাতে রসমালাইয়ের সৃষ্টি হয়। তবে ক্যানবন্দি রসগোল্লা গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে কে সি দাশের পুত্র সারদাচরণ দাশের হাত ধরেই। কে সি দাশের রসগোল্লায় কেবলমাত্র গোরুর খাঁটি দুধের নিখাদ ছানা দিয়েই তৈরি হয়, তার মধ্যে দেওয়া হয় না কোনও রকম ময়দা বা সুজি। সেই জন্য ওই রসগোল্লা ধবধবে সাদা ও স্পঞ্জি হয় বলেও অভিজাত এই দোকানের তরফ থেকে জানা গিয়েছে।
বর্তমান স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের ক্ষেত্রে সুগার ফ্রি মিষ্টি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে দোকানের বর্তমান কর্ণধার ধীমান দাস জানান, বাড়িতে মানুষ মিষ্টি না খেয়ে সচেতন থাকলেও বাইরে বেরোলে মিষ্টি ছাড়া বাঙালি যেন অসম্পূর্ণ। যদি নিষেধাজ্ঞা সব ক্ষেত্রে মানা হত তবে এত বিরিয়ানির ব্র্যান্ড তৈরি হত না বলেই মনে করেন তিনি। এই জায়গা থেকে মিষ্টির ক্ষেত্রে ১৯৭০ সাল থেকেই কে সি দাশ সুগার ফ্রী মিষ্টির নানা আইটেম রেখেছে বলেও জানান অভিজাত এই মিষ্টির দোকানের কর্ণধার। এদিন থেকে সোদপুরে এই অভিজাত মিষ্টি পাওয়া যাবে তা জেনেই যেন খুশি স্বয়ং পৌর প্রধানও। সব মিলিয়ে এবার জেলার মিষ্টিপ্রেমী বাঙালির কাছে যেন সুবর্ণ সুযোগ করে দিল এই অভিজাত মিষ্টি প্রতিষ্ঠান।
Rudra Narayan Roy